Home / সারাদেশ / নদীর সেতু ভেঙ্গে ৫০ গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
নদীর সেতু ভেঙ্গে ৫০ গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

নদীর সেতু ভেঙ্গে ৫০ গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার টিকারী বাজারের সেতুটি ভেঙ্গে পড়েছে। ফলে আশপাশের ৫০ গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। জরুরি প্রয়োজনে মানুষ বাঁশের সাঁকো তৈরি করে চলাচল করছেন।

অভিযোগ উঠেছে নির্মাণ কাজে অনিয়ম থাকার কারণে মাত্র ২২ বছরে সেতুটি ভেঙ্গে পড়েছে। তবে এ ঘটনায় বড় ধরনের কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

এলাকাবাসী জানিয়েছে, ২২ বছর আগে নির্মাণ করা সেতুটি হঠাৎ ধসে পড়ায় ঝিনাইদহের নারিকেলবাড়িয়া- টিকারী সড়কে চলাচলকারী কয়েক গ্রামের মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গত সোমবার সকালে হঠাৎ করে সেতুটির মাঝের অংশ ধসে পড়ে। এ সময় সেতুর উপর থাকা দুইজন পথচারী নিচে পড়ে আহত হন। বর্তমানে সেতুর পাশে বাঁশের সাকো তৈরী করে পাঁয়ে হাটা মানুষগুলো নদী পারাপার হচ্ছেন। সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঝিনাইদহের নারিকেলবাড়িয়া-টিকারী সড়কের টিকারী বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সানচাই নদী। এই নদীর উপর বাজারের কাছেই ১৯৯৪ সালে নির্মিত হয় একটি সেতু। স্থানীয় এলজিইডি বিভাগ সেতুটি নির্মাণ করেন।

যে সেতুর উপর দিয়ে চলাচল করে জিতড়, মিয়াকুন্ডু, কুশোবাড়িয়া, ধননঞ্জয়পুর, মুক্তারামপুর, মাড়নিব্দ, নারিকেলবাড়িয়া, টিকারী, দহখোলা, দিঘিরপাড়, লক্ষিপুর, মালঞ্চি, ব্যাংশ, বেরুইলসহ পাশর্^বর্তী বেশ কিছু গ্রামের মানুষ চলাচল করেন। ঝিনাইদহ জেলা শহর হতে নারিকেলবাড়িয়া টিকারী হয়ে মাগুরা শহরে চলে গেছে এই রাস্তাটি। যে কারণে ভারি যানবাহনও চলাচল করে এই সেতুর উপর দিয়ে। কিন্তু সোমবার হঠাৎ করে সেতুর মাঝের অংশ ভেঙ্গে পড়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মাসুদ কামাল জানান, ৭ থেকে ৮ মাস আগে সেতুটির মাঝের অংশ কিছুটা নিচু অনুভব করেন তারা। এই অবস্থা দেখে স্থানীয় এলজিইডি অফিসে খবর দেন। খবর পেয়ে তারা আসেন এবং একটি সাইনবোর্ড দিয়ে যান ভাড়ি যানবাহন চলাচল না করার জন্য। সেইভাবে চলে আসছিল। ভাড়ি যানবাহন চলাচল করতো না। ভ্যান, নসিমন, করিমন, বাইসাইকেল চলাচল করতো। মাঝে মধ্যে দুই একটি গাংরগাড়ি চলাচল করতো। এই অবস্থায় সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে হঠাৎ করে সেতুটির মাঝের অংশ ধসে নিচে পড়ে যায়। এ সময় টিকারী গ্রামের সজিব হোসেন ও দুলাল মিয়া নামের দুই পথচারী সামান্য আহত হন। তারা ঘটনার সময় সেতুর উপর দিয়ে পার হচ্ছিলেন।

মাসুদ কামাল আরো জানান, এই সেতুটি অত্র এলাকার মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা। এখন সেতুটি ধসে পড়ায় মানুষের সকল প্রকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষ কোনো মালামাল পারাপার করতে পারছেন না। নৌকায় করে মালামাল এপার থেকে ওপারে নিতে হচ্ছে। আর পথচারীদের পারাপারের জন্য জনৈক সুবোধ কুমার ভাঙ্গা সেতুর পাশে বাঁশ দিয়ে একটি সাকো তৈরী করেছেন। পথচারীরা পার হচ্ছেন আর পারের খরচ হিসেবে সুবোধ কুমারের হাতে কিছু তুলে দিচ্ছেন।

সুবোধ কুমার জানান, ২২ বছর পূর্বে এই ঘাটে নৌকা চালিয়ে মানুষ পার করে তিনি টাকা উপার্জন করতেন। সেতু হওয়ায় সেটা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সেই সেতু ভেঙ্গে যাওয়ায় তিনি আবারো পারের পয়সা পাচ্ছেন। তবে এবার নৌকায় নন, বাঁশের সাঁকোয়।

এ ব্যাপারে এলজিইডি’র ঝিনাইদহ নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মালেক চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘ইতোমধ্যে তিনি সেতুটি দেখে এসেছেন। নকশা হয়ে গেছে। আশা করছেন যত দ্রুত সম্ভব ওই স্তানে নতুন সেতু হবে।’

এতো অল্পদিনে পুরানো সেতুটি ভেঙ্গে পড়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, যে ধারণ ক্ষমতা নিয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল তার চেয়ে কয়েকগুন বেশি লোড নিয়ে গাড়ি চলাচল করেছে সেতুর উপর। মানুষের চাহিদার প্রয়োজনে এটা হয়েছে। আর তাই সেতুটি অল্পদিনে ভেঙ্গে পড়েছে।

প্রতিবেদক- জাহিদুর রহমান তারেক, ঝিনাইদহ করেসপন্ডেন্ট