Home / উপজেলা সংবাদ / কচুয়া / মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে সুরঙ্গ : আতংকে ৪ লাখ মানুষ
মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে সুরঙ্গ : আতংকে ৪ লাখ মানুষ

মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে সুরঙ্গ : আতংকে ৪ লাখ মানুষ

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় দেশের অন্যতম বৃহত্তম সেচ প্রকল্প মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের বেড়ি বাঁধে বিভিন্ন স্থানে সুরঙ্গ ও খাদের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এ বর্ষা মৌসুমে আতংক নিয়ে বসবাস করছে সেচ প্রকল্পের ভেতরে বসবাসকারী মতলব উত্তরের ৪ লাখ মানুষ।

সেচ প্রকল্পের বেড়ি বাঁধের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বেলতলী থেকে গালিমখাঁ-বাংলা বাজার পর্যন্ত ৭ কি.মি. মূল বাঁধে অন্তত:৫০ টির মতো স্থানে ছোট বড় সুরঙ্গ বা খাদের সৃষ্টি হয়েছে। ধনাগোদা, তালতলী, রায়েরকান্দি, নবীপুর, লালপুর, গোপালকান্দি বরাবর বাঁধে এ সব গভীর খাদ বা সুরঙ্গ দেখা দিয়েছে। চলমান বর্ষা মৌসুম অতিরিক্ত বৃষ্টি এবং সারাদেশে বন্যার প্রাদুর্ভাব থাকায় বাঁধের বাইরে এমনিতেই পানির চাপ বেশি। এ সব সুরঙ্গ হওয়ায় পানি বাড়লে মূল বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশংঙ্কা রয়েছে। আবার বাঁধের উপর দিয়ে ভারি যান চলাচল করায় যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা।

১৯৮৭-৮৮ অর্থ বছরে দেশের এ বৃহৎ সেচ প্রকল্প নির্মাণ হলেও ১৯৮৭ সালেই হিজলাকান্দি দিয়ে প্রথমবার এবং ১৯৮৮ সালে নন্দলালপুর দিয়ে বাঁধ ভেঙে গেলে সেচ প্রকল্পের অনেক ক্ষতি হয়। সে সময় মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়েছে ৪ লাখ মানুষকে। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কোটি কোটি টাকার। সেচ প্রকল্পের বেড়ি বাঁধের একদিকে প্রমত্তা মেঘনা অন্য দিকে গোমতী ও ধনাগোদা নদী। তিনটি নদীর মোহনায় এমনিতেই প্রতিবছর ঝুুঁঁকির মূখে থাকে বাঁধ।
এবছর সারাদেশে বন্যা হওয়ায় পানির চাপ বেশি। তাই আতঙ্ক দেখা দিয়েছে বাঁধবাসী সাধারণ মানুষের মাঝে। সেচ প্রকল্পে যে স্থানে বড় বড় গর্ত বা সুরঙ্গ দেখা দিয়েছে সেখানে ঘন করে গাছ লাগিয়ে বনায়ন তৈরি করা হয়েছে। ফলে গাছের শিকড় মাটি আলগা করে দিয়েছে। গাছের শিকড়ের ফাঁক দিয়ে পানি প্রবাহিত হলে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে বলে মনে করছে স্থানীয় বাসিন্দারা।

সেচ প্রকল্পে বসবাসকারী হাপানিয়া গ্রামের বেশ ক’জনের সাথে আলাপকালে তারা জানান, এবারে বাঁধের অবস্থা খুব খারাপ। জরুরীভাবে বাঁধ ঠিক করা প্রয়োজন। বাঁধ ছুটে গেলে বড় ধরণের ঝুঁকির মূখে পড়তে পারে সাধারণ মানুষ।

১৯৮৮সালে বেড়িবাঁধ নির্মাণের পর থেকে বিভিন্ন শিক্ষা-ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বসত বাড়ি, রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজারসহ সড়ক উন্নয়ন কাজই হয়েছে আবাদি জমি থেকে যত সামান্য উচু করে। কেননা, বেড়ি বাঁধের কারণে এখানে বর্ষায় পানি আসেনা বলে এভাবে নির্মিত হয়ে আসছে। কোন কারণে বাঁধ ভেঙ্গে গেলে এ ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবে না বাঁধবাসী।

মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম আতাউর রহমান বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছি। বাঁধে সুরঙ্গ হওয়ার বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। তবে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাঁধে গাছ লাগানো বা বনায়ন ঠিক নয়। কারণ গাছের শিকড় বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ করে। বিভিন্ন কারণে বনায়নের জন্য অনুমতি দিতে হয়। তবে আমরা শীঘ্রই গাছ কেটে ফেলার ব্যবস্থা করছি।

এ ব্যাপারে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের পানি ব্যবস্থাপনা ফেডারেশনের সভাপতি ও উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ কুদ্দুছ চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা অবগত হয়েছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে কাজ করবে।। জনগণকে সর্তক করার জন্য মাইকিংর করা হবে।’

এম এম কামাল : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১০:৩০ পিএম, ৪ আগস্ট ২০১৬, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ

Leave a Reply