তাঁর বেশভূষা পুরুষের মতো। পুরুষ বন্ধুদের সঙ্গে মোটরসাইকেল চালান, আড্ডা দেন। ধূমপান ও মদ্যপানও করেন। আচরণ ও কর্মকাণ্ডে তিনি নিজেকে পুরুষ হিসেবেই তুলে ধরেছেন সবার সামনে। তবে শেষ পর্যন্ত পুরুষের ছদ্মবেশে সহজ উপায়ে অর্থ আয়ের পথে পা বাড়ানোয় ধরা পড়লেন। বেরিয়ে এল তাঁর আসল পরিচয়। আজ শুক্রবার বিবিসি অনলাইনে এ খবর প্রকাশ হয়।
যৌতুকের লোভে পুরুষ সেজে বিয়ে করেছেন তিনি। তাও দুটো বিয়ে। অত্যন্ত চতুর এই ব্যক্তি এতেও ধরা পড়েননি। শেষ পর্যন্ত যৌতুক চেয়ে স্ত্রী হয়রানির অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়ার পর পুলিশ জানতে পেরেছেন তিনি আসলে নারী।
পুরুষ সেজে বিয়ে করা ওই নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কৃষ্ণ সেন (২৬) নামের ওই নারীকে ভারতের উত্তরাঞ্চলের রাজ্য উত্তরাখন্ড থেকে যৌতুক দাবির অভিযোগে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তখন পর্যন্ত পুলিশ জানত না তিনি পুরুষ নন নারী। পরে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে তাঁর এই প্রতারণার বিষয়টি। ২০১৪ সালে প্রথম বিয়ে করার সময় তিনি প্রথম পুরুষের ছদ্মবেশ ধরেন। পুরুষের বেশ ধরার আগে তাঁর নাম ছিল সুইটি।
জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা জানামিজে খান্দুরি বিবিসিকে বলেন, ‘প্রথমে আমরা বুঝতেই পারছিলাম না যে কৃষ্ণ কী বলছে! এরপর আমরা তাঁর মেডিকেল পরীক্ষার ব্যবস্থা করি এবং জানতে পারি তিনি একজন নারী।’
প্রথম বিয়ের পরপরই তিনি স্ত্রীর কাছ থেকে সরে যান এবং গত বছরের এপ্রিলে আরেক নারীকে বিয়ে করেন।
তাঁর সাবেক শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হয়রানির অভিযোগ করা হয় থানায়। তারা আরও অভিযোগ করেন, কৃষ্ণ শ্বশুরবাড়ি থেকে সাড়ে আট লাখ রুপি ধার হিসেবে নেন ব্যবসা করার জন্য। কিন্তু ওই টাকা আর কখনো ফেরত দেননি।
শতাব্দী কাল ধরে যৌতুক দেওয়া-নেওয়ার প্রথা রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে। বিয়ের সময় কনের বাড়ি থেকে বরের পরিবারকে নগদ অর্থ, জামাকাপড় ও অলংকার উপহার দেওয়া হয়। ভারতে বিয়েতে যৌতুক দাবি করা অবৈধ হলেও সেখানে এই প্রথা চালু রয়েছে।
কৃষ্ণ সেন পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি সব সময় ছেলে হতে চেয়েছেন। তিনি ‘পুরুষের জীবন’ যাপন করতে চেয়েছেন। তবে এটা স্পষ্ট হয়নি যে কৃষ্ণর বাবা-মা তাঁর এমন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অবহিত আছেন কি না।
পুলিশের ভাষ্য, যে দুজন নারীকে তিনি বিয়ে করেছেন, তাঁরা তাঁকে কখনো সন্দেহ করেননি। তিনি তাঁদের সামনে কখনো অনাবৃত হননি এবং তাঁদের সঙ্গে তাঁর কোনো যৌন সম্পর্কও ছিল না।
তাঁর বেশির ভাগ বন্ধুই পুরুষ। তিনি পুরুষের টয়লেট ব্যবহার করতেন। পুরুষালি কণ্ঠে কথা বলতেন। তিনি ধূমপান ও মদ্যপান করতেন। পুরুষ বন্ধুদের সঙ্গে মোটরসাইকেল চালাতেন। তাঁর আচরণ ও কর্মকাণ্ডে এমন কিছু ছিল না যাতে তাঁকে নারী বলে সন্দেহ করা যায়।
আরেক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘পুরুষের মতো চুল, পোশাক ও আচরণ নিয়ে কৃষ্ণ পুরুষের জীবন যাপন করতেন। কেউ কখনো তাঁকে সন্দেহ করেনি। এমনকি তিনি হাঁটেনও একজন ‘আত্মবিশ্বাসী পুরুষের’ মতো।
(প্রথম আলো)
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৩: ১৫ পি.এম, ১৬ ফেব্রুয়ারি২০১৮, শুক্রবার।
এএস.
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur