Home / উপজেলা সংবাদ / ফরিদগঞ্জ / ফরিদগঞ্জে প্রেমের বিয়েতে অভিভাবকের বাধা, অভিমানে আত্মহত্যার চেষ্টা
প্রেমের

ফরিদগঞ্জে প্রেমের বিয়েতে অভিভাবকের বাধা, অভিমানে আত্মহত্যার চেষ্টা

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ কে আর প্রত্যাশী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী মারিয়া আক্তার ও একই প্রতিষ্ঠান থেকে ২০২১ সালে এস.এস.সি পাশ ছাত্র মো. অপু দীর্ঘদিন ধরে প্রেম করছে। অপুর বন্ধুদের সহযোগিতায় চলতি বছরের ২৭ জুলাই তারা চাঁদপুর কোর্টে গিয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।

ঘটনার বিবরনে জানা যায়, ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১০নং গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের হাঁসা গ্রামের সৌদি প্রবাসী মাসুদ আলমের বড় মেয়ে মারিয়া ও ৯নং গোবিন্দপুর উত্তর ইউনিয়নের আব্দুল হামিদ গাজীর ছেলে মো. অপু গাজী পালিয়ে বিয়ে করে। তাদের গোপন বিয়ের খবর আর গোপন রইলো না। মেয়ের মাসহ আত্মীয়-স্বজন মারিয়াকে মোটিভেশন করিয়ে ছেলেকে তালাক দেয়। কিন্তু অপুর প্রেমের শক্তির কাছে আবারও নতজানু হতে হয় মারিয়াকে। সকল বাঁধা বিপত্তিকে পায়ে দলে তারা আবারও বিয়ে করেন। এবারও তারা কোর্টের দারস্থ হতে হয়। তবে মারিয়া হলফনামায় তথ্য গোপন করে অসত্য তথ্য দিয়েছে।

গত ২০ নভেম্বর রবিবার কোর্টে গিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো বিবাহ বন্দনে আবদ্ধ হয় তারা। বিয়ের পর অপু তার বৌকে নিয়ে উঠেন ভগ্নিপতির বাড়ি ফরিদগঞ্জের মিরপুরে। সেখানে তারা সুখেই দিনাতিপাত করছিলো। তাদের সুখে অসুখ হয়ে আসিন হন মারিয়ার মা তাছলিমা বেগম। তিনি এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানায় অভিযোগ করেন।

অভিযোগের আলোকে দায়িত্বরত পুলিশ অফিসার এস.আই মহিউদ্দিন ছেলের অভিভাবককের সাথে কথা বললে তারা মারিয়াকে গত ২৬ নভেম্বর তার মায়ের হাতে তুলে দেন।

এদিকে মারিয়াকে তার মায়ের হেফাজতে দেওয়ার কয়েক ঘন্টার পর সে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। মারিয়া আত্মহত্যা করতে গেছে এ সংবাদ শুনে অপুও তার ঘরে থাকা কীটনাশক খাওয়ার চেষ্টা করে।

এ বিষয়ে মারিয়ার মা চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘আমার মেয়ে অপ্রাপ্ত। তাদের বিরুদ্ধে যে মামলা দেইনি এটা তাদের কপাল। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেনি। রুমের দরজা বন্ধ দেখে আমি চিৎকার করি, তখন সে নিজেই দরজা খুলে দেয়।’

এ বিষয়ে মারিয়া আক্তার চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘আমি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনি।’

কেন আত্মহত্যা করতে গেলে এমন প্রশ্নের জবাবে সে বলে- জানিনা। অপর এক প্রশ্নের জবাবে মারিয়া বলে- ‘পুলিশ বলেছে আমি যদি এ বাড়িতে (বাপের বাড়ি) না আসি, তাহলে আমার স্বামীকে ধরে নিয়ে যাবে।’ তাকে যদি ধরে নিয়ে গিয়ে মারে, সে ভয়ে আমি চলে আসি।’

এ বিষয়ে তাছলিমা বেগমের গার্ডিয়ান সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘যেহেতু ছেলে মেয়ে দু’জনেই অপ্রপ্ত বয়স্ক। তাই আমরা বিষয়টি এখানেই শেষ করতে চাই। আর মেয়ের বাবা জানুয়ারিতে দেশে আসবে, তখন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে।’
ছেলের বাড়িতে গিয়ে তাকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া গেছে। একই কারনে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ সময় তার বাবাকেও পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে অপুর মা চাঁদপুর টাইমসকে বলেন,‘অপু এই মেয়ের সাথে দীর্ঘদিন প্রেম করেছে এবং তারা বিয়েও করেছে। এটা নিয়ে সমস্যাও হয়েছে, তাই ছেলে বিষ খাওয়ার চেষ্টাও করেছে। দুটি মুখের দিকে দুই পরিবারের উচিত এই বিয়ে মেনে নেওয়া।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য জাকির বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি জানি না।’

এ.এস.আই মহিউদ্দিন বলেন, ‘মারিয়ার মা থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। মেয়েকে পাওয়ার পর তিনি অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন।

ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এ বিষয়ে বলেন, ‘বিষয়টি আমি জানি না। এটা এ.এস.আই মহিউদ্দিন জানেন। উনি এটা ডিল করছেন।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ছেলে- মেয়ের অভিভাবক যদি চায় তাহলে আমরা সমাজ কল্যান অধিদপ্তরের মাধ্যমে তাদের জন্য কাউন্সিলিং এর ব্যবস্থা করবো।’

প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ২৭ নভেম্বর ২০২২