Home / চাঁদপুর / চাঁদপুরে ধনাগোদা নদীর ভাঙনের শিকার দুই হাজার পরিবার
নদীর ভাঙনের

চাঁদপুরে ধনাগোদা নদীর ভাঙনের শিকার দুই হাজার পরিবার

অধিক স্রোতের কারণে চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণপুর ইউনিয়নের দামোদরদী গ্রামসহ আশপাশের গ্রামের প্রায় দুই হাজার পরিবার বহু বছর ধরে ধনাগোদা নদীর ভাঙনের শিকার। সম্প্রতি সময়ে এই ভাঙন আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। নদীতে পানি বাড়লেই ভাঙন শুরু হয় এবং ফসলী জমিসহ বসতবাড়ি বিলীন হচ্ছে। ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী বাধের দাবী জানিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসী।

সরেজমিন দামোদরদী গিয়ে দেখা গেছে গ্রামের একমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ভাঙনের হুমকিতে। নদীর খুবই নিকটে অবস্থান বিদ্যালয়টির। পাশেই ছিলো মুক্তিযোদ্ধা আরিফ উল্যাহ’র বাড়ী। সেটিও কয়েকমাস আগে নদী গর্ভে বিলীন হয়েগেছে। এভাবে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙনের শিকার হয়েছে বহু মানুষের বসতঘর এবং ফসলী জমি।

ভাঙন প্রতিরোধে গত একমাস আগে চাঁদপুর পানি উন্নয়নবোর্ড অস্থায়ী ভিত্তিতে বিদ্যালয় এলাকায় ৫০টি বালু ভর্তি জিও টেক্সটাইল ফেলে। কিন্তু ভাঙন প্রতিরোধে পুরোধমে এখনো কাজ শুরু হয়নি।

নদীর ভাঙনের

ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ভাঙনের শিকার তৈয়ব আলী হাওলাদার বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে ৩ বার ভাঙনের শিকার হয়েছি। বর্তমান নদীর উত্তর পাশে আমাদের বাড়ী ছিলো। এখন কমপক্ষে আধা কিলোমিটার দক্ষিণে নদী চলে এসেছে। তারপরেও নদীর ভাঙন থামছে না। আমরা সরকারের কাছে ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী বাধের দাবী করছি।

স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা সমির গোলদার চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, আমাদের দমোদরদী গ্রাম থেকে শুরু করে মতলব আড়ংবাজার খেয়াঘাট পর্যন্ত প্রায় দুই হাজারের অধিক পরিবার বসবাস করে। বর্তমানে ৪টি মসজিদ, ৩টি পাকা ব্রিজ, একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বহু স্থাপনা নদী ভাঙনের হুমকিতে। ভাঙন প্রতিরোধে আমরা স্থানীয় সংসদ সদস্য ও শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির নিকট স্থায়ী বাধের দাবি জানিয়েছি।

ক্ষতিগ্রস্থ জুয়েল প্রধানিয়া ও মো.কামাল বকাউল বলেন, সম্প্রতি সময়ের ভাঙনে আমাদের বসতঘর নদীতে বিলীন হয়েগেছে। বর্তমানে অন্যের আশ্রয়ে রাস্তার পাশে থাকতে হচ্ছে। অনেকেই এখন বাড়ী ঘর ভেঙে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন।

দামোদরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল বাশার মিয়াজী বলেন, ভাঙন আতংকে সব সময় থাকতে হয়। নদীর নিকটবর্তী বিদ্যালয় হওয়ার কারণে নতুন ভবনের বরাদ্দও পাইনা। বিদ্যালয়সহ হাজার হাজার পরিবার এখন ভাঙন হুমকিতে। স্থানীয় মন্ত্রী ও সরকারের নিকট আবেদন ভাঙন প্রতিরোধে যেন সরকার স্থায়ী বাধের ব্যবস্থা করেন।
এদিকে ভাঙন বেড়ে যাওয়ার কারণে এবং অস্থায়ী প্রতিরোধ করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপির প্রতিনিধি চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বেপারী ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নিক আল হাসান চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, সম্প্রতি ভাঙনের সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অস্থায়ীভাবে ৮০ মিটার নদী পাড়ে ৮০ কেজির সাড়ে ১১হাজার এবং ১৭৫ কেজি ওজনের ৫হাজার বালু ভর্তি জিও টেক্সটাইল ব্যাগ ফেলা হবে। এতে ২৭ লাখ টাকা ব্যয় হবে। জরুরি ভিত্তিতে খুব দ্রুত সময় এই কাজ করা হবে।

সিনিয়র স্টাফ করেসপন্ডেট,৫ জুন ২০২১