মেয়েকে ইভটিজিং করার পর অভিযোগ করা ক্ষীপ্ত হয়ে অভিযুক্তের বাবা মেয়েটির বাবার মুখে লাথি মেরে দাঁত ভেঙ্গে দিয়েছে। থানায় অভিযোগ দায়ের করে কোন ফল না পেয়ে অপেক্ষা অবশেষে প্রভাবশালীদের চাপের মুখে গ্রাম্য সালিশে মীমাংসার প্রস্তাব, উপায় না পেয়ে মানতে বাধ্য হচ্ছে মেয়ের পরিবার।
ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার কুশনা ইউনিয়ের তালশার গ্রামের পশ্চিম পাড়ায় চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটে।
জানাগেছে, তালশার গ্রামের ইউনুচ আলী খোকনের ছেলে আব্দুর রহিম দীর্ঘদিন ধরে তার প্রতিবেশী বিশারতের মেয়ে কে উত্তাক্ত করে আসছিল। মেয়েটি বার বার তার বাবা-মাকে জানানোর পর কোনো ফল না পেয়ে অবশেষে গোপনে তার বোনের বাড়িতে পালিয়ে যায়।
মেয়েকে বাড়ি না পেয়ে ছেলের চাচা সাবেক ইউ পি সদস্য মোজাম ফোনে জানানো হয়। পরে মেয়ের বাবাকে অভিযুক্তের চাচা নিজ বাড়িতে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসা করে যে তার নিকট রহিম ও মেয়ের কথা জানতে চাইলে বিশারত সমস্ত কিছু খুলে বলে। বিশারতের মুখে ঘটনা শুনে ছেলের উপস্থিতিতে ছেলের বাবা ইউনুচ আলী অনেকটা ক্ষীপ্ত হয়ে বিশারতকে মারধর শুরু করে এবং একপর্যায়ে বিশারতের মুখে লাথি মারে। সাথে সাথে তার সামনের ২ দাঁত পড়ে যায়। হইচই চেঁচামেচি শুনে আশে পাশের লোক জন জড়ো হয়ে বিশারত কে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেস্কে ভর্তি করে।
এ ব্যাপরে থানায় প্রাথমিক অভিযোগ দায়ের করার ৫ দিন পার হওয়ার পরেও কোনো সমাধান করেনি পুলিশ। প
পরে গত বুধবার রাতে গ্রামের প্রভারশালীরা ভেকে নিয়ে হুমকি ধামকি দিয়ে সামান্য কিছু টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাড়িয়ে দেয়।
এ প্রসঙ্গে মেয়েটি জানায়, ‘রহিম আমাকে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্নভাবে উত্তাক্ত করে আসছিল। বিষয়টি আমার মা-বাবাকে জানালে তারা ভয়ে রহিমের কিছুই বলতে সাহস পায় নাই। অবশেষে সে আমাকে জোর করে তুলে নেওয়ার হুমকি দিলে আমি ভয়ে তার হাত থেকে বাঁচার জন্য আমার বোনের বাড়িতে পালিয়ে যায়।’
মেয়েটির বাবা বিশারত জানায়, মেয়ে আমাদের সমস্ত কিছু জানিয়েছে কিন্তু আমি ভয়ে ওদের কিছু বলতে সাহস পাই নাই। ওই দিন আমার মেয়ে পালিয়ে আমার বড় মেয়ের বাড়িতে চলে গেলে পাড়ায় বলাবলি হতে থাকে যে রহিমের সাথে চলে গেছে। তাই আমাকে ডেকে নিয়ে রহিমের বাবা মারধর করে সামনের ২ দাঁত ফেলে দেয়। থানায় যেয়ে একটি সাদা কাগজে লিখিত দিয়াছি। কিন্তু আজও থানা থেকে কেউ আসেনি। এইটাই কেচ (মামলা) কি না সেটা আমি বলতে পারি না।
এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত জানতে ইউনুস আলী খোকনের বাড়িতে গেলে তার ছেলে রহিম সাংবাদিক এসেছে দেখে দ্রুত পালিয়ে যায়।
পরে দেখা হয় খোকনের স্ত্রীর সাথে দেখা হলে সে জানায় রহিম বাড়ি নেই।
কিছুক্ষণ পরে স্থানীয় আওয়ামীলীগের ২ জন নেতা এসে বলেন বিষয়টি গ্রাম্য সালিশে মীমাংসা হয়ে গেছে। এই ব্যাপারে আমরা কোন কথা বলতে চাই না। তার মধ্যে একজন নিজেকে কুশনা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহসভাপতি ও অপর জন আতিয়ার নামের একজন ইউ পি সদস্য।
স্থানীয় ক্যাম্প ইনচার্জ এস আই এস এম মিজানুর রহমানের নিকট এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার এখানে কোন অভিযোগ আসে নাই এবং থানা আমাকে কিছুই জানাই নাই। ক্যাম্পে কেউ এসে অভিযোগ করলে আমি তার ব্যবস্থা গ্রহণ করতাম