চাঁদপুর ভূট্টা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ৬৬ হাজার মে.টন

চাঁদপুর দেশের অন্যতম নদীবিধৌত কৃষি প্রধান অঞ্চল। মেঘনা, পদ্মা, মেঘনা ধনাগোদা ও ডাকাতিয়া নদী এ জেলা ওপর দিয়ে বয়ে যাওযায় কৃষি উৎপাদনে নদী অববাহিকায় ব্যাপক ফসল উৎপাদন হয়ে থাকে ।

দেশের অন্যতম দু’টো সেচ প্রকল্প চাঁদপুরেই অবস্থিত হওয়ায় দেশের প্রায় ১৫ % খাদ্য শস্য উৎপাদন হয়ে থাকে। এর একটি হলো চাঁদপুর সেচ প্রকল্প এবং অপরটি হলো মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প । এ ছাড়াও চাঁদপুরে প্রায় ১১-১২টি বিছিন্ন চরাঞ্চল রয়েছে যেগুলো বিপুল পরিমাণ খাদ্য ও রবি ফসল হয়ে থাকে।

চাঁদপুরে চলতি মৌসুমে ৬৬ হাজার ৫শ মে.টন ভূট্টা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র্য নির্ধারণ করা হয়েছে। জমি চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৬ হাজার ৬ শ ৫০ হেক্টর ।

চাঁদপুরে সাধাণত: আলু,সরিষা,গম ফসল ঘরে তোলার সাথে সাথেই ওই জমিতেই চাষিরা ভূট্টা চাষ করে থাকে। এতে তাদের বাড়তি শ্রম,কীটনাশক ও সার দিতে হয় না ।

এ দিকে এবার আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ,পরিবহনে সুবিধা,কৃষি বিভাগের উৎপাদনের প্রযুক্তি প্রদান,যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নত,কৃষিউপকরণ পেতে সহজলভ্যতা,বীজ,সার ও কীটনাশক ব্যবহারে কৃষিবিদদের পরামর্শ,ব্যাংক থেকে কৃষিঋণ প্রদান ইত্যাদি কারণে চাঁদপুরের চাষীরা ব্যাপক হারে ভূট্টা চাষ করছে। বিশেষ করে চাঁদপুরের মতলবে ব্যাপক ভূট্টা উৎপাদন করে থাকে চাষীরা।

চাষিদের ঋণ সহায়তা দিলে চরাঞ্চলগুলোতে আরো ব্যাপক ভূট্টা চাষ করা সম্ভব। মতলবের চরইলিয়ট,চর কাসিম,ষষ্ট খন্ড বোরোচর, বোরোচর, চাঁদপুর সদরের রাজরাজেস্বর, জাহাজমারা, লগ্মীমারা, বাঁশগাড়ি, চিড়ারচর, ফতেজংগপুর, হাইমচরের ঈশানবালা, চরগাজীপুর, মনিপুর, মধ্যচর, মাঝিরবাজার, সাহেববাজার ও বাবুরচর ইত্যাদি এলাকাগুলোতে ভূট্টা চাষ করা সম্ভব ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি চাঁদপুরের সূত্র মতে,চাঁদপুর সদরে চাষাবাদ ৫৯০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ হাজার ৯ শ’ মে.টন।

মতলব উত্তরে চাষাবাদ ১ হাজার ৮ শ ২০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ হাজার ২ শ’ মে.টন। মতলব দক্ষিণে চাষাবাদ ২ হাজার ৬ শ’৭০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৬ হাজার ৭ শ’ মে.টন।

হাজীগঞ্জে চাষাবাদ ২শ ’৪৫ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৪শ’ ৬৫ মে.টন। শাহরাস্তিতে চাষাবাদ ২০ হেক্টর এবং উৎপাদন ২ শ মে.টন ।

কচুয়ায় চাষাবাদ ১ হাজার ১শ’২৫ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ হাজার ১শ’৫০ মে.টন।

ফরিদগঞ্জে চাষাবাদ ১শ ৪০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৪শ মে.টন। হাইমচরে চাষাবাদ ১৫ হেক্টর ও উৎপাদন ১ হাজার ৫শ মে.টন । বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবারই চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা বেশি বলে চাঁদপুর কৃষিবিভাগের একজন কৃষিবিদ জানিয়েছে ।

তিনি আরো জানান, দিন দিন চাঁদপুরে ভূট্টার চাষাবাদ বাড়ছে । আমাদের শর্করা চাহিদা পুরণে এটি অন্যন্য ভূমিকা পারন করে থাকে ।মৎস্য ও গো-খাদ্য হিসেবে এর ব্যাপক চাহিদা বিদ্যমান। বর্তমানে কোনো কোনো এলাকায় ভূট্টা চাষীরা ঘরে তোলা শুরু করেছে।

আবদুল গনি, ৮ মে ২০২১

Share