Home / চাঁদপুর / চাঁদপুরে বর্ষা মৌসুমে নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা
নৌকা

চাঁদপুরে বর্ষা মৌসুমে নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

সড়কের দু’পাশে একের পর এক সারি সারি নৌকা সাজিয়ে রাখা হয়েছে। একটু কাছে দুরেই কয়েকজন কাঠ মিস্ত্রি দু’হাতে রামদা করে কাঠের পিট থেকে কালো এবং খসে খসে আবরণ ছেটে ফেলে মসৃন করছেন।

একই সাথে ছোট হাত কড়াতে কাঠগুলো সাইজ করে, ঠক ঠক করে কাঠের ভেতর এক এক করে পেরেক গাঁথা হচ্ছে। তার কয়েক ঘন্টায় এমন পরিশ্রমে ও কাজের মাধ্যমে কাঠের পর কাঠ সাজিয়ে তৈরি করছেন নতুন নৌকা। আর সেগুলো সাড়িবদ্ধ ভাবে সাজিয়ে রাখা হচ্ছে সড়কের পাশে। নতুন নৌকার এমন দৃশ্য যে কাউকেই মুগ্ধ করবে। চাঁদপুরে বর্ষা মৌসুমে নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা।

অন্যান্য বছরের মতো এ বছরও বর্ষার শুরু থেকে নৌকা তৈরি শুরু হয়েছে। জেলার মতলব দক্ষিণ উপজেলার বড়দিয়া, আড়ংবাজার, নাগদা এলাকায় নৌকা তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। কিছুদিনের মধ্যে শুরু হবে এসব নৌকা বিক্রি।

পদ্মা, মেঘনা, ডাকাতিয়া ও ধনাগোধা নদী বিধৌত চাঁদপুর জেলা। বর্ষা মৌসুমে নদী উপকূলীয় এলাকা ও চরাঞ্চলের মানুষের চলাচলের একমাত্র বাহন নৌকা। তাই প্রতি বর্ষা মৌসুমে মতলব উপজেলাসহ চাঁদপুরের নদী উপকূলীয় এলাকা গুলোতে নতুন নৌকা তৈরি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন নৌকা তৈরির কারিগররা।

গত কয়েক দিন ধরে মতলব পৌর এলাকার ৮নং ওয়ার্ডের বড়দিয়া, আড়ংবাজার ও এর আশ-পাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নৌকা তৈরির প্রায় ১৫টি কারখানা ও ছোট ছোট দোকান রয়েছে। অনেকেই নৌকা তৈরি করে পানিতে রেখেছেন। আবার কেউ কেউ কারখানা ও ডাঙায় রেখেছেন। আর এসব নৌকা বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৪ হাজার থেকে শুরু করে সাড়ে ৫ হাজার এবং ৬ হাজার টাকায়।

নৌকা

আড়ং বাজারের দক্ষিণ পাশের নৌকা তৈরির কারখানার মালিক মো.বাবুল গাজী জানান, তিনি দীর্ঘ ১১ বছর বর্ষা মৌসুমে নৌকা তৈরি করে বিক্রি করে আসছেন।

বাবুল গাজী জানান, যেসব এলাকায় সড়কগুলো ভালো এবং উপজেলা সড়কের সঙ্গে যোগযোগ রয়েছে তাদের চলাচলে সমস্যা হয় না। কিন্তু নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষগুলোর বর্ষায় চলাচলের একমাত্র বাহন নৌকা। এ সময় গ্রামগুলোর চারপাশে পানি থৈ থৈ করে। তাই আমরা এক মাস আগে থেকেই নৌকা তৈরি শুরু করি।

একই এলাকার আরেক কারিগর জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমরা যেসব নৌকা তৈরি করি স্থানীয়ভাবে কোষা নৌকা বলা হয়। এসব কোষা নৌকা তৈরি করতে দুইজন কারিগরের একদিন সময় লাগে। ব্যবহার হয় কড়াই ও চাম্বল কাঠ। মজুরি, কাঠসহ ব্যয় হয় সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। বিক্রি করেন ৫ থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকা। আবার অনেক সময় সাইজে ছোট হলে দামও কম হয়।

আমরা গত কয়েক বছর কয়েক’শ নৌকা বিক্রি করেছি। এখন নৌকা তৈরি করে রেখেছি, কয়েক দিনের মধ্যে বিক্রি শুরু হবে।

মতলব উপজেলার বড়দী আড়াং বাজার এলাকায় এভাবেই ছোট ছোট নৌকা তৈরি করে সড়কের পাশে সাজিয়ে রাখতে দেখা যায়। আর সেখান থেকেই যাদের প্রয়োজন তারা সুবিধামতো দাম অনুযায়ী তাদের নৌকা ক্রয় করেন।

প্রতিবেদক: কবির হোসেন মিজি, ১৩ জুলাই ২০২১