একটু দেখা, কিছুটা পরিচয়, মোবাইলে কথোপকথন আর এক সময় পার্কে বসে আড্ডা বা সিনেমা দেখা। আর এভাবেই একটি ছেলে বা মেয়ের সাথে সৃষ্টি হয় প্রেমের সর্ম্পক। পরবর্তীতে এই প্রেমের আড়ালে বিভিন্ন পার্ক বা থিয়েটারে বসে বাদাম খাওয়া, ছোলা খাওয়ার আড়ালে যা হচ্ছে তা রীতিমত পশ্চিমাদেরও হার মানিয়েছে বাংলাদেশ।
প্রেম ভালোবাসার নামে এখানে সেখানে অবাধ মেলামেশা আর ছেলে মেয়ের যৌন চাহিদা হরহামেশাই পূরণ হয়ে যাচ্ছে। কখনো কখনো স্কুল কলেজের ক্লাস ফাঁকি দিয়ে চলে যাচ্ছে আবাসিক কোন হোটেলে।
বাংলাদেশে সমবয়সীদের সাথে ভালোবাসার বিষয়টি বেশি লক্ষনীয়। যার কোন ভবিষ্যত নাই। ছেলেটির যোগত্যা অর্জনের বহু আগেই মেয়েটির পাড়ি জমাতে হয় শ্বশুরবাড়ি, অতঃপর সন্তানের জননী হয়ে দিব্বি সংসারি হয়ে যায়। অথচ এরাই লেখাপড়া নামে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে সমবয়সীদের সাথেই অবাধ মেলামেশায় জড়িয়ে পড়ে।
কখনো কখনো গর্ভবতীও হয়ে পড়ে। আর পরিবারকে সে কখা না জানাতে পেরে অনেকেই বেছে নেয় আত্মহত্যার পথ। মূলত, এই প্রেমের আড়ালে চলছে নারী দেহ ভোগ আর উভয়ের যৌন চাহিদা পূরণ।
নিজেদের শারীরিক চাহিদা মেটানোর জন্য মোটামুটি একটি প্রেমিক বা প্রেমিকা হলেই হয়। যার মন বা আচরণ ভালো হোক না হোক দেহটা তার সুন্দর হলেই আজকাল প্রেম হয়ে যাচ্ছে।
রাজধানীর বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ও পার্ক ঘুরে দেখা গেছে প্রেমের নামে তারা লুটোপুটি খাচ্ছে একজন আরেকজনের উপরে। সন্ধ্যা বা বিকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান রমনা পার্ক বা আশপাশ এলাকায় গেলে দেখা যায় হরেক রং বেরঙের কাপড় পরে তারা বেড়িয়েছে শুধু প্রেম করার জন্য। আর প্রেম ভালোবাসার নামে কখনো প্রকাশ্যেই একে অপরকে জড়িয়ে চুমু খাচ্ছে আলিঙ্গন করছে।
ভদ্রলোকদের দেখে হাত দিয়ে চোখ ঢেকে চলাফেরা করতেও দেখা গেছে। দিনের আলোতেই এসব এলকায় ভদ্রলোকদের জন্য চলাফেরায় লজ্জায় পড়তে হয় আর সন্ধ্যার পরতো ভাবাই যায় না কি হয় এখানে।
প্রেমের নামে সাময়িক সুখ পেতে জলাঞ্জলি দিচ্ছে নিজেদের আত্মসম্মান। শুধু তাই শারীরিক সেই ‘নষ্টামি’ সুখ স্মৃতি ধরে রাখতে মোবাইলের ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও করা হয যখন তখন। এসব ভিডিও কম্পিউটার এর মাধ্যমে পৌছে যায় সবার হাতে । সমাজের ছোট বড় সব বয়সের ছেলে মেয়েরা দেখতে থাকে অতি আধুনিক প্রেমিক প্রেমিকাদের দ্বারা তৈরী করা এসব ভিডিও। বিষয়টি ঘৃণার নয় লজ্জার হলেও এসব দেখার যেন কেউ নেই । এমন কি প্রেমিক প্রেমিকাদের হাতে তৈরী করা এসব নোংরা ভিডিও প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মেমোরি কার্ডে তে কপি হচ্ছে বিদ্যুতের চেয়েও দ্রুত গতিতে । বিদেশি পর্ণো ভিডিও নয় আমাদের দেশের পর্ণো ভিডিও দিয়েই সয়লাব প্রতিটি কম্পিউটার ।
বিভিন্ন কম্পিউটারের দোকানে অনুসন্ধান করে যারা গেছে, তাদের কম্পিউটার ড্রাইভে সামাজিক গান ছবি বা নাটকের চেয়ে অনেক বেশি পর পরিমাণে যৌন বিষয়ক ভিডিও সংরক্ষণ করা আছে যার বেশির ভাগই দেশি পর্নো ভিডিও। রাজধানীর বিভিন্ন কম্পিউটারের মেমোরি কার্ড লোড করার নামে জানা যায় তাদের কাছে এই পর্নো বেশি পরিমাণে নেয়া হয়।
প্রতিদিনই নতুন নতুন পর্নো আসছে কি না তা জানতে ভদ্রবেশি কাস্টমাররা ভিড় করে দোকানে। তবে আধুনিক আর মোবাইলে মেমোরি প্রযুক্তি আসাতে কেউ আর তেমন পর্নো সিডি ভিডিও কেনে না বলেও জানান দেকানদাররা। মোবাইলে পর্নো ভিডিও নেয়া কাস্টমারের মধ্যৈ সব বয়সী থাকলেও এর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে তরুণরাই বেশি বলেও জানা যায়। এছাড়াও ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রেমিক প্রেমিকাদের দিয়ে তৈরি করা হাজার হাজার পর্নো ভিডিও পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৯৯ ভাগ ভিডিওই হচ্ছে স্কুল কলেজের পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীদের।
ইন্টারনেটে পাওয়া পর্নো ভিডিও গুলোর মধ্যে রাজধানী নামিদামি স্কুল কলেজসহ রয়েছে কয়েকটি জেলা কলেজেরও নাম। যারা নিজেরা যৌন চাহিদা মিটিয়ে আর এই দৃশ্য ধারণ করে ইন্টারনেটে প্রকাশ করেছে। বিভিন্ন সূত্র ও তথ্য মতে প্রাপ্ত পর্নো ভিডিও গুলো যাচাই করে দেথা গেছে, বেশিরভাগক্ষেত্রেই ভিডিওতে ছাত্রীরা নিজ ইচ্ছেই মিলিত হয়েছে শারীরিক সম্পর্কে ।
শুধু ব্যতিক্রম দেখা গেছে জামালপুর একটি কলেজের পর্নো ভিডিওতে। এখানে মেয়েটি ইচ্ছায় যৌন সর্ম্পকে মিলিত হয় নি। বরং মেয়েটির আতৎচিৎকার শোনা যায়। ভিডিও তে দেখা যায় মেয়েটিকে পাঁচ মিনিটের কথা বলে প্রেমিকের বাড়ীতে আনা হয় ।তারপরে জোড় করে নগ্ন করে মোবাইলের ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও করা হয় ।
মেয়েটি নগ্ন ভিডিও করা থেকে রেহাই পেতে প্রেমিকের কথা মতো শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হয়। যদিও ভিডিওটা প্রথমবার হলেও যৌন সম্পর্ক দীর্ঘদিনের তা তাদের কথোপকথন থেকেই স্পষ্ট বুঝা যায়। আর কিছু ভিডিওতে দেখা যায় মেয়েরাই বেশি আগ্রহী যৌন লালসা পূরণের ক্ষেত্রে। সব চেয়ে ভয়ানক বিষয় হলো যত গুলো ভিডিও চেক করা হয়ে এর একটি ভিডিও তেও কোনো ছেলে মুখ দেখানো হয়নি। তার মানে এই সব ভিডিও করা মেয়েদের কে ব্যাকমিল অথবা ফ্রি সেক্স করার জন্য।
তবে দেশের বিভিন্ন দোকান আর বিভিন্নস্থানে পর্নো ভিডিও হাত বাড়ালেই পাওয়া গেলেও প্রশাসনের এই বিষয়ে কোন তৎপরতা দেখা যায়নি। বর্তমানে এই তরুণ প্রজন্ম মাদকের দিকেও ক্রমে ক্রমে বেশি পরিমানে আসক্তি হয়ে পরছে। কতিপয় সমাজকর্মীদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, দেশের এই মাদকাশক্তি আর পর্নো ভিডিও যে হারে ছড়াচ্ছে তাতে দেশের আগামীর প্রজন্মে ভবিষৎ অন্ধকার বলে মনে করেন। আর সন্তানের লেখাপড়া ও তার বন্ধুবান্ধব সকল বিষয়ে বাবা মা কে খেয়াল রাখার কথা বলেন। তাহলে হয়তো এই আগ্রাসী যৌনতার প্রেম হতে সমাজকে রক্ষা করা যেতে পারে বলে মত দেন।
নিউজ ডেস্ক || আপডেট: ০৩:১৭ অপরাহ্ন, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, শনিবার
এমআরআর