কুরবানি শব্দের অর্থ- ত্যাগ, উৎসর্গ, বিসর্জণ, নৈকট্যলাভ ইত্যদি। কুরবানি শব্দটি আরবী কুরবান শব্দ থেকে উদ্ধিত।
পরিভাষায় একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্যলাভের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট দিনে, নিদিষ্ট সময়ে,নির্দিষ্ট ব্যক্তির পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট পশু যবেহ করাকে উযহিয়্যা বা কুরবানি বলে।
কুরবানি সম্পর্কে আল্লাহ তা’য়ালা বলেন:
আমি সকল সম্প্রদায়ের জন্য কুরবানির বিধান দিয়েছি আমি তাদেরকে জীবননোপকনণ স্বরুপ যে সব চতুস্পদ জন্তু দিয়েছেন এসব পশু জবেহ করার সময় আল্লাহর নামা উচ্চারণ করবে। তোমাদের ইলাহই একমাত্র ইলাহ, সুতরাং তাঁর নিকট আত্মসমর্পন করা এবং সুসংবাদ দাও বিনীতগণকে (সুরা হজ্জ-৩৪)
আল্লাহ তা’য়ালা আরো বলেন: এসব পশুর গোস্ত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, কিন্তু পৌঁছে তাঁর কাছে তোমাদের মনের তাকওয়া।
এ বিষয়ে রাসুল(স.) বলেন :
হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, রাসূল (স.)বলেছেন কুরবানির দিনে মানব সন্তানের কোন নেক কাজই আল্লাহর নিকট ততপ্রিয় নয়, যত প্রিয় রক্ত প্রবাহিত করা। অর্থাৎ কুরবানি করা। কুরবানির জানোয়ার গুলো তাদের শিং, পশম ও ক্ষুরসহ কিয়ামতের দিন কুরবানি দাতার পাল্লায় এনে দেয়া হবে। কুরবানির পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই আল্লাহর নিকট পৌঁছে যায়। সুতরাং তোমরা আনন্দ চিত্তে কুরবানি করো (তিরমিযী)
উপরোল্লিখিত কুরআন ও হাদীস থেকে পরিস্কার ভাবে বুঝা যায় কুরবানি হবে একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে এটি কাউকে দেখাবার উদ্দেশ্যে নয়। অথচ আজ যা হচ্ছে তা হলো সামাজিক যোগাযোগের প্রধান মাধ্যমে পশুর ছবি ভিডিও এবং লেখার মাধ্যমে ব্যক্তি তার পশুর যাবতীয় তথ্য পোস্ট করে জানান দিচ্ছেন যে পশুটি কেমন, কোন দেশী, কতটাকায় ক্রয় করেছেন, কত কেজি ওজন, দৈর্ঘ ও প্রস্থ কতফুট, সবছেয়ে বেশী দামে ওমুক খেলোয়ার, ডাক্তার, ব্যবসায়ী বা ওমুক নেতা কুরবানি দিচ্ছেন তা জনগণকে যানাচ্ছেন।
পশুর গলায় শব্দ যন্ত্র ঝুলিয়ে, সাজিয়ে, শহর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত প্রদক্ষিণ করা হয়। যাতে লোকজন জানতে পারে উমুক ব্যক্তি এত বড় গরু কুরবানি দিচ্ছেন। একটু খেয়াল করুন, আল্লাহ তা’য়ালা যদি হাবিল ও কাবিলের কুরবানির মত আমাদের কুরবানির পরিক্ষা নিতেন যে যার কুরবানি
কবুল হবে আসমান থেকে আগুন এসে সেটি জালিয়ে দিত। আর যে কুরবানি কবুল হবেনা সেটি এমনিতে মাটিতে পড়ে থাকবে। তাহলে আমাদের কয়জন ব্যক্তির কুরবানি কবুল হতো? আমরা বুঝতে পারতাম।
তখন লোকেরা বলাবলি করতো উমুক হাজি সাহেবে, গাজি সাহেব, ইমাম সাহেব ও নেতাজির কুরবানি কবুল হয় নাই। আল্লাহ আমাদেরকে এই কঠিন পরিক্ষার মাধ্যমে জাতির সামনে লজ্জিত হওয়ার হাত থেকে বাঁচিয়েছেন এবং এ সব পশুর গোস্ত আমাদের জন্য হালাল করেছেন।
তাই আসুন কুরবানির সাথে সাতে আমাদের মনের সকল পশুত্বকে কুরবানি দিয়ে এক মাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে রক্ত প্রভাহিত করে তাঁর নিকটবর্তী থেকে আরো নিকটবর্তী হতে পারি-আমিন।
।।আপডটে, বাংলাদশে সময় ০৬:০৫ পিএম,১২ সেপ্টেম্বন ২০১৬ সোমবার
এইউ