Home / উপজেলা সংবাদ / মতলব উত্তর / মতলব উত্তরে এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় মূল আসামী গ্রেফতার
এসিড

মতলব উত্তরে এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় মূল আসামী গ্রেফতার

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার সুজাতপুর গ্রামে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রোববার পবিত্র শবেরাতের রাত ১১ টায় ঘুমন্ত মা রাশেদা বেগম এবং তার মেয়ে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ মিলি আক্তারের (২০) উপর দুর্বৃত্তের এসিড নিক্ষেপ ঘটনায় মোঃ জাহিদ (২০) নামের আরেক তরুণকে গ্রেফতার করেছে মতলব উত্তর থানা পুলিশ।

রোববার রাত তিনটার দিকে নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানা এলাকার একটি ভাঙারির দোকান থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
শনিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানা এলাকার একটি ভাঙারির দোকান থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার জাহিদ মতলব উত্তর উপজেলার মমরুজকান্দি গ্রামের মোঃ শাহাজাহান মিয়ার ছেলে। তিনি এলাকায় বখাটে হিসেবে পরিচিত। এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত প্রধান আসামি সুজাতপুর গ্রামের শফিকুল ইসলাম (২৫) ওরফে মানিকের ঘনিষ্ঠজন তিনি। এ নিয়ে এ ঘটনায় মোট দুই আসামীকে আটক করা হলো।

মতলব উত্তর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শহীদ হোসেন এর নেতৃত্বে মতলভ উত্তর থানা পুলিশের একটি দল নিয়ে রোববার দিবাগত রাত দুইটায় নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানা এলাকায় যায়। সেখানকার পুলিশের সহায়তায় বন্দর থানা এলাকার একটি ভাঙারি দোকানে অভিযান চালিয়ে জাহিদকে আটক করে মতলব উত্তর থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে এ ঘটনায় করা মামলায় জাহিদকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

এসআই মিজানুর রহমান বলেন, জাহিদকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আজ বিকেলে তাঁকে চাঁদপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট তন্ময় আদালতে হাজির করা হলে আটক জাহিদ ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এ ঘটনায় জাহিদসহ মোট দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মামলার প্রধান আসামি শফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। পরে দুদিনের রিমান্ডে শেষে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। আবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ২৬ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে বসতঘরের দরজা দিয়ে মিলি ও তাঁর মা রাশেদা বেগমের ওপর অ্যাসিড ছুড়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। অ্যাসিডে মিলির মুখ, বুক, পিঠ, ডান হাতসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যায়। তাঁর মা রাশেদা বেগমের ডান হাত, বুক ও উরুও ঝলসে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় স্বজনেরা তাঁদের উদ্ধার করে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করেন।

এ ঘটনায় মিলির বাবা আইয়ুব আলী বাদী হয়ে সুজাতপুর গ্রামের শফিকুল ইসলাম ও তাঁর সহযোগী প্রবাসী মোঃ বাদলকে আসামি করে থানায় মাম

এ ঘটনায় মিলির বাবা আইয়ুব আলী বাদী হয়ে সুজাতপুর গ্রামের শফিকুল ইসলাম ও তাঁর সহযোগী প্রবাসী মোঃ বাদলকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। এ ছাড়া ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে ৩ মার্চ সুজাতপুর বাজার এলাকায় মানববন্ধন করা হয়।

মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শহীদ হোসেন রোববার রাত ৮টার দিকে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান, উপজেলার সুজাতপুর গ্রামে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রোববার পবিত্র শবেরাতের রাত ১১ টায় ঘুমন্ত মা রাশেদা বেগম এবং তার মেয়ে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ মিলি আক্তারের (২০) উপর দুর্বৃত্তের এসিড নিক্ষেপ ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনায় থানায় একটি নিয়মিত মামলা করি। এ ঘটনার সাথে জড়িত প্রধান আসামি সুজাতপুর গ্রামের শফিকুল ইসলাম (২৫) ওরফে মানিককে আমরা গ্রেফতার করি। পরে মানিককে রিমান্ডে আনার পর মানিকের বিভিন্ন তথ্য উপাত্য বিশ্লেষণ করে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে ১৭ মার্চ দিবাগত রাত ৩ টার সময় আমি এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান গঠনার সাথে জড়িত আসামী জাহিদকে নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানা এলাকার একটি ভাঙারির দোকান থেকে তাঁকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। পরে তাকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করি। জিজ্ঞাসাবাদে আটক আসামী জাহিদ জানায় যে সে ১৫০০ টাকার বিনিময়ে শফিকুল ইসলাম (২৫) ওরফে মানিকের কথায় ঘুমন্ত মা রাশেদা বেগম এবং তার মেয়ে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ মিলি আক্তারের (২০) উপর এসিড নিক্ষেপ করেছে। আমরা আজ রোববার চাঁদপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট তন্ময় আদালতে হাজির করা হলে আটক জাহিদ ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক,১৮ মার্চ ২০২৪