চাঁদপুর শহরের পালবাজার এলাকায় ট্রাক চাপায় হারুন নামে এক কাঁচামাল শ্রমিক গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বহু সংখ্যক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও যানবাহন ভাংচুর করে। ঘটনার পর থেকে এক ঘন্টারও অধিক সময় সড়ক অবরোধ করে রাখে তারা। পরে পুলিশ গিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক ও বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের শান্ত করেন।
১২ মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুর আনুমানিক দেড়টার দিকে স্ট্যান্ড রোডের মেসার্স রহিম ব্রাদার্স নামক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত শ্রমিক হারুনুর রশিদ পালবাজার আনোয়ার ব্রাদাস নামক কাঁচা মালের আড়তে কাজ করতেন। এতে হরুনুর রশিদ ছাড়াও আরো ৩ শ্রমিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয় শ্রমিক শান্ত জানান, পালবাজার আনোয়ার ব্রাদাস কাঁচা মালের আড়তের শ্রমিক হারুনুর রশিদসহ কয়েকজন শ্রমিক ভ্যান গাড়ি থেকে মাল নামাচ্ছিলেন। ভ্যানের পেছনে থাকা আজিজ ব্রাদাসের নিজস্ব একটি ট্রাকে রড লোড করা ছিলো। এসময় ট্রাকের হেলপার রড ভর্তি ট্রাকটি স্টাট দিয়ে ছাড়তে চাইলে শ্রমিকরা তা না ছাড়ার জন্য বার, বার হাত এবং মুখে সিগনাল দিয়েছেন। কিন্তু ওই মুহূর্তে হঠাৎ করে ট্রাকের হেলপার ট্রাকটি স্টাট দিয়ে কাঁচা মালের ভ্যান এবং শ্রমিকদের গায়ের উপর উঠিয়ে দেন।
কর্তব্যরত চিকিৎসক নাজমুল হক বলেন, আহত শ্রমিকের মাথা ও হাতে মারাত্মক আঘাত প্রাপ্ত হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও যানবাহন চালকরা জানান, আহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্রিজের নীচে অপেক্ষমান সিএনজি চালিত অটোরিকশা, অটোবাইক, ভ্যান, শ্রমিককে চাপা দেওয়া সেই ট্রাকটিসহ প্রায় ২০টি যানবহন ব্যাপক ভাংচুর করে। একই সময় তারা ফুটপাতে থাকা হকাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করে এবং ব্যবসায়ী আজিজের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করে সড়ক অবরোধ করে রাখে।
পালবাজার লেবার সমিতির সভাপতি সফিক মোল্লা বলেন, আহত শ্রমিকের সকল চিকিৎসাসহ সকল ক্ষতিপুরণ দিতে হবে। স্ট্যান্ড রোডে বড় ধরণের ট্রাক রেখে মালামাল উঠা-নামা করানো যাবে না। যদি এই ধরণের ঘটনায় অব্যাহত থাকে তাহলে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে বড় ধরনের আন্দোলন করা হবে।
চাঁদপর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসিম উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দুর্ঘটনার সাথে জড়িত ট্রাকটি থানা হেফাজতে রয়েছে। শ্রমিকদেরকে শান্ত থাকার জন্য বলা হয়েছে। অভিযোগ পাওয়া গেলে আমরা এই বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। বর্তমান ঘটনাস্থল এলাকা শান্ত রয়েছে।
প্রতিবেদক মাজহারুল ইসলাম অনিক ও কবির হোসেন মিজি, ১২ মার্চ ২০২০