তুমি সুন্দর–
অপূর্ব সুন্দর তোমার বাঁকা চোখের চাহনি
মুক্তহাসি লাবণ্য মুখশ্রী
কোমল অন্তর।
তুমি সুন্দর–
খররৌদ্রের মতো
ঝর্ণার তীক্ষ্ণফোঁটার মতো
বর্ষার ঘনঘটা মেঘের মতো
তুমি সুন্দর–
সন্ধ্যালালিমার স্নিগ্ধ আলোর মতো
ফুটফুটে জোছনার মতো
জোনাকির মিটিমিটি আভার মতো
তুমি সুন্দর–
শিল্পীর কল্পতুলির মতো
চাঁদিনীরাতের গল্পের মতো
দোলনায় ঘুমন্ত শিশুর মতো
তুমি সুন্দর
তোমার হস্যোজ্জ্বল চেহারামাধুরী
আমি ভুলতে পারি
এমন কঠোর মমত্বহীন নই আমি
অপদার্থ অধম হতে পারি–
অকৃতজ্ঞ হতে পারি না
দোহাই…
কখনো কি করেছি অনিষ্টের প্রার্থনা?
না, প্রিয় না, এ তোমার ভুল ধারণা
অগাধ মেলামিশায় যদিওবা কারও স্বরূপ জানা যায়
তবু সেই বোঝাপড়ায় অনেক কিছু অজানা থেকে যায়
আমাকে তুমি সহজে জেনেছ বোঝেছ পড়েছ ঠিক
তবু কিছু ত তোমার রয়ে গেল অজানা
ভয় করো না, খুব কাছথেকেও দেখতে পাবে না–
মনের সাথে যখন দেহের ছায়ারও হয় কবর
জান কি তবে, ছায়াহীন মানব দেখা অসম্ভব
তবু…
বিবেকিকে বোঝাতে হয় না
মানুষ যদি নাও হই, হব না মনুষ্যত্বহারা
ভাল তবে করতে পারলাম না
করতে পারি না কি ভালর উপাসন?
আমার মন–মনের মালিক আমি–
এ হবে আমার কর্ম
এ হবে আমার সাধনা
আদর্শভাবনা…
আদর্শবান হওয়া কঠিন?
নাইবা পারলাম তবে আদর্শিত হতে
নাইবা জানলাম আদর্শের জীবন কী
নাইবা বুঝলাম ন্যায়নৈতিকতার ছলনা
বোঝেছি তবে সততার নগর কুয়াশায় ঢাকা–
সম্ভাবনা…
জানি না, সম্ভব বলে মনে হয় না
যেই রাজ্যের রাজেশ্বরী তুমি
সেই রাজ্যের প্রজা হতে পারি কিনা
এ তবে নিভৃত কামনা
আর কিছু…
চাই না
স্মৃতির ওসব তপ্তবালুচরে হেঁটে
দগ্ধ হোক তোমার মুগ্ধ পা–
তাতে তুমি ঘায়েল হলে
আমি শান্তি পাব না
সান্ত্বনা…
সান্ত্বনার রং কী জানি না
আমার মাঝে শান্তির উপস্থিতি যে নেই
মানসিকশক্তি সর্বোত্তম সম্পত্তি
হাসিখুশির আনন্দমুখর অচিন্ত্য হৃদয়
তোমার সাথে আছে–
থাকবে অই রাজঘরের ভাণ্ডারে
সেই তোমারই প্রাপ্য
আমারে আমি সংযম করতে পারি
এমন সংবিত্তি আমার মাঝে নেই আজ
আমি শূন্য হাতে ফিরি নে
ফিরেছি একেবারে নিঃসহায় নিরাশ্রয় হয়ে
নন্দিতার কবরে মালা দিয়ে
শুধু ভাবনারে এনেছি সঙ্গে
এটুকু আমার পাথেয়–পথের সম্বল
পুরুষমন…
এটা সত্য পুরুষের মন পরাধীন নয়
ওখানে শুভ্রনীলের বাড়িতে মোহিনীর হাতছানি
এখানে হলুদলালের প্রাসাদে অপূর্ব শান্তি
আমার গন্তব্য এখানে-ওখানে সীমাবদ্ধ নয়
কালাপানিতে হাজারবার হতে পারি নির্বাসিত
লালপানিতে একবারও ডুবে যেতে পারি না রঙিনশহরে
আমি যা পারি না সেখানে কেউ সামর্থ্যবান
এখানে আমার ব্যবধান
ভেবে দেখ ত একবার
আমার বন্দনার সাথে কারও ছন্দ মিলে কিনা
আমি বাধ্যতায় মুক্ত কেউ অধিকারে বন্দি
ভাবনায় মিলে যদি যুক্তি…
এ আমার স্থায়ী ঠিকানা–
বিরহনগরে হৃদয়হারা যেখানে হতাশ
যেখানে দিশেহারা পাবে না পথের সন্ধান
যেখানে নিরুপায় মনে করবে আত্মহননে উপায়
যেখানে ব্যর্থপ্রেমী বিষাশ্রয়ে খুঁজবে সমাধান
সেখানে আমায় দেখো পথের অনুসন্ধান…
কোন রোমাঞ্চের শহরে আমার দেখা পাবে না
দেখা পাবে না আর কোন নিশাতের আড্ডায়
অশ্রুসমুদ্র-দরদের কৃষ্ণকুটিরে
সান্ত্বনার প্রলেপে খেয়াল করো আবছায়াটা…
অই চাহাতের অদম্য কারাবাসী–
অর্থের তুলনায় যারা ধিক্কিত বেশি
উঁচুনিচুর কাঠগড়ায় যাদের মানা হবে দোষী
ভালবাসার মঞ্চে যাদের দেওয়া হবে ফাঁসি
তাদের মিলনে ছড়াবে উজ্জ্বল দ্যুতি–
ভাবনার প্রতিকৃতি।
আযহা সুলতান, চট্টগ্রাম থেকে
|| আপডেট: ০৯:০৭ পিএম, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, শনিবার
এমআরআর