কচুয়া উপজেলার আশ্রাফপুর ইউনিয়নের মাসনীগাছা-রামপুর ও বড়পাড়া গ্রামের মধ্যবর্তী বিরাট মাঠে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে মৎস্য চাষের নিষ্কাষিত পানির কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায় ১০ হেক্টর আবাদি জমির রোপা আমন ধান বিনষ্ট হচ্ছে। এ মাঠে কৃষকরা আউস,আমন ও বোরো ধানের চাষবাদ করে থাকে।
মাসনীগাছা গ্রামের শাহাদাত হোসেন,নুরা মিয়া, আজাদ, বাহার, আবুল হোসেন ও বড়পাড়া গ্রামের খোরশেদ আলমসহ বেশকিছু সংখ্যক ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে ওই মাঠে মৎস্য চাষ করে আসছে।
মৎস্য চাষের প্রয়োজনে মাঝে মাঝে খামারের পানি মাঠে নিষ্কাশনের প্রয়োজন হয়। ওই মাঠের পানি সরে যাওয়ার কোন খাল ও নালা-নর্দমা সরেজমিনে মাঠ ঘুরে দেখা যায়,কোন কোন জমির ধান গাছ ও আধাপাকা ধান পানিতে নিমজ্জিত হয়ে বিনষ্ট হয়ে গেছে। আবার কোন জমির পাকা ধান পানিতে নিমজ্জিত হওয়ার কারণে ওই ধান কেঁটে কৃষকরা ঘরে তুলতে পারছে না।
এতে কৃষকরা ফসলের পাশাপাশি গো-খাদ্য পাওয়া থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। বড় পাড়ার মৎস্যচাষী খোরশেদ আলম সহ স্থানীয় অধিবাসীরা জানান,এ মাঠের চাষীদের সহযোগীতায় পনশাহী গ্রামের আকঞ্জি পাড়া জামে মসজিদের উত্তর পাশে নালা সংস্করণ করে (সরকারি হালট অংশে)পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু পনশাহী গ্রামের সেকান্দর আলীর ছেলে মোবারক হোসেন ওই নালা জোরপূর্বক ভরাট করে ফেলায় এখন আর মাঠের পানি সরতে পারছে না।
ওই মাঠের ধান চাষী পনশাহী গ্রামের আব্দুল ওহাব মেম্বার,আমির হোসে, আনোয়ার, আবু তাহের,আব্দুল কুদ্দুর, রামপুর গ্রামের শরীফ মিয়া,মাসনীগাছা গ্রামের মিলন হোসেন,মমতাজ,মোস্তফা ও শাহজাহান জানান, পানিতে নিমজ্জিত হয়ে বিনষ্ট হওয়ার কারনে ১৫-১৬ ভাগ ফসলও তাদের ঘরে উঠছে না।
কাংখিত ফসল পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়ে এ মাঠের কৃষকদের আহাজারি যেন থামছে না। তারা আরো জানায়,সরকারি পর্যায় ওই এলাকার মাঠের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না করা হলে প্রায় ১০ হেক্টর জমি অনাবাদি থাকার আশংঙ্কা রয়েছে।
তাড়াতাড়ি পানি সরে না গেলে আসছে ইরি মৌসুমেও মাঠ জুড়ে ইরি ধান লাগানো নিয়ে শঙ্কায় আছি আমরা। বর্তমানে জলাবদ্ধতার হাত থেকে ফসল রক্ষা করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কৃষকরা কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপায়ন দাস শুভ, কৃষি কর্মকর্তা সোফায়েল হোসেন ও সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মাছুদুর রহমানের নিকট লিখিত আবেদন জানিয়েছেন।
তিন কর্মকর্তাই কৃষকদের আবেদন পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন,` শিগগিরই সরে জমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
জিসান আহমেদ নান্নু , ১০ ডিসেম্বর ২০২০