মনীষার অজয়ের সঙ্গে দুই বছর ধরে পরিচয়। পরিচয়ের কিছুদিনের মধ্যেই মনীষাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন অজয়। মনীষা সরাসরি অজয়কে জানিয়ে দেয় পারিবারিকভাবে সব হলে সে রাজি আছে। অজয় সময় না নিয়ে পারিবারিকভাবে সব ঠিক করে।
গত ফেব্রুয়ারিতে দুই পরিবারের মধ্যে কথা হয়। সামনের বছরের জানুয়ারিতে তাদের বিয়ে হওয়ার কথা। কিন্তু গত শনিবার বজ্রপাতে অজয় মল্লিক নিহত হন। আর তার বাগদত্তা মনীষা মল্লিক আহত হন।
এ ঘটনার পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মনীষা বলেন, ‘আচ্ছা, ও তো আর নেই, আমি কেন বেঁচে গেলাম? আমাকেও কেন নিয়ে গেল না?
ভারতের কলকাতার মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লাগোয়া সেনোটাফের চাতালে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে অজয়ের। আর গুরুতর আহত অবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি মনীষা।
প্রতিদিনের মতো সেদিনও অজয় আর মনীষা দেখা করতে বিকেলে বের হয়। সেদিন রাখি উৎসবের জন্য কেনাকাটার কথা ছিল। এ ছাড়া একটি লেহেঙ্গা কেনার কথা ছিল মনীষার। অজয়ও তার বোনের জন্য একটা লেহেঙ্গা কিনবে মনীষাকে বলেছিল। কিন্তু এগুলোর কিছুই আর কেনা হলো না।
মনীষা বলেন, ‘সেদিন প্রথমে ময়দানে কিছু সময় কাটিয়ে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের কাছে সেনোটাফের সামনে দিয়ে হাঁটছিলাম। শপিং করে রাতের খাওয়া-দাওয়া করে বাসায় ফেরার কথা। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টি নামল। দুজনেই সেনোটাফের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। দুজনের মাথার ওপরে একটি ছাতা। বৃষ্টির সঙ্গে তখন একের পর এক বাজ পড়া শুরু হয়।
ভয়ে অজয়কে আঁকড়ে ধরে রেখেছিলাম। হঠাৎ বিকট একটি শব্দ। আর প্রবল আলোয় চোখ ঝলসে গেল। আর কিছুই মনে নেই। পরে জ্ঞান ফেরার পর দেখতে পাই, আমার থুতনি দিয়ে রক্ত পড়ছে। আর পাশে অজয় পড়ে রয়েছে। কিন্তু অজয়কে ডাকার মতোও কোনো শক্তি ছিল না।’
মনীষা জানান, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। পরে তার কাছ থেকে নম্বর নিয়ে বাসায় খবর দেওয়া হয়। বাসার মানুষজন আসার পর জানানো হয় অজয় আর নেই। এরপরই মনীষা বলেন, ‘ওর সঙ্গে থাকব বলেই তো কত কী ভেবে ফেলেছিলাম। সেই ভাবনাগুলোর এবার কী হবে।’
মনীষার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে শরীরের এক দিক পুরো নিষ্ক্রিয়। ডান কানে ঠিক মতো শুনতে পাচ্ছেন না তিনি।
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur