জাটকা রক্ষায় চাঁদপুর পদ্মা-মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকা মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত প্রায় ৯০ কিলোমিটার ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সব ধরণের মাছ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মওজুদ ও পরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ দুমাস জেলার ৫১ হাজার নিবন্ধিত জেলে এই খাদ্য সহায়তার আওতায় আসবে।
২৭ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত হাইমচর উপজেলার নৌ সীমানায় কাটাখালী, হাইমচর, চরভৈরবী ও মেঘ নদীর পশ্চিমে ভাসমান মৎস্য আড়ৎ এবং জেলেপাড়ায় মাইকিং করে জেলেদের জাটকাসহ সব ধরনের মাছ আহরণ থেকে বিরত থাকার জন্য সতর্ক করে দেওয়া হয়।
অভয়াশ্রম ও জাটকা রক্ষা কার্যক্রম উপলক্ষ্যে জেলেদের জন্য ওই দুই মাস ভিজিএফের চাল বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়।
আরও পড়ুন… প্রকৃত জেলেদের পক্ষে থাকব দুর্বৃত্ত জেলের বিরুদ্ধে কঠোর হব: জেলা প্রশাসক
চাঁদপুর জেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে, জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে জেলা টাস্কফোর্স, মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, সদর ও হাইমচর উপজেলা টাস্কফোর্স জনপ্রতিনিধি, জেলে নেতা ও জেলেদের নিয়ে প্রস্তুতিমূলক সভা করেছেন। এছাড়াও নদী উপকূলীয় জেলে পাড়া ও মৎস্য আড়ৎগুলোতে জাটকা না ধরার জন্য সচেতনতামূলক সভা, লিফলেট বিতরণ ও ব্যনার সাঁটানো হয়েছে।
জেলে মোঃ ইমাম হোসেন ও আঃ রহিম বেপারী বলেন, জাটকা রক্ষায় প্রশাশাসন যদি আমাদের সহযোগিতায় চায়, আমরা নিজেদের জন্য হলেও তাদেরকে সহযোগিতা করবো। যে কোন মূল্যে বহিরাগত জেলেদের প্রতিহত করতে হবে। জেলেরা নদীতে প্রতিহত করতে গেলে হামলার শিকার হবে।
তারা আরও বলেন, দুই মাসের জন্য সরকার আমাদের যে খাদ্য সহায়তা দেন, তা দিয়ে আমাদের সংসার চলে না। খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি যদি আমাদেরকে কিছু নগদ অর্থ দেয়া হয় তাহলে, কোন রকম সংসার চলবে।
মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ মোহাম্মদ হোসেন সরকার জানান, আমরা স্থানীয় জেলেদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভা করেছি। তাদেরকে মাছ না ধরার জন্য নিষেধ করা হয়েছে। তারপরেও কেউ নদীতে নামলে আইনানুগ ব্যবস্থা করা হবে।
মতলব উত্তর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মনোয়ারা বেগম বলেন, জাটকা সংরক্ষণের জন্য জেলে পাড়া ও আড়ৎগুলোতে মাইকিং করে, লিফলেট বিতরণ ও ব্যানার সাঁটিয়ে প্রচারনা করা হচ্ছে এবং ২৪ ঘন্টা অভিযান চলবে। মাছ আহরণে বিরত থাকা নিবন্ধিত জেলেদের মাঝে কাল থেকে খাদ্য সহায়তা চাল বিতরণ করা হবে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকি জানান, ২৮ ফেব্রুয়ারি মধ্য রাত থেকে মতলব উত্তর ও হাইমচরে কোস্টগার্ড এবং নৌ পুলিশের সহায়তায় মৎস্য বিভাগ দু’টি টীম কাজ করবে। আমাদের এই কাজে রাতে ও দিনে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ নদীতে অবস্থান করবেন। আইন অমান্যকারী জেলেদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষনিক ভ্রাম্যমাণ আদালতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) অনঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, দুই মাস জেলার ৫১ হাজার ১৯০জন নিবন্ধিত জেলে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকবেন। তাদেরকে আমরা এ দুমাস চাল দিব যাতে করে তাদের কোন ধরণের অসুবিধা না হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদক,২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১