Home / শীর্ষ সংবাদ / ফরিদগঞ্জে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র
ফরিদগঞ্জে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র

ফরিদগঞ্জে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় গত ৪ বছরে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়েছে ৪০ হাজার গ্রাহক। নতুন গ্রাহকদের সংযোগ প্রদানে ৩’শ ৭৩ কি. মি. লাইন নির্মাণে সরকারি ব্যয় হয়েছে ৫৫ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।

চাঁদপুর জেলায় বিদ্যুতের নতুন সংযোগ প্রদানের দিক থেকে ফরিদগঞ্জ উপজেলায় সর্বোচ্চ সংখ্যক নতুন গ্রাহক বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়েছে। সরকারের লক্ষ্য চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে ফরিদগঞ্জে শতভাগ বিদ্যুতায়ন নিশ্চিত করা। এ লক্ষে আরো ৫৯ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৩’শ ৯৯ কি. মি. নতুন বিদ্যুৎ লাইনের নির্মাণ কাজ দ্রæত এগিয়ে চলছে।

চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর ফরিদগঞ্জ জোনাল অফিস সূত্রে এসকল তথ্য পাওয়া গেছে। তবে লাইনের ধারণ ক্ষমতা কম থাকায় গ্রাহক চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ।

বিশেষ করে গরমের সময় ব্যপক লোডশেডিং অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে গ্রাহকরা। নতুন গ্রাহকের অতিরিক্ত চাহিদা পূরণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ানোর জন্য বিদ্যুৎ লাইনের ধারণ ক্ষমতা বাড়ানো জরুরি বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে কিভাবে দ্রæত বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া যায়, এই পরিকল্পনা উপস্থাপন করে পল্লী বিদ্যুৎ কতৃপক্ষ গত কয়েক দিন পূর্বে অনুষ্ঠিত উন্নয়ন মেলায় প্রথম স্থান অর্জন করেছে।

মেলা চলাকলীন ৩ দিনে গ্রাহকের আবেদনের প্রেক্ষিতে মাত্র ৪’শ ৫০ টাকা ব্যয়ে ১’শ ৫০ জন গ্রাহককে তড়িৎ সংযোগ দিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ কৃর্তপক্ষ সবাইকে চমকে দেয়।

এছাড়া ৪ বছরে চাঁদপুর জেলার মধ্যে ফরিদগঞ্জ উপজেলাতে সর্বোচ্চ সংখ্যক নতুন গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানের নতুন রেকড সৃষ্টি করেছে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ।
চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর ফরিদগঞ্জ জোনাল অফিস সূত্রে জানা যায়, গ্রাহকের মাঝে বিদ্যুৎ সরবরাহ সুবিধা বাড়ানোর জন্য ৪নং সুবিদপুর পূর্ব ইউনিয়নে প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০ মেঘাওয়াটের একটি উপ-কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ চলছে। আগামী জুন মাসের মধ্যে এটির কাজ শেষ হবে। এই কেন্দ্রটি চালু হলে ফরিদগঞ্জে বিদ্যুতের লোডশেডিং অনেকটা কমে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পল্লী বিদ্যুৎ সূত্রে আরো জানা যায়, ১৯৭৮-২০০৮ সাল পর্যন্ত ত্রিশ বছরে ফরিদগঞ্জে বিদ্যুতের গ্রাহক সংখ্যা ছিলো ৪১ হাজার ৫’শ ১৫ জন। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে আ’লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিদ্যুতের নতুন সংযোগ পায় ৮’হাজার ৯’শ ৩১ জন গ্রাহক। আ’লীগ সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪ বছর সময়ে বিদ্যুতের নতুন সংযোগ পায় ৪০ হাজার ৩৬ জন গ্রাহক।
এছাড়া আরো ২১ হাজার ৯’শ ৪৫ জন নতুন গ্রাহকের মাঝে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানের কাজ ৭৭ ভাগ সর্ম্পন্ন হয়েছে।

এ বিষয়ে চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর ফরিদগঞ্জ জোনাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. মোখলেছুর রহমান চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ফরিদগঞ্জে শতভাগ বিদ্যুতায়নের জন্য ১৭ শ’ ২৩ কি. মি. বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণের প্রয়োজন। ইতোমধ্যে ১৩শ’ ২৫ কি. মি. লাইন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকী সংযোগ প্রদানের কাজ দ্রæত এগিয়ে চলছে। প্রতি কি. মি. নতুন লাইন নির্মাণ করে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানে সরকারি ব্যয় ১৫ লাখ টাকা।

সিস্টেম লস সর্ম্পকে তিনি বলেন, ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিদ্যুতের সিস্টেম লস ১৬.৫০ শতাংশ থেকে কমে তা ১০.৫৬ শতাংশে দাড়িয়েছে।
লোডশেডিং দূর করে গ্রাহককে সর্বোচ্চ নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধা দেওয়ার জন্য বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র ৭ ফিডারে ভাগ করা হয়েছে।

অপরএক প্রশ্নের জবাবে তিনি চাঁদপুর টাইমস প্রতিনিধিকে বলেন, ফরিদগঞ্জ ও হাইমচর উপজেলায় গ্রাহকের বিদ্যুৎ চাহিদা ২৩ মেঘাওয়াট হলেও ধারণ ক্ষমতা রয়েছে ১৮ মেঘাওয়াট। ৩৩ কেভি লাইনের ধারণ ক্ষমতা কম থাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে সম্পুন্ন লোড নেওয়া যায়না। তবে এ সমস্যা সমাধানের লক্ষে কাজ চলছে। ধারণ ক্ষমতা বাড়লে লোডশেডিং আরো কমে আসবে।

এদিকে সরকারের দেওয়া নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ উদ্বোধনকালে স্থানীয় সংসদ সদস্য ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূইয়া একাধীকবার বলেন, সরকার সামান্য অর্থে জনগণকে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করছে। কিন্তু একটি কুচক্রিমহল সরকারের এই উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। দালালদের খপ্পরে না পড়ে সরকার নির্ধারিত ফিতে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার জন্য গ্রাহকদের অনুরোধ জানান তিনি।

এছাড়া ২০১৮ সালের সেপ্টম্বর মাসের মধ্যে শতভাগ বিদ্যুতায়ন নিশ্চিত করা যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

প্রতিবেদক : আতাউর রহমান সোহাগ, ফরিদগঞ্জ
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৮: ৩০ পিএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, রোববার
এইউ