Home / উপজেলা সংবাদ / মতলব উত্তর / মতলবে ঝড়ে রোপা বোরোসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
বোরোসহ

মতলবে ঝড়ে রোপা বোরোসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

গত কয়েকদিনের ভ্যাপসা গরমের পর হঠাৎ করেই চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড় ও ভারি বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের আওতায় রোপা বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

বৃষ্টি আর ঝড়ো বাতাসে ধানগাছগুলো নুইয়ে পড়ে মাটির সাথে এক হয়ে গেছে। ফলে ফলন বিপর্যয়ের আশংকায় হতাশ কৃষক! এছাড়াও ভুট্টা, তরকারি, শাকসবজি, কাঁচা মরিচ, ঘর বাড়িসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

উপজেলার ছেঙ্গারচর পৌরসভার আদুরভিটি বিল, ঠাকুরচর বিল,ওটারচর বিল, মরাদোন বিল, ঘনিয়ারপাড়,তালতলী, কলাকান্দা, হানিরপাড়, নিজ ছেংগারচর,রুহিতারপাড়,সাদুল্যাপুর,ষাটনলসহ কয়েকটি বিল ঘুরে দেখা যায়, মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের কৃষকের স্বপ্ন যেন গুড়েবালি হয়েছে কালবৈশাখী ঝড়ে। ধান পরিপুষ্ট হয়ে পাকার আগেই মাটিতে পড়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফলে বাধ্য হয়েই ধান কাটতে হচ্ছে কৃষকদের। সময়ের আগে ধান কাটার ফলে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন তারা। আবহাওয়ার এ অবস্থায় একই সঙ্গে মাঠে ফসল কাটা শ্রমিকেরও সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে বাধ্য হয়ে বেশি দামে শ্রমিক দিয়ে ধান কাটতে হচ্ছে কৃষকদের। আধা-কাচা পাকা ধান মাটিতে নুইয়ে পড়ে যাওয়া ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফলে এ অবস্থায় ফসলহানির ভয়ে আধাকাচা পাকা ধান কাটতে হচ্ছে কৃষকদের।

মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের আওতার আদুরভিটি গ্রামের কৃষক আয়নাল আখন্দ, ঠাকুরচর গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন, তবদিল হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ধানের যে অবস্থা কাইটা কোন লাভ নাই। এক কানি ধান কাটতে খরচ ৭ -৮ হাজার টাকা, ফলন হবে ১৮- ২৫ মন। আর ধানের ৯০০-১০০০ টাকা মন। কিন্তু সবমিলিয়ে ধানের উৎপাদন খরচ প্রতি মন ১৪০০-১৫০০ টাকা। আবার এমন দুর্যোগে ক্ষতির সম্মুখীন হলে আমরা নিরুপায় হই। মূলত গরুর খড়ের জন্য এখন ক্ষেতে যাওয়া লাগে। নাইলে গেলাম না অনে। এভাবেই জানালেন তারা কষ্টের কথা।

ঠাকুরচর গ্রামের কৃষক তবদিল হোসেন বলেন, আমি ৪বিঘা জমিতে ব্র্রি-৯২, হাইব্রিড ও ব্র্রি-১০০ ধানের আবাদ করেছি। সবেমাত্র ধান কাটার প্রস্তÍুতি নিয়েছি। কিন্তু বুধবার সকালে বাতাসের কারণে ১বিঘা জমির ধানগাছ মাটিতে শুয়ে পড়েছে। ধান ঝরে পড়েগেছে। এ অবস্থায় ফলনের বিপর্যয়সহ লোকসানের আশংকা করছেন কৃষক তবদিল হোসেন মিঝি। তিনি প্রতি বিঘায় প্রায় ৪/৫ মণ ধান কম হবে বলে জানান।

ঘনিয়ারপাড় গ্রামের কৃষক মোসলেম দেওয়ান জানান, আমি ৫ বিঘায় ব্রি ধান- ২৮, ব্র্রি ধান – ২৯ আবাদ করি ঈদের পরই কাটা মারা শুরু করব এর মধ্যে এত বড় ক্ষতি হল।

ছেংগারচর পৌরসভার জানান, বুধবার সকালে বড় আকারের কালবৈশাখীর ঝড় হওয়ার কারণে ঘরবাড়ি সহ ফসলের অনেক ক্ষতি হয়েছে।

মতলব উত্তর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো সালাউদ্দিন চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, কালবৈশাখীর ঝড়ে ঘরবাড়িসহ ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের পর আমরা উপজেলার বিভিন্ন মাঠ পরিদর্শন করেছিএ তবে কৃষক ফসল ঠিকঠাক মত ঘরে তুলতে পারলে ক্ষতির পরিমানটা হয়তো এত ব্যাপক হবে না।

নিজস্ব প্রতিবেদক, ২১ এপ্রিল ২০২২