ছেলেটি দারুন অর্থকষ্ট সকালের নাস্তাও খেতেন না। এক সাথে দুপুরের খাবারেই সারাতেন সকালেন নাস্তাও। আর তার মা হাসপাতালের আয়া প্রতিদিনের চেষ্টা ছিল যে কোন উপায়ে বেতনের টাকা সন্তানের লেখাপড়ার খরচের জন্য রেখে দিতে।
এমনকি হসপাতালের রোগিদের প্রদত্ত ভাত খেয়ে ও জীবন ধারণ করেছেন এই দুঃখিনী নারী। খেয়ে না খেয়েই কেবল সন্তানকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে মানুষ করার স্বপ্ন দেখেছেন তিনি।
এমনই হত দরিদ্র রত্নাগর্ভা মায়ের সন্তান গত বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ঢাকা থেকে মোবাইলে মাকে বলেন- ‘মাগো আমি বিসিএস পাশ করেছি।’
১৯৯৭ সালে মাত্র এক হাজান দুইশত টাকা বেতনে একটি বেসরকারি হাসপাতালে আয়ার চাকুরি নিয়েই সন্তানকে স্কুলে পাঠিয়েছিলেন শাহজাহান বেগম। চাকুরি করেই সন্তাদের লেখাপড়া শিখাবেন এরকমই অদম্য সাহস নিয়ে জীবন যুদ্ধে নামেন এই নারী।
তার প্রতিদিনের চেষ্টা ছিল মাসিক বেতনের টাকা যাতে অন্য খাতের খরচ না হয়। সন্তানদের লেখাপড়ার খরচের জন্যই তিনি মাসিক বেতনের টাকা রেখে দিতেন। এমনকি হাসপাতালের রোগিদের উদ্বৃত ভাতও তিনি নিয়ে যেতেন ঘরে।
অনেক সময় জীবন ধারণ করছেন হাসপাতালের রোগিদের দেয়া ভাত খেয়ে। দিবারাত্রি স্বপ্ন দেখতে থাকেন এই সংগ্রামী নারী কিভাবে তার সন্তানকে উচ্চ শিক্ষায় মানুষ করা যায়।
এমন ত্যাগি মায়ের সন্তান যখন তাকে মোবাইলে বিসিএস উত্তীর্ণের শুভ সংবাদটি দেন সেই মায়ের বাঁধ বাঙ্গা আনন্দ আর ধরে রাখে কে।
বিসিএস পাশের এমন শুভ সংবাদ শুনেই মা দু’রাকাত নফল নামাজ আদায় করেন। মা শাহজাহান বেগম (৪৭) বক্সবাজার বায়তুশ শরফ চক্ষু হাসপাতালের আয়া।
কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলি এলাকায় তার বসবাস। স্বামী মোহাম্মদ আবুল শাহজাহান আলী কাজ করতেন সাগরে মাছধরা নৌকার শ্রমিক হিসাবে।
বর্তমান চট্টগ্রাম শহরের একটি বেকারিতে কর্মরত তিনি। এক কন্যা ও দু’সন্তানের সংসার আয়া শাহজাহান বেগমের। জ্যেষ্ঠ কন্যার বিয়ে হয়ে গেছে। এই নারীর কেবল জীবন-যুদ্ধ দু’সন্তানকে নিয়ে। তাদের উচ্চ শিক্ষায় নিয়ে যাওয়াটাই তার এক মাত্র স্বপ্ন।
নিউজ ডেস্ক ।।আপডটে, বাংলাদশে সময় ১০:০৭ পিএম,২১ আগস্ট ২০১৬ রোববার
এইউ