ব্রাহ্মণবাড়িয়া করেসপন্ডেন্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের মেঘনা নদীর বুক চিরে জন্ম নেওয়া বিচ্ছিন্ন একটি চরের নাম চরসোনারামপুর। নাগরিক সুযোগ-সুবিধাসহ অনেক কিছু থেকেই যুগ যুগ ধরে বঞ্চিত হয়ে আসছে এই চরের মানুষরা। এখানকার মানুষের দুঃখ-কষ্ট দেখে মনে হবে দারিদ্র্যই যেন তাদের মূল চেহারা। তবে শুধু দারিদ্রতার মাঝেই তাদের কষ্ট সীমাবদ্ধ নয়। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম এলেই মেঘনার ভাঙনের কারণে এই চরের মানুষগুলোর কষ্টের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। ইতিমধ্যে মেঘনার গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে চরের একটি বড় অংশ।
জানা যায়, প্রায় দুইশত বছর আগে আশুগঞ্জে মেঘনার নদীর বুকে জেগে উঠে চরসোনারামপুর গ্রাম। আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত চরসোনারামপুর গ্রাম। ঘনবসতিপূর্ণ এ চরের এ গ্রামটিতে প্রায় ৫ হাজার মানুষের বসবাস। দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করা এখানকার বাসিন্দারের অধিকাংশই জেলে পেশায় নিয়োজিত। মাছ বিক্রি আর নৌকা চালিয়েই জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন এখানকার মানুষরা। তবে বর্ষা মৌসুম এসে চরের এই মানুষগুলোর কষ্ট অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়। বর্ষা এলেই মেঘনায় ভাঙন শুরু হয়। নদী ভাঙনের এর ফলে প্রতিনিয়ত বিলীন হয়ে যাচ্ছে চরসোনারামপুর গ্রামের বিভিন্ন অংশ।
ভাঙনের কারণ হিসেবে নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন ও নদী শাসন না হওয়াকেই দায়ী করছেন স্থানীয়রা। তবে এখনই প্রশাসনের পক্ষ থেকে নদীর ভাঙন রোধে যদি কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া হয় তাহলে এই চরের অস্তিত্ব টিকে থাকাই দায় হয়ে যাবে। পাশাপাশি মেঘনার বুক থেকে হারিয়ে যাবে আরো একটি চর।
চরের কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা হলে তারা চাঁদপুর টাইমসকে জানান, গত কয়েকদিন টানা বর্ষণের কারণে নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে। এর ফলে চরের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ভাঙনের মাত্রা আরো বেড়ে গেলে চরে বসবাস করা সম্ভব হবে না। তাই তারা চর রক্ষার জন্য দ্রুত একটি বাঁধ ও নিরাপত্তা দেয়াল নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে নদী ভাঙনের কারণে হুমকিতে রয়েছে আশুগঞ্জ-শম্ভুপুর গ্রিড লাইন, আশুগঞ্জ আন্তর্জাতিক নৌবন্দর ও আশুগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। তাই দ্রুত ভাঙন ঠেকানো না গেলে যে কোনো সময় চর সোনারামপুরসহ বিলীন হয়ে নিশ্চিহ্ন হতে পারে রাষ্ট্রীয় এসব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।
আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোবারক হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে জানান, চর সোনারামপুর ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য উপজেলা পরিষদকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ কুমার সিংহ চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, কয়েক বছর আগে নদীর চরসোনারামপুর অংশে বালু মহাল থাকলেও এখন তা বন্ধ রয়েছে। তবে ভাঙন রোধে বিদ্যুৎকেন্দ্র কতৃপর্ক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে এবং জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবহিত করা হয়েছে।
আপডেট : বাংলাদেশ সময় : ১১:১২ অপরাহ্ন, ১৮ আষাঢ় ১৪২২ বঙ্গাব্দ, বৃহস্পতিবার ০২ জুলাই ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ
চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/এমআরআর/২০১৫
চাঁদপুর টাইমস ডট কম–এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur