‘পেরিলা’ নতুন জাতের একটি ভোজ্য তেল ফসল। সয়াবিন ও সরিষার মতো পেরিলার বীজ থেকে ভোজ্যতেল উৎপন্ন হয়।
পেরিলার আদি নিবাস চীন হলেও দক্ষিণ কোরিয়ায় এর ব্যাপক বিস্তৃতির কারণে বিশ্ব দরবারে এটি কোরিয়ান পেরিলা নামে পরিচিত।
কোরিয়ায় চাষ হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর বিস্তৃতি ঘটেছে জাপান, ভিয়েতনাম, ভারত ও থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে।
সম্প্রতি বাংলাদেশেও বিভিন্ন জায়গায় পেরিলার চাষ শুরু হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় প্রথমবারের মতো পেরিলার চাষ শুরু করলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ফেলো আবদুল কাইয়ুম মজুমদার।
বাংলাদেশে পেরিলার চাষাবাদ পদ্ধতি ও তেলফসল পেরিলার উপর গবেষণা করা কৃষি অফিসার আবদুল কাইয়ুম মজুমদারের উৎসাহে ও মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি অফিসার মেসা. সালাউদ্দিনের সহযোগিতা চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার বাগানবাড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ মান্দারতলী গ্রামের আলাউদ্দিন তার ২০ শতক জমিতে পেরিলা চাষ করেন।
কৃষক আলাউদ্দিন বলেন, কাইয়ুম স্যার আমাকে পেরিলা চাষ করার জন্য বলে। এ জেলায় আমিই প্রথম পেরিলা চাষী। তেল বীজ হিসেবে পেরিলা যে জমিতে চাষ করেছি, এই জমি এ সময় পরিত্যাক্তই থাকতো। ফলন আশানুরূপ হয়েছে।
উপজেলা সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. খোরশেদ আলম বলেন, চাঁদপুর জেলায় আমরাই প্রথম এ ফসল চাষ করেছি। মাঠ পর্যায়ে চাষাবাদ করার জন্য সব সময় চাষীকে পরামর্শ প্রদান করছি। এই ফসলের শতকরা ৬৫ ভাগই ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। এই অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন বলেন, আমাদের দেশে সরিষা ছাড়া নিজস্ব কোন ভোজ্যতেল ফসল নেই। সয়াবিনসহ অন্যান্য তেল বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। তাই আমরা পেরিলার চাষ শুরু করলাম। যাতে এটি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
শেওে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এর পিএইচডি ফেলো আবদুল কাইয়ুম মজুমদার বলেন, ১২০ দিনের মধ্যে এই ফসল ঘরে তুলা সম্ভব। সেই দিক থেকে জমিতে একাধিক ফসল করাও যায়। তাই জমির সর্বোচ্চ ব্যবহারের দিককে গুরুত্ব দিয়ে এই ফসল চাষ শুরু করেছি।
এটি যদি দেশের মানুষের সুস্বাস্থ্যের সহযোগী ও লাভজনক হিসেবে চাষাবাদ করতে পারি তাহলে একজন কৃষিবিদ হিসেবে নিজে অনেকটা তৃপ্তি পাবো। পেরিলা দেশে ভোজ্যতেলের ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি সুস্থ জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে বলে মনে করি।
করেসপন্ডেট,২৮ অক্টোবর ২০২০