চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার চাঞ্জল্যকর হাবিব মৃধা হত্যাকাণ্ডের ঘটনার ব্যাপারে হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত মো: রুবেল আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহীদ হোসেন। তিনি জানান, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে পরকিয়ার ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে ঘাতক রুবেল স্বীকার করেছে।
স্বীকারোক্তিতে রুবেল জানায়, প্রবাসীর স্ত্রী তানিয়া আক্তার শিউলীর সাথে একাধিক জনের সাথে পরকিয়া প্রেমের সর্ম্পকের জের ধরে ক্ষিপ্ত হয়ে লাইলনের দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশের পরিচয় ঢাকতে তার মুখমণ্ডলটি খড় দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার পর লাশটি ফেলে দেয়া হয় বিলের পানিতে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদগঞ্জ থানার এসআই রুবেল ফরাজী জানান, ১১ আগষ্ট বুধবার বিকালে চাঁদপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুল হাসান চৌধুরীর আদালতে হাবিব মৃধা হত্যায় জড়িত প্রধান অভিযুক্ত মো: রুবেলকে হাজির করা হয়। এসময় সে আদালতের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের কারণ ও হত্যার ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন। এর আগে থানা পুলিশের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে যে তথ্য দিয়েছে, তার সবটুকুই আদালতের কাছে স্বীকার করে সে।

তিনি জানান, আদালতের সামনে দাড়িয়ে ঘাতক রুবেল সাবলীল ভাবেই গৃহবধু শিউল আক্তারের সাথে ত্রিভুজ পরকিয়া প্রেমের জের ধরে ক্ষিপ্ত হয়ে সেসহ অন্যরা হাবিব মৃধাকে লাইলনের দড়ি পেঁচিয়ে শ^াসরোধ করে হত্যা করে। পরে হাবিবকে যাতে কেউ চিনতে না পারে সেইজন্য খড় দিয়ে লাশের মুখমণ্ডল জ¦ালিয়ে দেয় তারা। পরে হাবিবের নিথর দেহ ঘটনাস্থলের পাশের গুপ্তের বিলে ফেলে দেয়।
আরও পড়ুন… প্রবাসীর স্ত্রীর ত্রিভুজ পরকীয়া প্রেমের বলি হাবিব
এদিকে ১২ আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ হাবিব হত্যার ঘাতক মো: রুবেলের আদালতে স্বীকারোক্তি মোতাবেক গৃহবধু শিউলী আক্তারের বাড়ির অদুরে সরকারি খালে স্থানীয় ডুবুরি দিয়ে অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত লাইলনের দড়িটি উদ্ধার করে।
ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহীদ হোসেন জানান, মামলার অভিযুক্ত অন্যদের আটকের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ পুলিশ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তিনি জানান, ঘাতক রুবেল ২০১৪ সালে জামাল হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে হত্যাকাণ্ডের আসামি।
উল্লেখ্য, ৮ আগস্ট রোববার সন্ধ্যায় ফরিদগঞ্জ উপজেলার চর দুঃখিয়া পুর্ব ইউনিয়নের গুপ্তের বিল থেকে হাবিব মৃধার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ।
নিহত হাবিরের বড় বোন রোকেয়া বেগম জানায়, গত ৪ আগস্ট বুধবার দুপুরে হাবিব মৃধা মুঠো ফোনে কল পেয়ে চাঁদপুরস্থ তার আরেক বোন মরিয়মের বাসা থেকে বের হওয়ার পর আর ফিরে আসেনি। পরে বাড়ি থেকে এক দেড় কিলোমিটার দুরের গুপ্তের বিলে লাশ পাওয়ার সংবাদ শুনে এসে তিনি ভাইয়ের লাশ শনাক্ত করেন। পরে দুইদিন পর নিহতের ভাই আকরাম হোসেন বাবুল বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।
প্রতিবেদক: শিমুল হাছান
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur