Home / সারাদেশ / কুমিল্লার দেবীদ্বারে নির্জন বাড়ি থেকে নারীর মরদেহ উদ্ধার
মরদেহ
প্রতীকী ছবি

কুমিল্লার দেবীদ্বারে নির্জন বাড়ি থেকে নারীর মরদেহ উদ্ধার

কুমিল্লা দেবীদ্বারে পঞ্চাশোর্ধ মাজেদা বেগম নামে পা বাঁধা অবস্থায় এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

ঘটনাটি সোমবার দিবাগত রাতের। দেবীদ্বার উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব ফতেহাবাদ গ্রামে শিক্ষক মনিরুল ইসলাম সরকারের ঘরে।

প্রতিবেশী মোঃ হান্নান সরকার বলেন, পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ (সোমবার) সকাল ৯ টায় এ বাড়ির গাছ গাছালীর ডাল-পালা কেটে পরিস্কার করার জন্য আসি। বাড়ির প্রধান গেইট খোলা দেখে বাড়ির ভেতরে ঢুকে ভাবীকে ডাকতে থাকি। কোন সাড়া না পেয়ে ঘরের সামনে গিয়ে দেখি ঘরের দরজা খোলা। পর্দা টেনে দেখি কাদামাখা শরীর নিয়ে মেঝেতে চিত হয়ে পড়ে আছেন। ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে ধাক্কা দিয়ে দেখি, শরীর ঠান্ডা এবং শক্ত। পাশে কাদাযুক্ত একটি বালিশ পড়ে আছে। দু’টি পা ওড়না দিয়ে বাঁধা রয়েছে। আমার চিৎকার চেচামেচি শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসেন।

স্থানীয়রা জানান, নিহত মাজেদা বেগম (৫২) দুই ছেলে ও দুই মেয়ের জননী। তিনি নির্জন এ বাড়িতে একাই থাকতেন।

নিহতার পরিবার প্রায় ৭/৮ বছর পূর্বে ফতেহাবাদ মতিউল্লাহ সরকার বাড়ি থেকে ছেড়ে এসে এখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছিলেন।

সংবাদ পেয়ে দেবীদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক (এস,আই) ইখতিয়ার আহমেদ দুপুর ১২টায় একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিহতার মরদেহ উদ্ধার করেন।

স্থানীয় আব্দুস সোবহান জানান, নিহতার স্বামী স্বামী শিক্ষক মনিরুল ইসলাম সরকার ১৯৮৯সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। দুই পুত্র ও দুই কণ্যা সন্তানের মধ্যে কণ্যা শারমিন আক্তার বকুল ও তানজিনা আক্তার শিমু’র বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে থাকেন। বড় ছেলে মোঃ শরিফুল ইসলাম কুমিল্লা একটি ঔষধ কোম্পানীতে চাকরি করেন। ছোট ছেলে কুমিল্লা পলিটেকনিক্যাল ইনিষ্টিটিউট থেকে পাশ করে ঢাকা গাজীপুর ‘সানোয়ার ষ্টিল এন্ড কিং কোম্পানী লিমিটেড-এ ইন্টারনিশীপ করছেন। তিনি যে বাড়িতে থাকতেন ওই বাড়িতে দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি চৌচালা টিনের থাকার ঘর ও একটি রান্নাঘর ছিল। ভিটি পাকা হলেও ভেতরের ফ্লোর ছিল কাচা মাটির। বাড়ির চতুরপার্শে¦ টিন ও বাঁশের বেড়ায় বেষ্টুনি ছিল।

প্রতিবেশী আমেনা বেগম জানান, এলাকায় উঠতি মাদকাসক্ত তরুন-যুবকদের সংখ্যা বেড়েগেছে। অর্থের জন্য ওরা এমন কাজটি করতে পারে বলেও তিনি ধারনা করছেন। নিহত ওই নারীর গলার স্বর্ণের চেইন, কানের দুল, হাতের চুরি ছিল, সেগুলি নেই। ঘরের সাঝগোছ পরিপাটি থাকলেও সোকেসের ড্রয়ার খোলা এবং বিছানা এলোমেলো ছিল।

গালে নখের আচরের ছোপ ছোপ দাগ ছিল। মদেহের শিয়রের পাশে একটি বালিশ পড়ে ছিল, ধারনা করা হচ্ছে ওই বালিশ দিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।

এব্যপারে বিকেলে দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আরিফুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ঘটনাস্থলে দেবীদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক (এস,আই) ইখতিয়ারকে পাঠিয়েছি। আমি নিজেও যাচ্ছি। তবে তার স্বাভাবিক মৃত্যু ছিলনা, পা’ বাধা অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে।

জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল, কুমিল্লা ব্যুরো: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১