Home / বিশেষ সংবাদ / বিমানবন্দরে লাগেজ চোরের গল্প
বিমানবন্দরে লাগেজ

বিমানবন্দরে লাগেজ চোরের গল্প

তার নাম আবদুল কাদির৷ বয়স ৪৫। পড়াশুনা ক্লাস ফোর পর্যন্ত। তার পেশা বিদেশ প্রত্যাগত যাত্রীদের কাছ থেকে বিমানবন্দরে লাগেজ চুরি। বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে যাত্রীরা যখন গাড়িতে ওঠার জন্য ক্যানপিতে আসেন তখন তাদের অনেকেই আবেগ আপ্লুত ও অন্যমনস্ক থাকেন।

দীর্ঘদিন পর প্রিয়মুখগুলি দেখে অনেকেরই তখন চোখে পানি আসে। প্রবাস জীবনে হাড়ভাঙা খাটুনির মাধ্যমে অর্জিত মূল্যবান সম্পদ, যা হাতে বহন করা ছোট ব্যাগটিতে রাখা আছে, সেটির কথা ক্ষণিকের জন্য অনেকেই ভুলে যান৷ আবদুল কাদির প্রবাসীদের সেই আবেগকেই কাজে লাগান।

তিনি বিমানবন্দরে কাজ করা কোনও কর্মী নন। কিন্তু এমনভাবে ক্যানপিতে এসে দাঁড়িয়ে থাকেন যেন বিদেশফেরত কোন প্রিয়জনকে নিতে এসেছেন। ক্যানপিতে ঘোরাফেরা করে নজর রাখেন গাড়ির জন্য অপেক্ষমান কোন প্রবাসীর ট্রলির দিকে। ট্রলির উপরে রাখা সহজে বহনযোগ্য ছোট হ্যান্ডব্যাগটি তার টার্গেট। প্রবাসী ভাইটি একটু অন্যমনস্ক হলেই হ্যান্ডব্যাগটি নিয়ে চম্পট দেন আবদুল কাদির।

লাগেজ হারানো একাধিক যাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে সিসি ফুটেজে আবদুল কাদিরের চেহারা দেখে তাকে ধরার জন্য অপেক্ষমাণ ছিলাম আমরা। অপেক্ষার প্রহর দীর্ঘায়িত হয়নি। গত শুক্রবার ক্যানপি এলাকায় এক প্রবাসীর লাগেজ চুরির প্রচেষ্টার সময় মোবাইল কোর্ট টিমের কাছে হাতেনাতে ধরা পড়েন তিনি। আগামী এক বছরের জন্য আবদুল কাদিরের ঠিকানা কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার।

এয়ারপোর্ট ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ জামির ভাষ্য, আবদুল কাদিরের মতো পাকা চোরেরা চেহারা ও পোশাকআশাকে আমাদেরই মতো দেখতে। খুব সহজেই তারা প্রবাসীদের আত্মীয়দের ভিড়ে মিশে থাকেন। তাদেরকে আলাদা করে চিনে আইনের আওতায় আনা সহজ কাজ নয়। তাই সতর্ক থাকুন। যে কোনও সমস্যায় ম্যাজিস্ট্রেট ও আইন শৃঙখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা নিন।

এয়ারপোর্টের দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ জামি বলেন, ‘আমরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে লক্ষ্য করেছি যে একই লোক বারবার ঘোরাঘুরি করে। আর্মড ফোর্স পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) আমাদেরকে সিসিটিভি ফুটেজ দেওয়ার পর আমরা তৎপর হই। নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছিলাম, অবশেষে গত শুক্রবার অপরাধীকে ধরতে সক্ষম হই।’ আরো পড়ুন- বিমানবন্দরে লাগেজ কাটা পার্টির দৌরাত্ম থামাতে নতুন নিয়ম

বার্তা কক্ষ, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০