Home / জাতীয় / রাজনীতি / নির্বাচনী ব্যবস্থায় যে সংস্কার এসেছে তাতে ভোট চুরির পথ বন্ধ

নির্বাচনী ব্যবস্থায় যে সংস্কার এসেছে তাতে ভোট চুরির পথ বন্ধ

ঢাকায় ৩ দিনের দূত সম্মেলনের সমাপনী বক্তৃতায় সব দলের অংশগ্রহণে আগামী নির্বাচন আয়োজনে সরকারের প্রচেষ্টার ইঙ্গিত দিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘গত কয়েক বছরে যেভাবে নির্বাচনী ব্যবস্থায় সংস্কার এসেছে তাতে ভোট চুরির পথ প্রায় বন্ধ।’

তিনি বলেন, তবে একটি মাত্র আশঙ্কা এখনও রয়েছে। যদি কোনো আসনে এমন শক্তিশালী নেতা দাঁড়িয়ে যান যে, তিনি লোকজনকে ভোট কেন্দ্রেই যেতে দিলেন না, বাধা দিলেন। সেটিও হবে না যদি তার আসনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী থাকেন।’

মন্ত্রী বিএনপি বা বিরোধী জোটের কারও নাম মুখে না নিয়ে বলেন, ‘যারা নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কারের কথা বলছে, তারা নির্বাচনে এলে আশঙ্কার সেই পথও বন্ধ হয়ে যাবে। এছাড়া রাজনীতিতে যেসব সমস্যা আছে তা-ও থাকবে না। আসুন, নির্বাচনে অংশ নিন।’ স্বাধীনতার পর এই প্রথম বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার ও স্থায়ী প্রতিনিধিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এনভয় কনফারেন্সের পর্দা নামে মঙ্গলবার।

সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী। বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক। ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম জিয়াউদ্দিন ছাড়া দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে থাকা সব রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার ও স্থায়ী প্রতিনিধি অংশ নেন। অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী দূতদের উদ্দেশে কয়েকটি স্পষ্ট বার্তা দেন।

বলেন, আপনারা দুনিয়ার দেশে দেশে কাজ করেন। সেখানে বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশেষ করে এর নীতি-পলিসি নিয়ে কথা বলতে হয়। আপনারা দুনিয়াকে জানিয়ে দেন বাংলাদেশে এখন আর জ্বালাও-পোড়াও হরতাল নেই। মানুষই এটি প্রত্যাখ্যান করেছে। আগামী দিনেও এটি আর ফিরবে না। দ্বিতীয়ত: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পলিসি। আমাদের পলিসি হচ্ছে দারিদ্র্যকে মুছে দেয়া, কমিয়ে আনা নয়। তৃতীয়ত এবং চূড়ান্তভাবে বলবো- আমাদের টার্গেট হচ্ছে মানুষ। মানুষের কল্যাণ।

আপনাদেরকেও বলবো জনকল্যাণকর কাজ করতে আপনারা পিছপা হবেন না। সেখানে যত বাধাই আসুক। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আমহেদ অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে বাণিজ্যকে প্রাধান্য দিতে রাষ্ট্রদূতদের প্রতি আহ্বান জানান। সে সময়ে তিনি দূতাবাসের কমার্শিয়াল উইংয়ে নিযুক্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিশনের অন্য কর্মকর্তাদের দ্বন্দ্বের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, তারা আপনাদের ছোট। তাদের ভুলত্রুটি না ধরে সমন্বয়ের মাধ্যমে দেশের স্বার্থটা উদ্ধার করতে হবে, বাণিজ্য বাড়ানোর জন্য সম্মিলিত প্রয়াস অব্যাহত রাখতে হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার বক্তব্যে বিদেশ নীতি এবং তার বাস্তবায়ন নিয়ে কথা বলেন। সেখানে রোহিঙ্গা নিয়ে সরকারের সর্বশেষ অবস্থান তুলে ধরেন। বলেন, আপনারা ঢাকা থেকে ফিরে গিয়ে নিজ নিজ দায়িত্বপ্রাপ্ত দেশে এই বার্তাই দেবেন- ‘আমরা যত দ্রুত সম্ভব রোহিঙ্গা বোঝা লাঘব করতে চাই। এজন্য আমরা দ্বিপক্ষীয়ভাবে কাজ করছি।

বাংলাদেশের অবস্থানে সারা দুনিয়া সমর্থন দিয়েছে। এটি আমাদের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার কারণেই হয়েছে। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত দেশগুলো যেন আমাদের পাশে থাকে সেজন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে, যাতে মিয়ানমারের ওপর চাপ না কমে। পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক মিশনগুলোর কার্যক্রমে সমন্বয় নিশ্চিত করার তাগিদ দেন।

তিনি খোলাসা করে কিছু না বলে শুধু বলেন, ভিন্ন জায়গা থেকে একটি মুভ হয়েছিল। যা বাস্তবায়ন হলে মিশনের কাজে সমস্যা হতো। এটি ঠেকাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। আপাতত এটি বন্ধ হয়েছে বলেই জানি।

প্রসঙ্গত, সমাপনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এনভয় কনফারেন্স সফল বলে দাবি করেন। একই সঙ্গে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে দ্বিপক্ষীয় উদ্যোগের পাশাপাশি বহুপক্ষীয় চাপ ধরে রাখতে ঢাকার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানান।

বার্তা কক্ষ
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৭:১০ এএম, ২৯ নভেম্বর ২০১৭, বুধবার
ডিএইচ

Leave a Reply