Home / উপজেলা সংবাদ / ফরিদগঞ্জে কিশোর মুরাদের বিমান উড়বে আকাশে
ফরিদগঞ্জে কিশোর মুরাদের বিমান উড়বে আকাশে

ফরিদগঞ্জে কিশোর মুরাদের বিমান উড়বে আকাশে

চারিদিকে যখন পৌর নির্বাচনের হাওয়া বইছে ঠিক এমন সময় আকাশ থেকে বিকট শব্দে বিমান আছড়ে পড়লো চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামের ফকির বাড়ির সামনের ফসলি জমিতে। লোকমুখে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার শতশত উৎসুক জনতা বিমানটি দেখার জন্য সেখানে ভিড় জমায়।

তবে সংবাদ শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, উল্টো চিত্র। শুধুমাত্র নিজের শখ আর অন্যকে আনন্দ দেয়ার জন্য নিপুণ হাতে এটি নির্মাণ করছে হতদরিদ্র রিকশাচালকের ছেলে মুরাদ হোসেন (১৫)। প্রায় আড়াই মাস ধরে নির্মাণ করা হয় এই বিমান। পুরোপুরি মেরামত শেষে এখন সেটি আনুষ্ঠানিকভাবে আকাশে উড়িয়ে বিজয় দিবসের আনন্দ করবে বলে জানিয়েছে মুরাদ হোসেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মুরাদের নির্মাণ করা বিমানটি দেখার জন্য বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও নারী-পুরুষ ছুটে এসেছে। একটু দূর থেকে দৃষ্টি দিলেই মনে হয় এইমাত্র বিমানটি যেন আকাশ থেকে আছড়ে পড়েছে এই গ্রামে। তবে এর কাছে না গেলে বোঝার কোনো উপায় নেই, যে মুরাদ এটি শখেরবশত নির্মাণ করছে।

ওই গ্রামের বাসিন্দা তছলিম মোহরী জানায়, দরিদ্র মুরাদের এমন উৎসাহ দেখে আমি হতবাক। এখন এলাকাবাসী মুরাদকে আর্থিক সহযোগিতা করতে হয়। তার নিপুণ হাতের কাজ দেখে অভিভূত হই। সাধ্য থাকলে আমার নিজের পকেট থেকে লাখ টাকা দিয়ে দিতাম তাকে। যে টাকায় সে আরো নুতন নুতন কিছু তৈরি করে আমাদের দেখাতে পারে।

কিশোর মুরাদ জানায়, ইতোপূর্বে সে হেলিকপ্টার ও লঞ্চ নির্মাণ করে তা পানিতে ভাসিয়ে এলাকার লোকদের আনন্দ দিয়েছে। বিনিময়ে কিছু না চাইলেও মুরাদের নির্মাণ শৈলী দেখে আনন্দে উদ্বেলিত মানুষের উৎসাহ দৈখে মুরাদও আরো উৎসাহ পায়। এতে করে নুতন নুতন জিনিস তৈরি করতে তার আরো উৎসাহ বেড়ে যায়।

জানা যায়, তিন ভাই এক বৈানের মধ্যে সবার বড় মুরাদ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে। অভাব আর অনটনের কারণে মুরাদের পড়ালেখা বেশি দূর এগোতে পারেনি। বাবা নজরুল ইসলাম একজন রিকশাচালক, মা জাহানার বেগম বাক প্রতিবন্ধী। লেখাপড়া করতে না পেরে বর্তমানে মুরাদ ইলেকট্রিকের কাজ করছে।

সেখান থেকেই নতুন কিছু উদ্ভাবনের চিন্তা তার মাথায় আসে। এলাকাবাসীর কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে মুরাদ হোসেন গত আড়াই মাসে ওই বিমানটি তৈরি করেছে। এটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে তার ১৫/২০ হাজার টাকা। তা নির্মাণ করতে ককসিট, স্টিলের রড়, ব্যাটারি, কাঠসহ বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে। এর ভেতরে থাকা ইঞ্জিন চালু করা হলে অবিকল বিমানের শব্দ শুনা যায়। বসার জন্য বিমানটির পাইলট ছাড়াও সাতটি আসন রাখা হয়েছে।

পরের সংবাদটি পড়তে ক্লিক করুন : ফরিদগঞ্জের প্রতিভাবান কিশোর মুরাদের স্বপ্নের বিমান ভাসলো পানিতে 

নিউজ ডেস্ক  ।। আপডেট : ১১:৫৯ পিএম, ০৮ ডিসেম্বর ২০১৫, মঙ্গলবার

ডিএইচ