ফরিদগঞ্জ

মাটির নিচে পাওয়া পাথরের রহস্যে ফরিদগঞ্জে তোলপাড়

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে মাটির নিচে পাওয়া পাথরে রহস্য নিয়ে ফরিদগঞ্জে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। পাথরটি কষ্টিপাথর বা মূল্যবান পাথর- এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে একটি সংঘবদ্ধ চক্র সেটি নিয়ে যায়।

এ নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করলে পুলিশ মঙ্গলবার (১৮জুলাই ) বিকেলে ঘটনাস্থল কড়ৈতলী যাওয়ার পর ওই চক্রটি অন্য একটি পাথর রেখে যায় বলে জানা গেছে।

সরেজমিনে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,পাইকপাড়া ইউনিয়নের কড়ৈতলী গ্রামের ফজর আলী গাজী বাড়ির দিনমজুর শাহ পরান ক’ মাস পূর্বে বাড়ির পাশের ঠাকুর বাড়ির একটি পরিত্যক্ত স্থানে মাটি কাটতে গিয়ে একটি কালো রঙের পাথর পান।

পাথরটির বিষয়ে কোনো ধারণা না থাকায় শাহ পরান তার বাড়ির সিঁড়ি হিসেবে এটি ব্যবহার করে। শনিবার (১৬ জুলাই ) বিকেলে একই এলাকার গাছ ব্যবসায়ী হুমায়ুন ওই বাড়িতে এসে পাথরটি দেখে পরীক্ষা করে।

ওই রাতেই সে পাথরটি চুরি করে নিয়ে যায়। পরদিন রোববার (১৭ জুলাই ) সকালে শাহ পরানের মা ঘরের সামনে পাথরটি দেখতে না পেয়ে বাড়ির লোকজনকে জানালে তারা হুমায়ুনকে আটক করে বাড়িতে নিয়ে আসে। সে পাথরটি নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করার একপর্যায়ে ইউনিয়নের যুবলীগ নেতা সোহেল পাটোয়ারীর নেতৃত্বে লোকজন এসে তাকে জিম্মায় নিয়ে যায় এবং পাথরটি ফিরিয়ে দিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দেয়।

শাহ পরান জানায়, সোমবার (১৭ জুলাই) সকালে পাথর উদ্ধারের জন্য সোহেল পাটোয়ারী, হুমায়ুনসহ বেশ কয়েকজন তাকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী একটি গ্রামে গেলেও তাকে না নিয়ে তারা পার্শ্ববর্তী রামগঞ্জ উপজেলায় যায়।

সেখান থেকে সোহেল তাকে ফোনে জানায়,‘পাথরটি পাওয়া গেছে, তবে এর জন্য লাখ টাকা লাগবে।’বিষয়টি জানাজানি হলে ফরিদগঞ্জ থানায় রাতেই পাথর নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সে লিখিত অভিযোগ করে।

মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) বিকেলে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশের এসআই মমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে সোহেলকে পাথরটি থানায় জমা দেয়ার জন্য বলে। কিন্তু পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চলে আসার কিছুক্ষণ পর ওই চক্রটি অন্য একটি পাথর শাহ পরানের ঘরের সামনে রেখে যায়।

এদিকে পাথর রেখে যাওয়ার খবর শুনে আশপাশের লোকজন এসে দেখতে পায় এটি ওই পাথর নয়। ওই বাড়ির আহছান গাজী, আ.হান্নান,সুমন,আহমদ উল্যা ও শাহ পরানের মা সাজেদা বেগম জানায় । তারা তিন মাস ধরে যে পাথরটি দেখেছিলেন এটি তা’নয়। নকল একটি পাথর দিয়ে তারা পালিয়েছে।

এদিকে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে স্থানীয় ইউপি সদস্য আলী হায়দার পাটোয়ারী জানান,‘শাহ পরান এটি ক’ মাস আগে কুড়িয়ে পেয়েছিল বলে সোমবার (১৭ জুলাই) তাকে জানায়। পরে মূল্যবান মনে করে তিনি পুলিশকে বিষয়টি জানানোর জন্য বলেন।

ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশের এসআই আ.মমিন জানান,‘তিনি অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে গেছেন। এলাকার লোকজনের তথ্য অনুযায়ী এটি একটি মূল্যবান পাথর বলে মনে হয়েছে। পরে তিনি ফোনে সোহেলকে পাথরটি থানায় জমা দেয়ার জন্য বললেও হুমায়ুনসহ লোকজন অন্য একটি পাথর সে বাড়িতে রেখে যায়।’

এ ব্যাপারে যুবলীগ নেতা সোহেল পাটোয়ারী জানান,‘পাথরটি আমি দেখেনি। তবে এ বিষয়ে জেনে হুমায়ুনকে পাথরটি ফেরত দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। সে মতে সে পাথর ফেরত দিয়েছে।’

এ দিকে হুমায়ুনকে ঘটনাস্থলে না পেয়ে তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

করেসপন্ডেন্ট
:আপডেট, বাংলাদেশ সময় ২:১০ পিএম, ১৯ জুলাই ২০১৭,বুধবার
ডিএইচ

Share