চাঁদপুর জেলার অন্যতম বাণিজ্যিক শহর হাজীগঞ্জ বাজার। আর চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক সড়কের হাজীগঞ্জ পৌর এলাকাটি এখন সিএনজি চালিত অটোরিকশা, অটোবাইক ও হকারদের দখলে। দূরপাল্লার বাস, ট্রাক, মাইক্রো, পিকাপসহ মালবাহী যানবাহন চলমান কোন কমতি নেই। ফলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটিতে যানজট লেগেই থাকে। সাধারণ পথচারীদের হেঁটে চলাও দায়।
হাজীগঞ্জ পশ্চিম বাজার থেকে পূর্ব পাশে বোয়ালজুড়ি ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে হকারদের বেচা-বিক্রি আর অটোরিকশা থামিয়ে যাত্রী উঠানো-নামানোর চিত্র প্রতিনিয়ত দেখা যায়।
হাজীগঞ্জ বাজারের এ সড়কেই জেলা সদরের সাথে কুমিল্লা আঞ্চলিক সড়ক। এ সড়কে আঞ্চলিক গণপরিবহন ও মালবাহী গাড়ি যাতায়াত করে। যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য ট্রাফিক ব্যবস্থা থাকলেও সব স্থানে শৃঙ্খলা দেখা যায় না। পূর্ব বাজারের থানা রোড থেকে শুরু করে পশ্চিম বাজার পপুলার হাসপাতাল ও শেখ মার্কেট হয়ে বিশ্বরোড পর্যন্ত তীব্র যানজট যেন নিত্যদিনের চিত্র।
হাজীগঞ্জ বাজার প্রায় এক কিলোমিটার। সড়কের দুই পাশ জুড়ে শপিংমল, মার্কেট আর ছোট বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে ফুটপাতের দোকান। তার মাঝে মানুষ চলাচলের নেই কোন পথ। তার মাঝে ছোট যানবাহনের অবস্থান। এসব কারনে মূলত বাজারে তীব্র যানজট সৃষ্টি।
পথচারী রাসেল, ব্যবসায়ী বাবু ও গনমাধ্যম কর্মী খালেককুজ্জামান শামীম বলেন, আমরা প্রধানত দায়ী করি ছোট যানবাহন ও ফুটপাতকে। তবে বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ ও ট্র্যাফিক পুলিশ আরো কঠোর হলে এ যানজট এমন তীব্র আকারে ধারন করতে পারতো না।
হাজীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আশফাকুল আলম চৌধুরী চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, আমরা থানা প্রশাসনের সাথে একাধিক বার বসে কাজ করতে গিয়ে ছোট যানবাহন ও ফুটপাত দখল মুক্ত করতে পারিনি। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে বিকল্প উদ্যাগ গ্রহন করতে হবে।
ট্র্যাফিক ইনস্পেক্টর (টি আই) জাহাঙ্গীর হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, করোনা পরিবর্তী মানুষ কর্ম হারিয়ে সিএনজি ও অটোরিক্সা এবং ফুটপাতে ক্ষুদ্র ব্যবসা বেড়ে গেছে। যে কারনে যানজট তীব্র আকার ধারন করেছে। তবে আমাদের ট্রাফিক পুলিশ যেখানে জট দেখছেন দ্রুত সময়ের মধ্যে তা নিরসনে কাজ করে যাচ্ছে।
হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ বলেন, হকার ও সিএনজি চালকদের মেইন সড়ক থেকে উঠিয়ে দিলে আবার এসে বসে। তার পরও বাজারের যানজট নিয়ন্ত্রণে প্রায় ১০ জন ট্রাফিক পুলিশ দায়িত্ব পালন করেন।
হাজীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আ স ম মাহবুব-উল আলম লিপন বলেন, ‘হকারদের জন্য বাজারে নির্ধারিত হকার্স মার্কেট রয়েছে। কিন্তু তারা নিজেদের দোকান ভাড়া দিয়ে সড়কে এসে বসেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বহুবার তাদের জমিরানা করা হলেও কোনো পরিবর্তন আসেনি। তবে হকারদের নতুন করে জায়গা দেয়ার জন্য জেলা পরিষদ একটি মার্কেট নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।’
প্রতিবেদক: জহিরুল ইসলাম জয়, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১