রাজধানী ঢাকার বাড়ি মালিকদের মাধ্যমে ভাড়াটিয়াদের ব্যক্তিগত তথ্য পুলিশের কাছে না দিতে নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছেন হাই কোর্ট। এর ফলে সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে তথ্য নিতে পারবে।
তবে নাগরিকদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সজাগ থাকতে বলেছেন হাই কোর্ট।
বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ রোববার (১৩ মার্চ) এ আদেশ দেন।
ভাড়াটিয়াদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে গত ৭ ও ৮ মার্চ হাইকোর্টে দায়েরকৃত রিট মামলাটি শুনানি করা হয়। ৮ মার্চ মঙ্গলবার শুনানি শেষে এটি আদেশের জন্য রোববার ১৩ মার্চ দিন ঠিক করে দেন আদালত।
আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন, দেশে নাগরিকদের কাছ থেকে যেকোনো বিষয়ে পুলিশ পদক্ষেপ নিতে পারবে। ২০০৬ সালের বিধিমালায় এটি উল্লেখ আছে।
এ মামলার আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া দাবি করেছেন, দেশে জঙ্গি তৎপরতা আছে, সেটি সরকার স্বীকার করুক আর না করুক। আদালতের এ রায়ের মাধ্যমে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে গেল, দেশে জঙ্গি আছে।
তিনি বলেন, ‘জঙ্গি থাকার কারণেই অস্ট্রেলিয়ার টিম বাংলাদেশে আসেনি। আদালত বলেছেন, ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে পুলিশ নিরাপত্তার স্বার্থে তথ্য নিতে পারবে। তবে পুলিশ যদি এ তথ্যের অপব্যবহার করে, সেক্ষেত্রে হয়রানির স্বীকার ব্যক্তি আদালতের শরণাপন্ন হতে পারবেন।’
গত ৩ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করেন।
তার আগে গত ১ মার্চ ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম থেকে পুলিশকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছিলেন এ আইনজীবী। আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক(আইজিপি) ও ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) কমিশনারকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। সঠিক সময়ে এ নোটিশের জবাব না পেয়ে তিনি হাই কোর্টে মামলাটি দায়ের করেছিলেন।
লিগ্যাল নোটিশ পাঠানোর পর এই আইনজীবী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আইন মেনে চলা একজন নাগরিক হিসেবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আইনগত সহায়তা করতে আমি ইচ্ছুক। তবে যে সহায়তা তারা চাইছেন, তা তাদের আইনগত এখতিয়ারে পড়ে না। এভাবে ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়ার মতো কোনো আইনি সুযোগ পুলিশের নেই।’
তিনি বলেছিলেন, নাগরিকদের যেসব ব্যক্তিগত গোপনীয় তথ্য পুলিশ যেভাবে সংগ্রহ করছে, তা করার মতো প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ পুলিশের নেই বলেও জানান এ আইনজীবী।
‘এসব তথ্যের অপব্যবহার হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়া এসব তথ্য যদি কোনো ভুল ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের হাতে পড়ে, তাহলে ব্যক্তির ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ক্ষুণ্ন হতে পারে’।
ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে এক পৃষ্ঠার যে ফরম ভাড়াটিয়াদের পূরণ করতে দেয়া হচ্ছে, সেখানে ভাড়াটিয়ার ছবির পাশাপাশি তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, পাসপোর্ট নম্বর, ফোন নম্বর, জন্মতারিখসহ বাসার বাসিন্দা, গৃহকর্মী ও ড্রাইভারের তথ্য চাওয়া হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের লোগো সম্বলিত ওই ফরমের ফটোকপি বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আবার তা সংগ্রহ করছেন পুলিশ সদস্যরা।
সূত্র : বাংলামেইল
চাঁদপুর টাইমস নিউজ ডেস্ক ||আপডেট: ০১:৩৭ অপরাহ্ন, ১৩ মার্চ ২০১৬, রোববার
এমআরআর
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur