ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুঠিদুর্গাপুর গ্রামে বিয়ের দাবিতে পাঁচ দিন ধরে মুসলিম প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান করছে মুক্তি রানী নামে এক হিন্দু কলেজছাত্রী।
এ নিয়ে প্রেমিক ইমরান হোসেনের পরিবার বিপাকে রয়েছেন। মুক্তি রানী বিশ্বাস অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ও ইমরান হোসেন কেসি কলেজ থেকে বাংলায় অনার্স ও মাস্টার্স করে বর্তমানে এয়ারটেল কোম্পানিতে চাকরি করছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, প্রেমিকা মুক্তি রানীর দাবি, তাকে বিয়ে না করলে সে ওই বাড়ি থেকে সরবে না। এদিকে প্রেমিক ইমরান ও তার বাবা আব্দুল মান্নানও বিষয়টি মেনে নিতে চাচ্ছেন না।
মুক্তি রানী দাবি করছে প্রেমিক ইমরান হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করে, তারা স্বামী স্ত্রীর মতো বসবাস করেছেন।
এলাকার ইউপি মেম্বার কলিম উদ্দীন জানান, সদর উপজেলার ডেফলবাড়ি গ্রামের সরজিত কুমারের অনার্স পড়ুয়া মেয়ে মুক্তির সঙ্গে ইমরান দীর্ঘদিন ধরে প্রেম করে আসছে। প্রেমের সুবাদে গত ৩ বছর ধরে ঝিনাইদহ শহরের পাগলাকানাই সড়কে জনৈক মুরাদের বাড়িতে স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে ভাড়াও থেকেছে। এখন ইমরান স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করছে।
তিনি আরো জানান, গত বুধবার থেকে মুক্তি রানী ইমরানেদের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান করে। এলাকার শ’ শ’ মানুষ এ ঘটনা দেখতে কুঠিদুর্গাপুর গ্রামে ভিড় জমায়।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, ইমরান হোসেন একজন প্রতারক। সে একটি কলেজপড়ুয়া মেয়েকে প্রলোভন দেখিয়ে ৩ বছর ধরে স্বামী স্ত্রীর মতো বসবাস করেছে। এখন বিয়ে করতে টালবাহানা করছে।
রোববার সকালে বেতাই-চন্ডিপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ তারিফুল ইসলাম পাঁচ দিন ধরে প্রেমিকের বাড়ীতে অবস্থান করা মুক্তি বিশ্বাসকে পরিবারের হাতে তুলে দিতে গেলে সে তার পরিবারের কাছে যেতে রাজি হননি। এই নিয়ে গ্রামে ব্যাপক জনরোষ দেখা দিলে তাকে ঝিনাইদহ সদর থানার হেফাজতে দেওয়া হয়।
মুক্তি বিশ্বাস জানায়, ‘লম্পট ইমরান প্রথমে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। ঘর বাধার আশ্বাস দিয়ে পরিবারের লোকদের চোখকে ফাঁকি দিয়ে ঝিনাইদহ শহরে একটি ভাড়া বাড়ীতে বসবাস শুরু করে। বিয়ের কথা বললেই আজ নয় কাল, কাল নয় পরশু বলে কালক্ষেপন করতে থাকে। এখন সে আমাকে বিয়ে করতে চাচ্ছে না। সে আমার সাথে প্রতারণা করেছে। এখন আমার আত্মহত্যা করা ছাড়া আর পথ নেই। সে আমাকে বিয়ে না করলে আমি আত্মহত্যা করবো ‘
গ্রামের লোকজন ক্ষেপেছে ইমরান ও তার পরিবারের প্রতি। তারা চাই ইমরানের সাথে তার বিয়ে হোক। মুক্তির বাবা সরজিত কুমার অভাবের সংসার মেয়ের এই কান্ড লোক জানাজানি হলে তার ও সমাজে বসবাস করা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। রোবার সকাল ১১ টার দিকে তাকে থানায় নিলে গ্রামের প্রায় দেড়শত জন লোক থানায় জায়।
গ্রামের লোকজনের একটায় দাবি ইমরানের সাথে মুক্তি বিশ্বাসকে বিয়ে দিতে হবে। এদিকে, মুক্তি রানী বিশ্বাস সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোক হওয়ার কারণে ইমরানের পরিবার মুক্তির পরিবারকে দেশ ছাড়া করার হুমকি দিচ্ছে।
ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান হাফিজুর রহমান বলেন, আমরা ছেলেকে হাতে না পেলে কোন ব্যবস্থায় নিতে পারছি না। মেয়ে তার পরিবারের কাছে যেতে রাজি নয়। আপাতত ছেলের বাবা আবদুল মান্নান, মা ও খালাতো ভাই নগর বাথান কলেজের প্রিন্সিপাল মো. অলিয়ার রহমান থানা হেফাজতে রয়েছে।
গ্রামের লোকজন বলে যদি টাকার বিনিময়ে লম্পট ইমরান পার পেয়ে যায় তবে আমরা ছাড়বো না।
জাহিদুর রহমান তারেক, ঝিনাইদহ করেসপন্ডেন্ট [/author]
: আপডেট ০৫:০০ এএম, ১০ মে ২০১৬, মঙ্গলবার
ডিএইচ