Home / জাতীয় / রাজনীতি / সংসদ নির্বাচনে সীমানা পুননির্ধারণে নতুন আইন
সংসদ নির্বাচনে সীমানা পুননির্ধারণে নতুন আইন

সংসদ নির্বাচনে সীমানা পুননির্ধারণে নতুন আইন

ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সীমানা বৃদ্ধি ও জনসংখ্য দ্রুত বৃদ্ধির কারণে আগমী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকায় সংসদীয় আসন বাড়বে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন সূত্র। ভোটার সংখ্যার সমতা এনে সংসদীয় আসনের সীমানা পুননির্ধারণ করতে নতুন আইন করছে নির্বাচন কমিশন। এ লক্ষ্যে বিদ্যমান ১৯৭৬ সালের অধ্যাদেশটি বাদ দিয়ে নতুন আইনের খসড়া করছে নির্বাচন আয়োজনকারী সাংবিধানিক সংস্থাটি।

সূত্র জানায়, সরকারে পক্ষ থেকে আগের সীমানা অপরিবর্তীত রেখে নির্বাচন দেওয়ার প্রস্তাব এসেছে। কিন্তু বিএনপিসহ অধিকাংশ দল নতুন করে সীমানা নির্ধারনের দাবি করে। এরই প্রেক্ষিতে ইসি আইনে পরিবর্তন আনছে।

যা থাকছে সীমান আইনে-

সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত কাজের পরিধি:

(১) কমিশন, সংসদের আসনে নির্বাচনের উদ্দেশ্যে, দেশকে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৫ এর দফা (২) এর অধীন নির্বাচিতব্য সদস্য সংখ্যার সমান সংখ্যক স্বতন্ত্র আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকায় বিভক্ত করবে।

(২) নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত কাজ দুই পর্যায়ে নিষ্পন্ন করা যাবে:

(ক) সংসদের আসনসমূহ ভোটার সংখ্যা এবং জনসংখ্যা ভোটার ভিত্তিতে প্রথমে জেলা পর্যায়ে বণ্টন এবং

(খ) উক্তরূপ বণ্টনের পর জেলাসমূহে বরাদ্দকৃত সংসদের আসনসমূহের সীমানা পুনঃনির্ধারণ।

নির্বাচনী এলাকার নতুন করে সীমানা নির্ধারণ:

কমিশনকে নতুন করে নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ করতে হবে-

ক) সর্বশেষ আদমশুমারি প্রতিবেদনে জনসংখ্যা বিষয়ে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে উক্ত প্রতিবেদন প্রকাশের তারিখ হইতে অনূর্ধ্ব ১২ মাসের মধ্যে সীমানা পুনঃনির্ধারণ-সংক্রান্ত কাজ সম্পন্ন করতে হবে;

খ) সংবিধানের ১২৩(৩) অনুচ্ছেদের বিধান অনুসারে জাতীয় সংসদ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত সময়ের পূর্বে হালনাগাদকৃত ভোটার তালিকা প্রকাশের পর; এবং

গ) কমিশন উপযুক্ত বিবেচনা করিলে লিখিত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে প্রতিটি জাতীয় সংসদ সাধারণ নির্বাচনের পূর্বে।

তবে শর্ত থাকে যে, সর্বশেষ আদমশুমারি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সীমানা পুনঃনির্ধারিত হইবার পর হইতে পরবর্তী আদমশুমারি প্রতিবেদন প্রাপ্তির মধ্যবর্তী সময়কালে বা ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে চূড়ান্তভাবে প্রকাশের পর কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজন হইলে উহা সর্বশেষ নির্ধারিত সীমানার ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হইবে। এ ক্ষেত্রে কমিশন নির্বাচনী এলাকার আয়তন, অবস্থান হুবহু ঠিক রেখে নির্বাচনী এলাকার শুধুমাত্র প্রশাসনিক পরিবর্তনগুলি অন্তর্ভুক্ত করে বিজ্ঞপ্তি আকারে সরকারি গেজেটে প্রকাশ করবে।

জেলা পর্যায়ে আসন বণ্টন:

জেলা পর্যায়ে আসন বণ্টন-সংক্রান্ত বিধান বিধি দ্বারা নির্ধারিত হবে। তবে প্রতিটি জেলায় ন্যূনপক্ষে একটি আসন নির্ধারণ করতে হবে। প্রতিটি সিটি করপোরেশনে ন্যূনপক্ষে একটি আসন নির্ধারণ করা যাবে এবং বিধি দ্বারা সিটি করোপরেশনের আসন সংখ্যা নির্ধারিত করে দেয়া হইবে।

বণ্টনকৃত আসনসমূহের সীমানা পুনঃনির্ধারণ:

১) সর্বশেষ আদমশুমারি প্রতিবেদনে উল্লেখিত জনসংখ্যা, ভোটার সংখ্যা ও মোট আয়তনের ভিত্তিতে নির্ধারিত পদ্ধতিতে জেলার জন্য বণ্টনকৃত আসনসমূহের সীমানা পুনঃনির্ধারণ করা হবে।

২) সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন প্রশাসনিক ইউনিটের অখণ্ডতা, আয়তন, প্রশাসনিক সুবিধা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা যতদূর সম্ভব অক্ষুণ্ন রাখার বিষয় বিশেষভাবে বিবেচনা করতে হবে। তবে জনসংখ্যা এবং ভোটার সংখ্যার সমন্বয়ের স্বার্থে ক্ষেত্রমত, সর্বনিম্ন প্রশাসনিক ইউনিটকে যে কোনো নির্বাচনী এলাকায় সংযুক্ত করা যাইবে। তবে যতদূর সম্ভব উপজেলার প্রশাসনিক অখণ্ডতা অক্ষুণ্ন রেখে নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ করতে হবে।

আসনসমূহের সীমানা পুনঃনির্ধারণ ও প্রকাশ:

১) কমিশন আসনসমূহের সীমানা নির্ধারিত পদ্ধতিতে পুনঃনির্ধারণের পর প্রতিটি আসনের পুনঃনির্ধারিত সীমানা উল্লেখপূর্বক সরকারি গেজেটে একটি খসড়া তালিকা প্রকাশ করিয়া সংশ্লিষ্ট আসনসমূহের এলাকায় বসবাসকারী জনগণের ও ভোটারের নিকট হইতে লিখিত আপত্তি ও মতামত কমিশনে পেশ করিবার আহ্বান জানাবে।

২) কমিশন প্রাপ্ত মতামত ও আপত্তিসমূহ বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিষ্পত্তি করবে।

পুনঃনির্ধারিত আসনসমূহের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ:

কমিশন প্রাপ্ত আপত্তিসমূহের ওপর নির্ধারিত পদ্ধতিতে শুনানি গ্রহণ করবে। শুনানি শেষে উপস্থাপিত বিষয় বিবেচনা করিয়া প্রাথমিক তালিকায় উল্লেখিত আসনসমূহের সীমানায় প্রয়োজনীয় সংশোধন আনয়নপূর্বক বিবেচনাধীন প্রতিটি আসনের সীমানা উল্লেখপূর্বক সরকারি গেজেটে একটি চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবে।

সীমানা পুনঃনির্ধারণ সংক্রান্ত সিদ্ধান্তসমূহের বৈধতা:

এই আইনের অধীন কোনো নির্বাচনী এলাকার আসন বণ্টন কিংবা সীমানা নির্ধারণ বা কমিশন কর্তৃক বা কমিশনের কর্তৃত্বাধীনে গৃহীত কোনো কর্মপন্থা বা কৃত কোনো কাজকর্মের বৈধতা সম্বন্ধে কোনো আদালত বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের নিকট কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত করা যাবে না।

বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা:

এই আইনের উদ্দেশ্যে পূরণকল্পে কমিশন, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করতে পারবে।

নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১১:১০ এ.এম, ০২ অক্টোবর ২০১৭,সোমবার
ইব্রাহীম জুয়েল

Leave a Reply