Home / উপজেলা সংবাদ / কচুয়া / থামছেনা নিহতদের পরিবারের আহাজারি, সাদ্দাম ও রিফাত সদ্য বিবাহিত
পরিবারের
সড়কে নিহত সাদ্দামের শিশু আরিয়ানকে কোলে নিয়ে মা ও বোনের আহাজারি

থামছেনা নিহতদের পরিবারের আহাজারি, সাদ্দাম ও রিফাত সদ্য বিবাহিত

চাঁদপুরের কচুয়া-হাজীগঞ্জ-গৌরিপুর সড়কের কড়ইয়া বিশ্বরোড সংলগ্ন এলাকায় বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে বিআরসিটি বাস ও অটোসিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষে তিন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। নিহতরা হলেন,উপজেলার দোয়াটি গ্রামের উর্মি মজুমদার উমা (২৪) ,একই উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের আব্দুল মান্নান মজুমদারের ছেলে সাকিবুল হাসান সাদ্দাম (২৪) ও কোয়া গ্রামের মফিজুল ইসলামের ছেলে মাহবুবুল ইসলাম রিফাত সরকার (২৩)।

পরিবারের

নিহত তিন শিক্ষার্থী উর্মি,রিফাত,সাদ্দাম

নিহত উর্মি মজুমদার উমা ও সাকিবুল হাসান সাদ্দাম কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের মাস্টার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ও রিফাত সরকার চাঁদপুর সরকারি কলেজের অর্নাস ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তারা উভয়ে পরীক্ষা দেয়ার জন্য কচুয়া থেকে সিএনজি যোগে হাজীগঞ্জে বাসে উঠার জন্য যাচ্ছিল। এসময় ঢাকাগামী বিআরটিসি বাস বেপরোয়া ভাবে ওই সিএনজিকে চাপা দেয়।

আরও পড়ুন… কচুয়ায় শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হলো না উর্মির

উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের আব্দুল মান্নান মজুমদারের ছেলে সাকিবুল হাসান সাদ্দামও লেখাপড়া শেষ করে সরকারি চাকুরি করার স্বপ্ন দেখছিলেন। তার ভাই স্কুল শিক্ষক ইসমাইল হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে জানান, আমরা ৫ ভাই ২ বোন। ছোট ভাই সাকিবুল হাসান সাদ্দাম একজন স্বপ্ন বিলাসী মানুষ ছিলেন। প্রায় দেড় বছর আগে একই গ্রামের আসমা আক্তারের সাথে দু’পরিবারের ইচ্ছা বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের গৃহে আরিয়ান মজুমদার নামের ৩ মাসের একটি পুত্র সন্তান জম্ম হয়। বর্তমানে তার স্ত্রী আসমা আক্তার স্বামীকে হারিয়ে অবুঝ সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে বার বার কান্নায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন, তার এবং পরিবারের সদস্যদের কান্না থামাতে পারছেনা কেউ।

অপর নিহত হওয়া কোয়া গ্রামের মফিজুল ইসলামের ছেলে মাহবুবুল ইসলাম রিফাত সরকারও সদ্য বিবাহিত ছিলেন। প্রায় এক বছর আগে একই উপজেলার সহদেবপুর গ্রামের রিয়া আক্তার নামে এক যুবতীর সাথে বিয়ে হয়।

চাঁদপুর সরকারি কলেজের অর্নাস ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী মাহবুবুল ইসলাম রিফাত লেখাপড়ার পাশাপাশি কচুয়া সাব-রের্জিষ্টার অফিসে নকল নবীশ হিসেবে পাট টাইম কাজ করতেন। তার বোন শামিমা আক্তার জানান,আমরা ৩ ভাই ১ বোন। ভাই বোনদের মাহবুবুল ইসলাম রিফাত তৃতীয় ছিলো। অভাবি সংসারে লেখাপড়া করে ভবিষ্যতে বিবিএস পরীক্ষার দিয়ে প্রশাসনিক ক্যাডার পদে চাকুরী করার ইচ্ছা ছিলো তার।

পরিবারের

রিফাতের নিহতের সংবাদ হাতে নিয়ে বাবা ও মায়ের আহাজারি

মাহবুবুল ইসলাম রিফাতের মা হালিমা বেগম বলেন,আমার স্বামী বৃদ্ধ হওয়ায় ছেলে রিফাত কর্ম করে সংসার চালাতেন। এখন আমার সংসারের হাল কে ধরবে। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।

মাহবুবুল ইসলাম রিফাতের ভগ্নীপতি মো.শাহীন চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ঘটনার দু’দিন পেরিয়ে গেলেও থানা পুলিশ ছাড়া কেউ আমাদের খবর নেয়নি। এ সড়ক দুর্ঘটনার বিআরসিটি বাস চালকের দৃষ্টান্ত শাস্তি দাবি জানান নিহতের পরিবার।

প্রতিবেদক: জিসান আহমেদ নান্নু, ২৬ নভেম্বর ২০২১