চাঁদপুর টাইমস নিউজ ডেস্ক :
পুলিশ ফাঁড়ি থেকে অপমানে কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে এলেন এক নারী। এসে গ্রামবাসীদের যা জানালেন তা মোটেই মেনে নেওয়ার মতো নয়। ওই ফাঁড়ির ওসি নিজের ঘরে ডেকে নিয়ে গিয়ে কুপ্রস্তাব দেন বলে জানান ওই নারী। আর যায় কোথা! ভেঙে গ্রামবাসী পড়েন ফাঁড়িতে।
তারপর যা হওয়ার, হলো তাই। জুতাপেটার শিকারও হতে হলো ওসিকে। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের মালদহের ভালুকায়। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
খবরে বলা হয়, ওই নারীকে অপমানের ঘটনায় ফাঁড়িতে চড়াও হয়ে ওসি সনৎ বিশ্বাসকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন ভালুকার ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। নিজের চেয়ারে বসে ওসি তা অস্বীকার করে পাল্টা দাবি করেন, সম্পূর্ণ মিথ্যে কথা বলছেন ওই নারী। আর তাতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। ক্ষিপ্ত ওই নারী সপাটে চড় কষিয়ে দেন ওসি’র গালে।
বেগতিক দেখে ফাঁড়ির অন্য পুলিশ কর্মীরা সনৎবাবুকে অন্য একটি ঘরে ঢুকিয়ে আড়াল করার চেষ্টা করতে এবার নিজের পা থেকে চটি খুলে ওসি’র গায়ে দু-এক ঘা বসিয়ে দেন ওই নারী।
কী কারণে ওই নারী এমন মারমুখী হয়ে উঠলেন, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে জেলা পুলিশের কর্তারা। উর্ধ্বতন দায়িত্বশীল একজন পুলিশ কর্মকর্ত বলেন, ‘কোন পরিস্থিতিতে ফাঁড়িতে ঢুকে পুলিশকর্মীকে মারধর করল জনতা তা খতিয়ে দেখা হবে।’
তবে, ভালুকা ফাঁড়ির ওসি সনৎ বিশ্বাস অবশ্য ওই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘আমি কোনও খারপ আচরণ করিনি। আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।’
ঘটনাটি জানাজানি হতেই স্থানীয় সাংসদ কংগ্রেস নেতা মৌসম বেনজির নূরের প্রশ্ন, ‘পুলিশ-প্রশাসন বলে এ রাজ্যে কিছু আছে বলে মনে হয় না। না হলে থানার মধ্যেই পুলিশের কুপ্রস্তাব দেওয়ার ঘটনা কেউ শুনেছে?” আরেকজন ব্লক বিধায়ক বলেন, ‘জুতোপেটা করাটা নিন্দনীয়। তবে এটাও মনে রাখতে হবে, এক জন নারী কতটা অপমানিত হলে এমন বেপরোয়া কাজ করতে পারেন।’ তারা সকলেই ওই ওসিকে বরখাস্ত করার দাবি করেন।
ওই নারীর অভিযোগ, পারিবরিক একটি মামলার ওসি’র সঙ্গে দেখা করতে গেলে স্বামী বাইরে বসিয়ে তাকে ঘরে ডেকে বলেন, ‘আমি জানি তুমি স্বামীর সঙ্গে থাক না। অন্য এক জনের সঙ্গে তোমার সম্পর্ক আছে তা-ও জানি। তা আমার সঙ্গে থাকতে আপত্তি আছে!’ এ কথা শোনার পরে অপমানে কাঁপতে থাকেন। তিনি বলেন, ‘এই সময়ে ওসি আমার হাত ধরে কাছে টানার চেষ্টা করেন। আমি কোনওরকমে হাত ছাড়িয়ে বেরিয়ে আসি।’
বছর ত্রিশের ওই নারীর স্বামী কাটিহারে একটি দোকানে কাজ করেন। দিন কয়েক হল গ্রামে ফিরেছেন। তিনি বলেন, ’ওসি’র ঘর থেকে স্ত্রী কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে এল দেখে আমি বার বার জিজ্ঞেস করতে থাকি, কী হয়েছে, রাগে অপমানে ও কাঁপছিল। কথার উত্তর দিতে পারেনি।’
পরে গ্রামে ফিরে নারীটি সে কথা জানাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ভালুকা। বিক্ষোভ ভেঙে পড়ে ওই ফাঁড়িতে। আর তারপরই ঘটে অকান্ড। সূত্র: আনন্দবাজার।
আপডেট : বাংলাদেশ সময় : ০৬:১৬ অপরাহ্ন, ২৫ আষাঢ় ১৪২২ বঙ্গাব্দ, শুক্রবার ১০ জুলাই ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ
চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/এমআরআর/২০১৫
চাঁদপুর টাইমস ডট কম–এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি