Home / সারাদেশ / প্রতি পিস ডিম ১২ টাকার বেশি হলেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধের হুঁশিয়ারি
ডিম

প্রতি পিস ডিম ১২ টাকার বেশি হলেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধের হুঁশিয়ারি

প্রতি পিস ডিম ১২ টাকার বেশি দামে বিক্রি করলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

সোমবার (১৪ আগস্ট) ডিমের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে ডিম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান (ফার্ম ও কর্পোরেট), এজেন্ট, ডিলার ও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যদের অংশগ্রহণে মতবিনিময় সভায় এ ঘোষণা দেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। একই সঙ্গে আগমী ১৬ আগস্ট থেকে সর্বস্তরে অভিযানেরও ঘোষণা দিয়েছে দপ্তরটি।

এএইচএম সফিকুজ্জামান জানিয়েছেন, ডিমের বাজারে অস্থিরতা তৈরি করে ব্যবসায়ীরা ভোক্তার পকেট থেকে অতিরিক্ত মুনাফা করছেন। সব ধরনের মানুষের উপরই পড়ছে এর প্রভাব। এ কারণে বাজার অভিযানে গিয়ে পাকা রসিদ না পেলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হবে।

ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, এতদিন আমাদের কাছে ডিম উৎপাদনের সঠিক খরচ ছিল না। প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে আমরা সেটি জেনেছি। খুচরায় কত দাম হবে সেটিও বলা হয়েছে। সুতরাং আমরা কেউ একটা ডিমের দাম ১২ টাকার বেশি নিলে তাদের বিরুদ্ধে শুধু জরিমানা নয়, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ডিম এমন একটা পণ্য যা সারাদেশের সব শ্রেণির মানুষের উপরেই প্রভাব ফেলে। গত বছর ডিমের বাজারে অস্থিরতার সময় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল রসিদ ছাড়া ডিম ক্রয়-বিক্রয় না করতে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা সেটা মানে নাই। এবারও আমরা বাজার মনিটরিং এ যাওয়ার পর একই অবস্থা দেখতে পাই। কিন্তু আমরা রসিদ ছাড়া কেউ বেচাবিক্রি করলে তাদের বিরুদ্ধে জরিমানাসহ কঠোর ব্যবস্থা নেব। আর কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

এদিকে সভায় উৎপাদনকারী ও ব্যবসায়ীরা ভোক্তা অধিদপ্তরের কাছে জানান, সাড়ে দশ টাকা উৎপাদন খরচ হলে সেটি খুচরায় ১২ টাকা বিক্রিতে সমস্যা তৈরি হবে। এখানে চার-পাঁচটি হাত বদল হয়, কে কত লাভ করবে সেটি বলে দেওয়া উচিত।

পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, ডিমের উৎপাদন খরচ ১০.৮০-১০.৮৫ টাকা। সুতরাং খুচরা মূল্য ১৩ টাকা হওয়া উচিত।

তেজগাঁও বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি হাজী মো. আমান উল্লাহ জানান, ডিমের দাম ১৩ টাকার কমে নামলে সেটি খামারিদের লোকসানে ফেলবে।

অনুষ্ঠানে ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, কাজী, প্যারাগনের মতো বড় প্রতিষ্ঠান সাড়ে ১০ টাকায় ডিম উৎপাদন করে সর্বোচ্চ ১১.৪০ টাকায় বিক্রি করেছে। আমরা কি যৌক্তিক উপায়ে ১০ শতাংশও লাভ করতে পারবো না? ডিমের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য করে উৎপাদনের প্ল্যানিং করা দরকার। চাহিদা অনুযায়ী জেলা বা উপজেলা অনুযায়ী ম্যপিং করে যখন যেখানে উৎপাদন করা দরকার, যখন উৎপাদন কমিয়ে আনা দরকার সেই ব্যবস্থা করতে হবে। এ বিষয়ে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।

ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, কে কত লাভ করবে সেই নেগোসিয়েশন করতে হলে উৎপাদনকারী, ব্যবসায়ীদের প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে নেগোশিয়েশন করতে হবে, সেই সুযোগ রয়েছে। এখন আমরা ১২ টাকা ধরেই বাজারে অভিযান পরিচালনা করবো।

এর আগে রবিবার প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম ডিমের উৎপাদন খরচ ১০.৫০ টাকা বলে উল্লেখ করেন। একই সঙ্গে খুচরা দাম কোনোভাবেই ১২ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয় বলেও জানান।

এই ঘোষণার পর থেকে খুচরা বাজারে ডিমের দামে প্রভাব না পড়লেও পাইকারি বাজারে দাম কমতে শুরু করেছে। পাইকারিতে যে ডিম ১২.৪০ পয়সায় বিক্রি হয়েছে সেটি রোববার রাতে ১২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সোমবার রাতে এটি ১২ টাকার নিচে নেমে আসবে বলে জানান পাইকারি বিক্রেতারা।

টাইমস ডেস্ক/ ১৪ আগস্ট ২০২৩