Home / উপজেলা সংবাদ / মতলব দক্ষিণ / মতলব উত্তরে ভুট্টার বাম্পার ফলন: মাড়াইয়ে ব্যস্ত কৃষক-কৃষাণীরা
মতলব উত্তরে ভুট্টার বাম্পার ফলন: মাড়াইয়ে ব্যস্ত কৃষক-কৃষাণীরা

মতলব উত্তরে ভুট্টার বাম্পার ফলন: মাড়াইয়ে ব্যস্ত কৃষক-কৃষাণীরা

‎Sunday, ‎19 ‎April, ‎2015  1:33 PM

মোঃ কামাল হোসেন খান, মতলব উত্তর করেসপন্ডেন্ট:

ভুট্টা লাভজনক ফসল হওয়ায় চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ভুট্টা চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ এলাকার কৃষকরা ভুট্টার আবাদের দিকে ক্রমেই ঝঁকে পড়ছে। উচ্চ ফলনশীল জাত, অত্যাধুিনক পদ্ধতিতে চাষাবাদ এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার এ অঞ্চলে ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে।

উৎপাদিত ভুট্টা ঘরে তুলতে মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত কৃষক-কৃষাণীরা। ভুট্টা শুকাতে এবং ঘরে তুলতে এখন কৃষক-কৃষাণীরা দিন-রাত পরিশ্রম করছে। ভুট্টা চাষে ঘুরছে অনেক কৃষকের ভাগ্যের চাকা। ফলে দিন দিন এ অঞ্চলে বাড়ছে ভুট্টা চাষ। উপজেলার মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে পানির সেচ ও ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার কারণে বোরো ধানের চাষ কমিয়ে কৃষকরা ভুট্টা চাষের দিকে বেশী ঝুঁকছে।

দেশের পোল্ট্রি খাদ্য হিসেবে ভুট্টার রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। গো-খাদ্য এবং জ্বালানী হিসেবে ভুট্টা গাছ ও ছোবড়া বিক্রি করে অতিরিক্ত আয় করছেন কৃষকরা। তাছাড়া অন্যান্য ফসলের চেয়ে ভুট্টা চাষে রোগবালাই প্রতিরোধের ক্ষমতাও বেশী। তাছাড়া ভুট্টা চাষে অধিক শ্রম ও সেচের প্রয়োজন হয়না। পক্ষান্তরে ভুট্টা চাষের জমিতে কমছে উৎপাদন ক্ষমতা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়,গত মৌসুমে এ উপজেলায় ভুট্টা চাষ হয়েছিল ১১শ’হেক্টর। এ মৌসুমে উপজেলায় ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১১শ’ হেক্টর জমি। কিন্তু ভুট্টার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে এ বছর অধিক চাষ হয়েছে। এ মৌসুমে ভুট্টার চাষ হয়েছে ১ হাজার ৬শ’ হেক্টর জমি। সবচেয়ে বেশী আবাদ হাইব্রীড,স্পশাল-১১,এনকে-৪০,ভুট্টারবীজ।

উপজেলার শিবপুর,বাগানবাড়ী,ছেংগারচর, ঠাকুরচর, আদুরভিটি, হানিরপাড়, শিকিরচর, কলাকান্দা, নন্দলালপুর, সুজাতপুর,ঘনিয়ারপাড়,গজরা,ইসলামাবাদ,সুলতানাবাদ, ফতেপুর পশ্চিম,ফতেপুর পূর্ব, দূর্গাপুর,মান্দারতলী, দশানী, মোহনপুর, ফরাজীকান্দি কালিপুর,ষাটনল,সাদুল্যাপুর ও চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপকহারে ভুট্টার চাষ হয়েছে। যে দিক দু’চোখ যায়, উপজেলার বিস্তির্ণ এলাকা জুড়ে শুধু ভুট্টা ক্ষেত আর ভুট্টা ক্ষেত। এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া উপযোগী হওয়ায় উৎপাদনও হচ্ছে প্রচুর।

প্রতি হেক্টর জমিতে ভুট্টার ফলন হয় ১২৫ থেকে ১৫০ মণ। প্রতি মণ ভুট্টা কৃষকরা বিক্রি করতে পারছে ৬২০ থেকে ৬৫০ টাকা। ভুট্টা চাষিরা জানিয়েছেন, সেচ সুবিধা না পাওয়ায় অনেক জমিতে বোরো ধানের চারা রোপন করতে পারেনি বলে সে জমিতে তারা ভুট্টার চাষ করেছে। ধানের উৎপান খরচ বেশী হওয়ায় ও ভুট্টা চাষে কম খরচ হওয়ায় কৃষকরা ভুট্টা চাষে বেশী ঝুঁকেছে।

ভুট্টা চাষে খরচ পুষিয়ে লাভ অনেক বেশী পাচ্ছে। আর তাই লাভজনক ফসল হিসেবে ভুট্টা চাষ করছে কৃষকরা। এদিকে এই জমিতে বার বার ভুট্টার চাষ করার পরে জমির উৎপাদন ক্ষমতা কমছে বলে কৃষিবিদরা জানিয়েছেন। ভুট্টার গাছ মাটি থেকে অতিরিক্ত রস শোষণ করে। ভুট্টা চাষ করা জমির মাটির উর্বরতা কমে যায়। এতে করে পরবর্তী ফসল উৎপাদনে বেশী সার প্রয়োগ করতে হয় এবং সার প্রয়োগেও উৎপাদন ভালো হয়না।

উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল কাইয়ুম মজুমদার বলেন,এ এলাকায় ভুট্টার ভালো ফলন হয়। খরচের তুলনায় লাভ বেশী হওয়ায় কৃষকরা ভুট্টা চাষে বেশী আগ্রহী হয়ে উঠছেন। তবে বেরীবাঁধের ভিতরে ভুট্টা চাষ করার জন্য আমরা কৃষকদের উৎসাহিত করিনা। ভুট্টা চাষ করায় জমিতে মাটির উর্বরতা কমে যায়। ফলে ধানসহ অন ফসলন উৎপাদন কম হয়।

চাঁদপুর টাইমস/কেএইচকে/ডিএইচ/২০১৫