Home / চাঁদপুর / চাঁদপুর জেলা বিএনপির আহবায়কের সামনেই নেতাকর্মীদের হট্টগোল
hottoghol

চাঁদপুর জেলা বিএনপির আহবায়কের সামনেই নেতাকর্মীদের হট্টগোল

চাঁদপুর জেলা বিএনপির আহাবায়ক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের সামনে উপস্থাপনাকে কেন্দ্র করে ২ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক দাবিধার ২ নেতা ও সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি ঘটে।

শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) বিকেল ৫ টায় জে এম সেন গুপ্ত রোডস্থ মনিরা ভবনের হল রুমে ২নং ওয়ার্ড বিএনপি ও অংঙ্গ সহযোগী সংগঠনের সমন্বয় সভায় নাম উপস্থাপনা নিয়ে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, ২নং ওয়ার্ড বিএনপি ও অংঙ্গ সহযোগী সংগঠনের সমন্বয় সভার শুরুতে পৌর বিএনপির সসভাপতি আক্তার হোসেন মাঝি উপস্থিত অতিথি ও ওয়ার্ড বিএনপির নেতাকর্মীদের নাম বলার পর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি আবুল ককালাম হাওলাদার ও দিন ইসলামের নাম ঘোষনা করেন। ঘোষণার সাথে সাথে কাগজে কলমে বৈধ সাধারণ সম্পাদক মো. বাদশা মিয়া ও তার নেতা- কর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়।

অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক দাবিধার দিন ইসলাম ও তার নেতা-কর্মীরা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পরে। দীর্ঘ প্রায় ৩০ মিনিট হাতাহাতি ও চেয়ার ওলট পালট করার কারণে চলতি সভা বন্ধ হয়ে যায়। পরে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ আহ্বায়ক মানিক, যুগ্ম আহবায়কবৃন্দ, পৌর বিএনপির সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ ওয়ার্ড বিএনপি নেতৃবৃন্দ হাতাহাতি থামাতে ব্যর্থ হয়।

এক পর্যায়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়কের কঠোরতায় মাগরিবের আযানের ৫ মিনিট পূর্বে হাতাহাতি ও হট্টগোল বন্ধ হয়। পরে মাগরিবের জন্য সভা ১০ মূলতবি করে নামায শেষে সমন্বয় সভা পুনরায় শুরু হয়। ২ নং ওয়ার্ড বিএনপি ও অঙ্গ- সহযোগী সংগঠনের কয়কজন নেতা- কর্মী উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, ২০১৩ সালে পুরাণবাজার রয়েজ রোড পৌর কমিউনিটি সেন্টারে ওয়ার্ড যুবদলের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

সে সময় পৌর যুবদলের আহবায়ক আব্দুল কাদের বেপারীর সভাপতিত্বে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহবায়ক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

সভা শেষে পৌর যুবদলের আহ্বায়ক আবুল কালাম হাওলাদার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক মো. বাদশা ও দিন ইসলামকে যুগ্ম সাধারন সম্পাদকসহ ৫ সদস্য বিশিষ্ট ঘোষণা করা হয়।

২০১৫ সালে পৌরসভার নির্বাচনে জেলা বিএনপির নির্দেশ উপেক্ষা করে স্বতন্ত্র প্রার্থী সফিকুর রহমান ভূইয়ার পক্ষে কাজ করায় ২ নং ওয়ার্ড যুবদলের সাধারন সম্পাদক মো. বাদশাকে ওয়ার্ড যুবদলের কার্যক্রম থেকে লিখিতভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

এর কয়েকদিন পর সাধারণ সম্পাদকের পদটি শূন্য থাকায় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিন ইসলামকে ওই পদে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশ দেন পৌর যুবদল। গত ২ মাস আগে ২নং ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক বাদশার স্থাগিতাদেশ তুলে পূর্বের পদে বহাল করে পৌর যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক শাহনুর বেপারী শানু। যা ওই সময় কয়েকটি স্থানীয় পত্রিকায় এ সংবাদটি প্রকাশ হয়।
মাগরিবের নামায শেষে পুনরায় শুরু হওয়া সভায় ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মরণ হাওলাদার তার বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরাও পকেটের টাকা খরচ করে দল করেছি। আজকে নেতার সামনে যে ঘটনা ঘটেছে, তার জন্য দায়ী ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।’

ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তার বক্তব্যে বলেন, আমি যুবদলের জন্য অনেক কিছু করেছি। আজকে যে ঘটনা ঘটেছে তার জন্য আমি খুব কষ্ট পেয়েছি।
ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ফরিদ বেপারী বলেন, ‘আমি ৩ নং ওয়ার্ডের ভোটার ছিলাম। আপনাদেরকে ভালোবেসে ২ নং ওয়ার্ডের ভোটার হয়েছি। আজকে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা আমি কখনও প্রত্যাশা করিনি।’
জেলা বিএনপির আহবায়ক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমি কখনও বেয়াদব ও বেয়াদবি পশ্রয় দেই নি। বিএনপি একটি সু- শৃঙ্খল দল। দেশের জনগণ বিএনপিকে ভালবেসে ভোট দেয়। কারণ ভোটের সময় বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ অংগ সংগঠনের নেতা- কর্মীরা ঘরে ঘরে গিয়ে মা খালা বলে ধানের শীর্ষের জন্যে ভোট চায়। আর আওয়ামীলীগের নেতা- কর্মীরা গাল মন্দ করে নৌকার জন্য ভোট চায়।’
তিনি ২ নং ওয়ার্ড নেতা- কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমি এ ওয়ার্ডের সকল নেতৃবৃন্দকে ভালো জানি। আজকে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা আমি আশা করিনি। আগামী ফেব্রæয়ারি মাসের মধ্যে ওয়ার্ড যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি গঠনের জন্য জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক, পৌর বিএনপির সভাপতি- সাধারণ সম্পাদক, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক- যুগ্ম আহ্বায়ক, পৌর স্বেচ্ছসেবক দলের আহবায়ক -যুগ্ম আহ্বায়ক ও ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করা হয়। ঐ টিমকে তাদের সময় মত বসে কমিটিগুলো গঠনের নির্দেশ দেন এবং ওই সময় ওয়ার্ড যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কেউ উপস্থিত থাকতে পারবে না।

কমিটি গঠন না হওয়া পর্যন্ত যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কোন নেতা-কর্মী আমার সাথে মোবাইল ও সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবে না।