রাজশাহীতে পছন্দের ছেলের সঙ্গে পালিয়ে বিয়ে করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক তরুণী। সোমবার (৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় প্রেমিকের সঙ্গে ঘর ছেড়ে রাতেই বিয়ে করেন তিনি। পরে মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) সকালে স্বামীকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন।
তরুণী জানান, তিনি স্বেচ্ছায় বাড়ি থেকে পালিয়ে এসে পছন্দের মানুষকে বিয়ে করেছেন। কেউ তাকে জোর করে বাড়ি থেকে আনেনি।
ওই তরুণীর নাম ফাতেমা তাবাসসুম খান (২১)। বাড়ি রাজশাহী নগরীর রামচন্দ্রপুর বৌ বাজার এলাকায়। তার স্বামীর নাম ফজলে রাব্বী (২৬)। তার বাড়ি রামচন্দ্রপুর বৌ বাজার এলাকায়। রাব্বী ব্যবসা করেন। মঙ্গলবার সকালে নগরীর আসাম কলোনী এলাকায় সংবাদ সম্মেলন ডাকেন এই দম্পতি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চার বছর ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক। তরুণীর পরিবার কিছুতেই তার পছন্দের ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি ছিল না। সম্পর্ক ভাঙতে মেয়েকে সৌদি আরবে নিয়ে যান বাবা। সেখানে তরুণীর অমতে এক প্রবাসীর সঙ্গে বিয়েও দেওয়া হয়। কিন্তু মেয়েটি সংসার করতে পারেননি। বিয়েবিচ্ছেদ ঘটিয়ে দেশে এসেছেন। এরপর সোমবার সন্ধ্যায় পুরোনো প্রেমিকের সঙ্গেই ঘর ছেড়েছেন। রাতেই রাজশাহী শহরের একটি কাজি অফিসে বিয়ে করেন তারা।
ফাতেমা তাবাসসুম বলেন, ‘স্বেচ্ছায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে পছন্দের মানুষকে বিয়ে করেছি। কেউ জোর করে আমাকে বাড়ি থেকে আনেনি। আমি স্বেচ্ছায় বাড়ি থেকে এসেছি। এখন শুনছি আমার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অপহরণের মামলা করা হচ্ছে। আমি জানিয়ে দিচ্ছি, আমাকে কেউ অপহরণ করেনি।’
তার স্বামী ফজলে রাব্বী বলেন, ‘ফাতেমাকে বাড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন করা হতো। তাই আমার কয়েকজন বন্ধু সোমবার সন্ধ্যায় ফাতেমাকে বাড়ি থেকে আনে। তারপর রাতেই বিয়ে করেছি।’
ফজলে রাব্বীর ভাষ্যমতে, চার বছর ধরে তাদের প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। কিন্তু ফাতেমার বাবা-মা বিয়ে দিতে চাননি। মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করা হয়েছে। এতেও প্রেমের সম্পর্ক ভাঙতে না পেরে ২০১৯ সালের দিকে ফাতেমাকে সৌদি আরবে নিয়ে জোর করে এক প্রবাসীর সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। ফাতেমা সেখানে সংসার করতে পারেননি। দেড় বছর পর ২০২১ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন। এরপর থেকেই বাড়িতে তার ওপর নির্যাতন চলছিল।
রাব্বী বলেন, ‘এখন ফাতেমার পরিবার থেকে হয়তো অপহরণের মামলা করা হবে। পুলিশ আমাকে গ্রেফতার করবে। জেল খাটতে হবে। এর সবই জানি। সবকিছুর জন্য মানসিক প্রস্তুতি রাখছি। আর আস্থা রাখছি ফাতেমার ওপর। মামলা হলে ফাতেমা আদালতে গিয়ে বলবে যে কেউ তাকে অপহরণ করে আনেনি। প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে সে স্বেচ্ছায় বাড়ি থেকে এসে বিয়ে করেছে।’
এ বিষয়ে নগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, রাতেই ফাতেমার পরিবার বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছে। তারা অপহরণের অভিযোগ আনছেন। মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মামলা দিতে এলে নিতে হবে।
তিনি বলেন, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে নিজের ইচ্ছায় যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। সবকিছু আইনগতভাবেই দেখা হবে।
বার্তা কক্ষ, ১০ জানুয়ারি ২০২৩