Home / লাইফস্টাইল / বিয়ে পরবর্তী স্ত্রীর সাথে স্বামীর ব্যবহার
বিয়ে পরবর্তী স্ত্রীর সাথে স্বামীর ব্যবহার

বিয়ে পরবর্তী স্ত্রীর সাথে স্বামীর ব্যবহার

চাঁদপুর টাইমস লাইফস্টাইল ডেস্ক:

বিয়ের পর স্বামী ও স্ত্রী উভয়েরই পরস্পরের প্রতি পরস্পরের অনেক দায়িত্ব

ও কর্তব্য রয়েছে।
এর সবটাই ইহ জীবনের ও পর জীবনের সুখ শান্তি অর্জনের লক্ষে শরীআত কতৃর্ক
নির্ধারিত সুন্দর ব্যবস্থা ।
প্রত্যেক বিবেকবান স্বামীকে খেয়াল রাখতে হবে যে দু জনের ৬০/৭০ বছরের এক সফর
শুরু হল।
শরীআতের মাসআলা এই যে পাঁচ জনে মিলে যদি এক ঘন্টার সফর করে,
তবে একজন কে আমির বানিয়ে নাও।

এখানে তো দীর্ঘ দিনের সফর,কাজেই একজনকে নেতৃত্ব দেয়া প্রয়োজন।
শরীআতে স্বামীকে আমীরের আসন দিতে বলা হয়েছে যে, তোমরা বিবি হল মামুর
এবং আমীর সম্পর্কে বলা হয়েছে সাইয়ি্যদুল কওমী খাদিমুহুম:যিনি আমীর হবেন
তিনি মানুষের খিদমত করবেন।
অর্থাৎ স্বামীকে কৃর্তত্ব দোয়ার দ্বারা নিরস্কুর আধিপত্য বিস্তারের কোনো সুযোগ দেওয়া
হয় না ।

বরং স্ত্রী সন্তান সন্ততি খিদমত ও সেবার পূর্ণ দায়িত্ব দেয়া হয় তার উপরে।
শরী আতের অন্য একটা দৃষ্টি ভঙ্গিতে বলা যায় যে, স্বামী হল আশীক আর স্ত্রী তার
মাহবুবা। দুনিয়ার নিয়ম তো এটায় যে আশিক তার মাশুক কে সর্বদা আরাম পৌছানোর
চেষ্টা করবে।
কাজেই স্বামী তার স্ত্রী কে সাধ্যমত আরাম পৌছানোর চেষ্টা করবে।

আল্লাহ্‌ পাক স্বামীকে উদ্দেশ্য করে আদেশ দিচ্ছেন যে দেখো আমার এই বান্দীকে
আমি সৃষ্টি করেছি। অতঃপর আমি নিজের হাতে একে তোমার জন্য নির্ধারিত করেছি।

কাজেই তুমি একে আমার দেয়া নেয়ামত মনে করে এর সাথে কোমল ব্যাবহার করো।
এর দোষ ক্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখ।
কোরআন কারীমে বলা হয়েছেঃ তোমরা বিবিদের সাথে উত্তম ব্যাবহার করো।
একটা উদাহরন দিলে বিষয় টা পরিস্কার হবে।

এক লোকের কাছে পুলিশ সুপার ফোন করে বলেছে যে ভাই শুনলাম আমার মেয়ের
বান্ধবী কে নাকি তুমি বিয়ে করেছ।
ওদের দুই বান্ধবীর মধ্যে অসাধারন মুহাব্বত।
সুতরাং তুমি তোমার বিবির দিকে বিশেষ ভাবে খেয়াল রেখো, যাতে কোন অসুবিধা
না হয়।
এই ফোন পাওয়ার পর সে লোক সর্তক হয়ে যাবে।
পূর্বের চেয়ে এখন আরো বেশি ভালো ব্যাবহার করবে এবং স্ত্রীর সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে
উদ্যাগী হবে।
সামান্য তম জুলুম অত্যাচারের কল্পনাও তার দিলে আসবেনা।
সামান্য একজন পুলিশের কথাতে যদি এমন নিষ্ঠা বান হয়ে যাই ,
তা হলে মহা প্রতাপ শালী মহান আল্লাহর নির্দেশে আমাদের করনীয় , তা সহজেই
অনুমেয়।

আকাবিরে দেওবন্দের একজন মুরুব্বীর কাছে এক লোক ,অভিযোগ করল যে,
আমার স্ত্রী আমাকে খুব পেরেশান করেছে, এখন আমি তাকে তালাক দিতে চাই।
উত্তরে তিনি বললেন, দেখো, সে যদি তোমাকে কষ্ট দেয় টা হলে শোনঃ
এই মহিলারা অনেক লোক কে আল্লাহর অলি বানিয়ে দিয়েছে।
যদি তুমি আল্লাহর অল হতে চাও, তো সবর কর, আর যদি না চাও তা হলে
তালাক দিয়ে দাও।

হরযত মির্জা জানেজানী (রহঃ) বড় উচ্চ স্তরের বুজুর্গ ছিলেন।
একদিন তাকে স্বপ্নে বলা হল যে, দিল্লীর অমুক বস্তিতে খুব দ্বীনদার এক মহিলা আছে,
কিন্তু সে খুব বদ মেজাজী।
তুমি যদি তাকে বিয়ে করে বদ মেজাজীর উপর সবর করতে পারো,
তা হলে আমি তোমাকে আমার অলি বানিয়ে নিব।
সুতরাং পর দিন তিনি ঐ মেয়েকে বিয়ে করে আনলেন এবং তিনি তার শিষ্যদের কে বলতেন যে ,
দেখো,আল্লাহ্‌ তাআলা যে সারা বিশ্বে মির্জার ঢংকা বাজিয়ে দিয়েছেনঃতা এই
মুজাহাদার কারণেই।

শাইখ আবুল হাসান খোরসানীও অনেক বড় আল্লাহর অলি ছিলেন।
একদিন এক লোক দেখল যে, তিনি একটা সাপ দিয়ে লাকড়ির বোঝা বেঁধে তা
কাঁধে করে বাঘের পিঠে সওয়ার হয়ে আসছেন।
লোক টি অবাক হয়ে এর মর্ম জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন যে, এটা তার বদ মেজাজী
স্ত্রীর সাথে উত্তম ব্যাবহার এর পুরুস্কার।
স্ত্রীর প্রতি উত্তম ব্যাবহারের জন্য শরীআতে এভাবে স্বামীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ঠিক তদ্রপ স্ত্রীকে ও নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে সে যেন স্বামীকে পেরেশান না করে
তার সামর্থের বাইরে তার দরাসূলুল্লাহ -দাওয়া করে হয়রান না করে।
বরং সে তার স্বামীর আরামের দিকে সর্বদা লক্ষ্য রাখবে।
যে স্ত্রীর উপর তার স্বামী অসন্তুষ্ট থাকে,তার ইবাদত কবুল হয় না এবং ফেরেস্তারা তার
উপর স্বামীকে সন্তুষ্ট না করা পর্যন্ত লানত করতে থাকে।
স্বামীর গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেন যে , আমার শরীয়াতে যদি
আল্লাহ্‌ ব্যতিত অন্য কাউকে সিজদা করার অনুমতি থাকতো,
তা হলে মহিলাদের কে তাদের স্বামীকে সিজদা করার নির্দেশ দেয়া হতো।

নারীদের জন্য জান্নাতে যাওয়া পুরুষদের তুলনায় সহজ।
কোন মহিলা যদি নিন্মোক্ত ৪ টি কাজ ঠিক কত করে, তা হলে আখিরাতে তাকে
জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে প্রবেশ করার অনুমতি দেয়া হবে।

(১) পাঁচ ওয়াক্ত নামায সঠিক ভাবে আদায় করবে।
(২)রমজানে রোযা রাখবে।
(৩)স্বামীকে শরীয়াতের গণ্ডির মধ্যে থেকে খুশী রাখবে।
(৪) পর্দার সাথে থেকে নিজের ইজ্জত আব্রুর হিফাযত করবে।
এ ৪ টি কোন টি ই অসম্ভব বা কঠিন কাজ নয়।
কাজেই প্রত্যেক নারীর উচিৎ নিজ নিজ অবস্থান জান্নাত নিশ্চিত করা।