হেলিকপ্টার নিয়ে গ্রামে এসে মায়ের স্বপ্ন পূরণ করলেন ফরিদগঞ্জের দুই সন্তান

সত্তর বছর বয়সী মা ময়ফুলুন্নেছা। আট ছেলে তিন মেয়ে। সাত ছেলে থাকেন সুদূর আমেরিকায়। এক ছেলে দেশে ব্যবসা করছেন। ২৩ জুন শুক্রবার বিকেলে দুই ছেলে মায়ের সাথে ঈদ করতে গ্রামের বাড়িতে আসেন। মায়ের স্বপ্ন ছিল হেলিকপ্টার নিয়ে বাড়ির পাশের মাঠে নামবে ছেলেরা। গ্রামের মানুষ কখনো হেলিকপ্টার কীভাবে নামে তা দেখেননি। সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন ছেলে ফারুক হোসেন ও রাহুল।

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৮ নম্বর পাইকপাড়া ইউনিয়নের কড়ৈতলী গ্রামের মিয়া বাড়ি উদয়ন সংঘ সংলগ্ন মাঠে বিকালে লাল রঙয়ের একটি হেলিকপ্টার অবতরণ করে। হাজারো গ্রামবাসীর অনুরোধে হেলিকপ্টারটি দুইবার উঠানামা করে উদয়ন সংঘ মাঠে।

এসময় স্থানীয় এলাকাবাসী ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের পক্ষে তাদেরকে গণসংবর্ধনা দেয়া হয়। আমেরিকা প্রবাসী ফারুক ও রাহুল ফরিদগঞ্জ উপজেলার কড়ৈতলি গ্রামের মরহুম আব্দুল রশিদ মিয়ার সুযোগ্য সন্তান। তাদের এক ভাই আলমগীর মিয়া এলাকার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী।

আমেরিকা প্রবাসী ফারুক হোসেন বলেন, ২০১০ সালে আমেরিকায় পাড়ি দিয়েছি। চার বছর পর গ্রামে এসেছি। এর আগেও একবার এসেছি। তবে এবার গ্রামের মানুষ হেলিকপ্টার দেখেছে। তাই ভালো লাগলো। ছোট ভাই দেশে আসার পর মা বলেছিলো, ‘তোরা, গ্রামে বিমান নিয়ে যদি আসতি, আমার কাছে ভালো লাগতো।’ মায়ের সেই স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি।

আমেরিকার প্রবাসী রাহুল জানান, তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে সবসময় গ্রামের অসহায় মানুষের জন্য কিছু করার চেষ্টা করা হয়।

হেলিকপ্টার দেখতে আসা অসংখ্য উৎসুক জনতা বলেন, জীবনে কখনো হেলিকপ্টার এতো কাছ থেকে দেখিনি। প্রচণ্ড বাতাসে যেন ভূমিকম্প। অন্যরকম অনুভূতি পেয়েছি। আমেরিকা প্রবাসী ফারুক ও রাহুলদের ৭ভাই আমেরিকা থাকে, তারা আমাদের গর্বের ধন। কারণ তারা প্রবাসে থেকেও এলাকার বিভিন্ন ধর্মীয় সামাজিক ও গরীব অসহায় মানুষের সাহাযার্থে হাত বাড়িয়ে দেন। হেলিকাপ্টারে যোগে তারা বাড়ি ফিরায় এবং তাদের আগমনে আমরা খুবই আনন্দিত। ’

এ সময় ফারুক ও রাহুলের মা ময়ফুলের নেছা আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, ‘আমার ছেলেরা আমার ঘরের সামনে বিমানযোগে এসেছে তাতে আমি খুব খুশি।’

প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ২৩ জুন ২০২৩

Share