‘অনন্যার মতো সব মুখ বুঝে সহ্য করব না আমি। দেব না কোনো ছাড়। ডিভোর্স বললেই কি হয়ে গেল! আমার কি ভবিষ্যৎ নেই! রুমি যদি কোনো অ্যাকশন নেয়, আমিও রি-অ্যাকশন দেখাব।’
অনেকটা ক্ষোভের সঙ্গে এমন বহির্প্রকাশ ঘটালেন রুমির দ্বিতীয় স্ত্রী কামরুন্নেসা। মঙ্গলবার থেকে টক অব দ্য মিডিয়ায় পরিণত হয়েছে রুমি-কামরুন্নেসার বিচ্ছেদ ঘটনাটি।
কেউ বলছেন রুমির দোষ কেউবা আবার পক্ষ নিচ্ছেন কামরুন্নেসার। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ডালপালা মেলছে নানা ধরনের গুঞ্জনও। ইতিমধ্যে দেশে এসে পৌঁছেছেন রুমির দ্বিতীয় স্ত্রী কামরুন্নেসা।
জানা গেছে, এয়ারপোর্টে নামার পরপরই রুমির বাসায় ফোন দেন কামরুন্নেসা। অনুরোধ করা হয় গাড়ি পাঠানোর জন্য। কিন্তু সেখান থেকে কোনোরকম সাড়াশব্দ না পেয়ে সোজা চলে যান কেরানীগঞ্জে বাবার বাড়িতে।
এদিকে রুমির পরিবার বলছে আবার ভিন্ন কথা। রুমির মা বলেন, ‘সবাই রুমিকে ভুল বুঝেছে। কেউ কেউ তার দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলছে। কিন্তু এবার রুমি নিজেই নির্যাতনের শিকার হয়েছে। রুমি নয় কামরুন্নেসা তাকে প্রতিনিয়ত হেনস্থা করেছে। বলতে লজ্জা নেই মাঝে মাঝে শারীরিক নির্যাতনও করেছে।’
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার পরিবারের কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে কামরুন্নেসার বাড়িতে যান রুমির মা নাসিমা আক্তার। সঙ্গে নিয়ে যান সেই তালাকনামার আরও একটি কপি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রুমির মা বলেন, ‘আমরা পরিবারের মুরব্বিদের নিয়ে কামরুন্নেসার বাসায় গিয়েছি। সেখানে সমস্ত ঘটনা খুলে বলেছি।’ ‘সমস্ত ঘটনা’ বিষয়টি বুঝলাম না, একটু পরিষ্কার করবেন কি?
এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত কামরুন আমাদের সঙ্গে যেসব অত্যাচার ও প্রতারণা করেছে তা তুলে ধরেছি তাদের পরিবারের সামনে। সেখানে তার চাচারাও উপস্থিত ছিলেন। জানিয়েছি সে কিভাবে রুমির বিয়ের পরও আগের স্বামীর সঙ্গে পরকীয়া করে যাচ্ছিল। উপস্থিত অনেকেই জানতেন না কামরুনের আগে বিয়ে হয়েছিল।’
রুমির মা আরও বলেন, ‘রুমির সঙ্গে কামরুনের বিয়ের কাবিননামাও নিয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে স্পষ্ট করে লেখা ছিল পাত্রী তালাকপ্রাপ্ত। এমনকি এসব ঘটনা শোনার পরে কামরুনের চাচারা তাকে উদ্দেশ করে বলে— যেমন কর্ম তেমন ফল। সে যেহেতু অনন্যার ঘর ভেঙেছে তাই অভিশাপ লেগেছে।’
এমনকি ভবিষ্যতে যাতে কোনো উটকো ঝামেলায় পড়তে না হয় সে কারণে কেরানীগঞ্জের স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছেও পুরো ঘটনা অবহিত করে আসে রুমির পরিবার। রুমির মা আরও বলেন, ‘সবকিছু জানিয়ে এসেছি গণ্যমান্য ব্যক্তিদের। এবার রুমি নিজেই নির্যাতনের শিকার হয়েছে। কামরুন্নেসা তাকে প্রতিনিয়ত অত্যাচার করেছে।’
অত্যাচার, ঠিক বুঝলাম না— ‘বাবারে এসব কথা প্রকাশ করলেও নিজের লজ্জা। অনন্যার সঙ্গে যেহেতু একবার ঝামেলা হয়েছে তাই কামরুনের অনেক অত্যাচার নীরবে সহ্য করেছি। এমনকি চুরির অপবাদ দিয়ে আমার মাথার চুল কেটে নিয়েছে কামরুন।’ এমনটা বলতে বলতে কান্নার শব্দ ভেসে আসে ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে।
রুমির মা বলেন, ‘এ কথা বিশ্বাস না হলে আমার বাসায় এসে দেখে যান। মাথার চুলগুলো কি করেছিল এ মেয়ে। অনেকটা হুট করেই অনন্যা ও রুমির মাঝখানে ঢুকে পড়ে কামরুন্নেসা।’ তাহলে কি অনন্যার জন্য এখন আফসোস করছেন? ‘দেখেন তখন আমাদের সবাইকে কামরুন মিসগাইড করেছিল। অনেক কিছু মুখ বুঝে সহ্য করতে হয়েছে। তবে কামরুন যা করেছে তা কোনো মেয়েই করতে পারে না।’
বিয়ের পর থেকেই রুমির সঙ্গে বনিবনা হয়নি কামরুনের। এমনটা দাবি করে রুমির ভাবি মুন্নি বলেন, ‘দেখুন পরিবারে টুকটাক অশান্তি থাকে। কিন্তু কামরুন যা করেছে তা অপ্রত্যাশিত।
অতীতের তিক্ততার কথা মনে করে কখনো টুঁ-শব্দটিও করেনি রুমি।’ তার ভাবি আরও বলেন, ‘জন্মসূত্রে রুমির এই পুত্র মার্কিন নাগরিক। তাই একটা নির্দিষ্ট ভাতা পেত আয়ান। সে টাকা কামরুন নিজেই খরচ করে ফেলত।’
এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন কামরুননেসা। তিনি বলেন, ‘আমি কখনো রুমির গায়ে হাত তুলিনি। তা ছাড়া এত সাহস হয়নি যে শাশুড়ির চুল কেটে দেব। বরং হঠাৎ করে তার চুল ছোট দেখার পর আমি রুমিকে জিজ্ঞেস করেছিলাম।
সে বলেছিল, এটা একান্তই মায়ের ব্যাপার। সবচেয়ে বড় কথা সবাই মিলে আমার বিরুদ্ধে এখন অপপ্রচার চালাচ্ছে। আপনারা সময় দিন আমারও অনেক বলার রয়েছে। দু-একদিনের মধ্যে সব জানতে পারবেন। তাদের অ্যাকশনটা দেখে রি-অ্যাকশন দেখাব। (বিডি প্রতিদিন)
নিউজ ডেস্ক : আপডেট ০২:০০ এএম, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, শনিবার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur