২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ডাক্তার সংকটের মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলছে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা। এতে জরুরি বিভাগের চিকিৎসাসেবায় ভোগান্তীতে পড়তে হচ্ছে রোগীদেরকে।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালটিতে বিভিন্ন রোগের বিষেশজ্ঞ সর্বমোট ৪৭ জন চিকিৎসক নিয়োগ রয়েছে। এরমধ্যে জরুরি বিভাগে ৩টি শিপটে মোট ৫ জন মেডিকেল অফিসার দায়িত্ব পালন করছেন। আর বাকিরা হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে দায়িত্ব পালন করছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায় এ হাসপাতালটি ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নির্ধারিত হলেও এখানে বিভিন্ন বিভাগে গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৬’শ রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে। আর এসব রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেয়ার জন্য যেখানে ৬০ থেকে ৭০ জন চিকিৎসক প্রয়োজন সেখানে মাত্র নিয়োগ রয়েছে ৪৭ জন চিকিৎসক।
এ কারনে প্রতিদিন চিকিৎসাসেবায় বেগাত পোহাতে হয় ডাক্তার এবং রোগীদেরকে। তবে বিশেষ করে হাসপাতালের জরুরি বিভাগটিতে চিকিৎককের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। প্রায় দেড় দুই মাস ধরে চলছে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এমন অনিয়মিত চিকিৎসাসেবা।
গত কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে সরজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যে সকল চিকিৎসকের দায়িত্ব পালন করার কথা। চিকিৎসক সংকটের কারনে জরুরি বিভাগে নিয়মিত দায়িত্বে পালনে সেখানে সেই ডাক্তারদের কে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়নি।
প্রতিদিনই দেখা যায়, হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সাথে থাকা ১১৬ নম্বর কক্ষটিতে তালা জুলে আছে। আর ওই কক্ষের ডাক্তারের দায়িত্ব পালন করছেন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ আসিবুল আহসান চৌধুরী এবং মেডিকেল অফিসার ডাঃ মিজানুর রহমান, ডাঃ নাজমুল আবেদীন, ডাঃ নুরে আলম, ডাঃ আনোয়ার হোসেনসহ মোট ৫ জন চিকিৎসক বিভিন্ন শিফটে দায়িত্ব পালন করছে।
খবর নিয়ে জানা যায়, এদের মধ্যে ডাঃ আনোয়ার হোসেন দুই মাসের জন্য ফাউন্ডেশন প্রশিক্ষনে গিয়েছেন। আর ডাঃ মোঃ নুরে আলম ১ মাসের জন্য রোহিঙ্গা ক্যাপে গিয়েছেন। এজন্য সংকটের মাঝে আরো সংকট দেখা দিয়েছে।
দেখাযায় হাসপাতালের একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত আরএমও যেখানে মেডিকোলিগ্যাল বিষয়ে প্রশাসনিক কাজ করা কিন্তু চিকিৎসক সংকটের কারনে দেখা যায় ওই চিকিৎসক প্রতিদিন জরুরি বিভাগের রোগীদেরকে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন।
এতে করে একদিকে যেমন তার প্রশাসনিক কাজে কাজের বেগাত ঘটছে অন্যদিকে দুটি দায়িত্ব একসাথে পালন করতে গিয়ে চিকিৎসাসেবায়ও হিমশিম খেতে হচ্ছে। অপরদিকে রোগীরাও অনেক ভোগান্তিতে পড়ছে।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ আসিবুল আহসান চৌধুরী টাইমসকে জানান, সরকারি এ হাসপাতালটিতে ২৫০ শয্যা নামকরন করা হলেও এখানে গড়ে প্রতিদিন অন্তত ৫/৬ রোগীদেরকে চিকিৎসাসেবা দিতে হয়। এছাড়া হাসপাতালের অন্তঃবিভাগ ও বর্হিবিভাগেও প্রতিদিন অনেক রোগীদেরকে চিকিৎসাসেবা দিতে হয়। সবকিছু মিলিয়ে দেখা যায় যে পরিমানে রোগী হাসাতালে আসে সে পরিমানে ডাক্তার নিয়োগ নেই।’
তিনি আরো জানান, এখানে সর্বমোট ৪৭ জন ডাক্তার নিয়োগ রয়েছে । কিন্তু দেখা যায়, যেখানে ৫৫ থেকে ৭০ জন ডাক্তারের প্রয়োজন সেখানে রয়েছে মাত্র ৪৭ জন। একারনে রোগীদের চিকিৎসাসেবায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে অনেকটা সমস্যা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আরো কিছু চিকিৎসক নিয়োগের জন্য আমরা সিভিল সার্জন এবং স¦াস্থ্য মন্ত্রনালয়ে লিখিত আবেদন করেছি। কিন্তু আজো কোন নতুন চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়নি। এ সংকট নিরসনের জন্য আমরা প্রয়োজনে আবারো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত দিবো।
কবির হোসেন মিজি
: আপআপডেট, বাংলাদেশ ১১:০৩ পিএম, ৬ নভেম্বর, ২০১৭ সোমবার
ডিএইচ