প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনি পরীক্ষা আগামি ১৭ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে। এ পরীক্ষায় এবার ২৫ লাখ ৫৩ হাজার ২৬৭ জন শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এবার প্রাথমিকে শিক্ষার্থী সংখ্যা ২ লাখ ২৩ হাজার ৬১৫ জন কমেছে। অন্যদিকে ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনি পরীক্ষায় এবার অংশ নিচ্ছে ৩ লাখ ৫০ হাজার ৩৭১ জন শিক্ষার্থী। গতবারের তুলনায় এবার ৩০ হাজার ৯৮৩ জন বেশি অংশ নিচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন।
তিনি জানান, গত বছর ২০১৮ সালে প্রাথমিক সমাপনি শিক্ষা পরীক্ষায় ২৭ লাখ ৭৬ হাজার ৮৮২ জন অংশ নিয়েছিল। এর মধ্যে ছাত্র ১১ লাখ ৮১ হাজার ৩০০ জন ও ছাত্রী ১৩ লাখ ৭১ হাজার ৯৬৭ জন। যা এবারের চেয়ে ২ লাখ ২৩ হাজার ৬১৫ জন কম।
মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের জন্য ইবতেদাযি শিক্ষা সমাপনি পরীক্ষায় এবার ৩ লাখ ৫০ হাজার ৩৭১ জন শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। এরমধ্যে ছাত্র ১ লাখ ৮৭ হাজার ৮২ এবং ছাত্রী ১ লাখ ৬৩ হাজার ২৮৯ জন। গত বছর ২০১৮ সালের চেয়ে ৩০ হাজার ৯৮৩ জন বেড়েছে।
সাধারণ মাধ্যমের চেয়ে মাদ্রাসায় এবার পরীক্ষার্থী বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হওয়ায় দেশে জনসংখ্যা কমছে।’ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব মো.আকরাম আল হোসেন বলেন,‘সার্বিক বিবেচনায় প্রাথমিক শিক্ষায় ঝরে পড়ার হার কমেছে। তবে কেন মাদ্রাসা শিক্ষায় বেড়েছে,তার সদুত্তর সচিবও দিতে পারেননি।
সমাপনি পরীক্ষায় এ বছর ছাত্রের চেয়ে ছাত্রীর সংখ্যা ১ লাখ ৬৬ হাজার ৮৭৪ জন বেশি। এছাড়া এবার প্রাথমিকে ৩ হাজার ৩৪৭ জন এবং ইবতেদায়িতে ২৩৬ জন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীও পরীক্ষায় বসবে।
প্রাথমিকে পরীক্ষার্থী প্রতি বছর কমছে জানিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আকরাম-আল-হোসেন বলেন, ‘প্রাথমিকে ২০১৫ সালে সবচেয়ে বেশি পরীক্ষার্থী ছিল ২৯ লাখ ৫০ হাজার, তার পর থেকে কমা শুরু হয়েছে।
২০১৬ সালে ২৯ লাখ ৩৪ হাজার ৮৭ জন, ২০১৭ সালে ২৮ লাখ ৬ হাজার ৯৬ জন এবং ২০১৮ সালে ২৭ লাখ ৭৭ হাজার- প্রত্যেক বছরে কমছে। তার মানে এই নয় যে ড্রপ আউট হচ্ছে, ড্রপ আউট মাত্র ১৮ দশমিক ৬ শতাংশ, ড্রপ আউট আরও কমানো হয়েছে।
সচিব বলেন,‘ ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে ১৪টি জেলায় যে স্কুলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা খুব দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হবে। বইপত্র যাদের নষ্ট হয়েছে তা দিয়ে দেয়া হবে। প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন,‘পরীক্ষার খাতা দেখায় স্বচ্ছতা আনতে এবার এক উপজেলার খাতা অন্য উপজেলায় মূল্যায়ন করা হবে। ’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়,‘সারা দেশে ৭ হাজার ৪৭০টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। দেশের অভ্যন্তরে ৭ হাজার ৪৫৮টি এবং ৮টি দেশে ১২টি কেন্দ্র রয়েছে। আর দেশের বাইরে সৌদি আরবে চারটি,সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুইটি এবং বাহরাইন,ওমান, কুয়েত, লিবিয়া, গ্রিস, ও কাতারে একটি করে কেন্দ্র রয়েছে। বিদেশের কেন্দ্রগুলোতে পরীক্ষার্থী সংখ্যা ৬১৫ জন, এরমধ্যে ২৮৯ জন ও ছাত্রী ৩২৬ জন।
পরীক্ষার সূচি
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীতে ১৭ নভেম্বর ইংরেজি, ১৮ নভেম্বর বাংলা,১৯ নভেম্বর বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, ২০ নভেম্বর প্রাথমিক বিজ্ঞান,২১ নভেম্বর ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা এবং ২৪ নভেম্বর গণিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনিতে ১৭ নভেম্বর ইংরেজি, ১৮ নভেম্বর বাংলা, ১৯ নভেম্বর বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় এবং বিজ্ঞান, ২০ নভেম্বর আরবি, ২১ নভেম্বর কুরআন মাজিদ ও তাজবিদ এবং ২৪ নভেম্বর গণিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
পরীক্ষা প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০ টায় শুরু হয়ে দুপুর ১টায় শেষ হবে। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় বরাদ্দ থাকবে। ছয়টি বিষয়ের প্রতিটিতে ১০০ করে ৬০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে।
বার্তাা কক্ষ,১৫ নভেম্বর ২০১৯