প্রেমিকার কান্না, অনুনয় কোনো কিছুই থামাতে পারেনি কলেজছাত্র সৌরভকে। সে ভিডিও কলে প্রেমিকার সামনে আত্মহত্যা করেছে বলে এলাকাবাসী ও থানা পুলিশ জানিয়েছে।
৪ জানুয়ারি সোমবার রাত ১০টার দিকে ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার গোয়ালভর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সৌরভ উপজেলার গোয়ালভর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে। ২০২০ সালে শ্রীপুর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় সে।
নিহতের পরিবার, বন্ধুবান্ধব, এলাকাবাসী ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাতে প্রেমিকার সঙ্গে ফেসবুক মেসেঞ্জারে কথা বলছিল সৌরভ। হঠাৎ তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। ফোন রেখে দেয় সৌরভ। বার বার ফোন করতে থাকে ওই ছাত্রী। কিছু সময় পরই প্রেমিকের ফোনটি বেজে ওঠে। এবার ভিডিও কল। ফোন রিসিভ করেই ছাত্রী দেখতে পায়, সিলিং ফ্যানের সঙ্গে দড়ি বেঁধে গলায় দড়ি পেঁচিয়ে খাটের ওপর একটি প্লাস্টিকের মোড়ায় দাঁড়িয়ে আছে সৌরভ।
এসময় ফোনে প্রেমিকার কাছে শেষবারের মতো ক্ষমা চেয়ে এবং বিদায় নিয়ে আত্মহত্যার কথা জানায় সৌরভ। প্রেমিকা কলেজছাত্রী ফোনে কান্না করে, অনুনয় করে। আর ওয়াদা করে সারা জীবন সৌরভের কথা মতো চলার। কিন্তু তাতে মন গলেনি সৌরভের। সে প্রেমিকাকে আত্মহত্যার কথা বলে পায়ের নীচের মোড়াটি সরিয়ে দেয়। সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলতে থাকে সৌরভের দেহ। কোনো উপায় না পেয়ে তার চাচাতো ভাই জয় ও প্রেমিকের বন্ধুদের ফোন করে ঘটনা জানায় ছাত্রী।
এরপর সৌরভের বাড়ির লোকজন ও বন্ধুবান্ধব রুমের দরজা ভেঙে সৌরভের নিথর দেহ সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলতে দেখে। রাত ৩টার দিকে পাগলা থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
সৌরভের বন্ধুরা জানিয়েছেন, বেশ কয়েক মাস আগে কাওরাইদ-গয়েশপুর কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আয়েশার সঙ্গে সৌরভের কথা হয়। তখন থেকে তাদের সম্পর্ক। এরপর রোজ দীর্ঘ সময় তারা ফোনে কথা বলতে থাকে, ভিডিও চ্যাট করতে থাকে। প্রেমিকার সঙ্গে অভিমান করে সে আত্মহত্যা করতে পারে।
পাগলা থানার ওসি মো. শাহিনুজ্জামান খান জানান, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের হয়েছে।
বার্তা কক্ষ,৬ জানুয়ারি ২০২১