মুক্তিযোদ্ধা কাঁকন বিবি মুক্তিযুদ্ধের অগ্নিকন্যা বীর মুক্তিযোদ্ধা কাঁকন বিবি মারা গেছেন। বুধবার (২১ মার্চ) রাত ১১টা ৫ মিনিটে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মাহবুবুল হক চৌধুরী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বীরঙ্গনা কাঁকন বিবির লাশ হাসপাতালেই রাখা হবে। বৃহস্পতিবার (২২ মার্চ) সকালে তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। ’
তিনি আরও বলেন, ‘সোমবার (১৯ মার্চ) কাঁকন বিবি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। তিনি দীর্ঘদিন শ্বাসকষ্টসহ হৃদরোগে ভুগছিলেন। তিনি হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ডা. নাজমুল ইসলামের অধীনে ভর্তি হলেও আইসিইউতে ডা. সব্যসাচী রায়ের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন।’
জানা যায়, গত বছরের ২১ জুলাই ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে ওসমানী মেডিক্যালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় কাঁকন বিবিকে। কয়েকদিন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরেছিলেন এই মুক্তিযোদ্ধা।
কাঁকন বিবি ১৯৭১ সালে তিন দিনের কন্যা সন্তান সখিনাকে রেখে যুদ্ধে চলে যান। মুক্তিযোদ্ধাদের গুপ্তচর হিসেবে কাজ করতে গিয়ে তিনি রাজাকারদের হাতে নির্যাতনের শিকার হন। তিনি কেবল মুক্তিবাহিনীর গুপ্তচর হিসেবেই কাজ করেননি, সেই সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধেও অংশ নেন।
মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী তার সঙ্গে সেক্টর কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মীর শওকতের সঙ্গে দেখা করিয়ে দেন। তার ওপর দায়িত্ব পড়ে গুপ্তচর হিসেবে বিভিন্ন তথ্য জোগাড়ের।
পরে পাকিস্তানিদের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করার কাজ শুরু করেন কাঁকন। তার দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ চালিয়ে সফল হয়েছিলেন।
গুপ্তচরের কাজ করতে গিয়ে দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজারে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে ফের ধরা পড়েন তিনি। তখন টানা ৭ দিন পাকিস্তানি বাহিনী ও রাজাকারেরা তার ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়। তখন কাঁকন বিবিকে মৃত ভেবে অজ্ঞান অবস্থায় পাকিস্তানি বাহিনীরা ফেলে রেখে চলে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে বালাট সাব-সেক্টরে নিয়ে যাওয়া হয়। সুস্থ হয়ে তিনি আবার ফিরে যান বাংলাবাজারে। অস্ত্র চালনায় প্রশিক্ষণ নেন। কাঁকন বিবি প্রায় ২০টি যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১০: ৪০ এ.এম ২২মার্চ,২০১৮বৃহস্পতিবার
এ.এস