চাঁদপুর

‘দুঃসময়ে চাঁদপুরের সাংবাদিকদের সহযোগিতা পেয়েছি’

চাঁদপুর প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে মতবিময় সভায় বক্তব্য রাখছেন প্রধনামন্ত্রীর এপিএস জাহাঙ্গীর আলম

চাঁদপুর সদরের সাবেক ইউএনও, বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-১ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চাঁদপুরে ব্যক্তিগত সফরে আসলে তাৎক্ষণিক তাঁর সাথে মতবিনিময় সভায় আয়োজন করে চাঁদপুর প্রেসক্লাব।

শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। চাঁদপুরের সাংবাদিকরা তাঁকে যে সম্মান দিয়েছে সে জন্যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমি আজ উচ্ছ্বসিত উদ্বেলিত। দীর্ঘ সাত বছর পর চাঁদপুর আসলাম। এর আগে ২০০৭ ও ২০০৮ সালে চাঁদপুরে আমি কর্মরত ছিলাম। আর তখন দেশে খুবই ক্রান্তিকাল ছিলো। ওই খারাপ সময়ে আপনাদের (সাংবাদিকদের) সহযোগিতা পেয়ে ভালোভাবেই পার করেছি। তখন আমি এবং আজকের পৌর মেয়র তখনকার পৌর চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন আহামেদসহ বুদ্ধি পরামর্শ করে সেনাবাহিনীর সাথে কাজ করেছি। দেশের ওই দুঃসময়ে প্রশাসনিক কাজ করতে গিয়ে চাঁদপুরের মানুষগুলোর বিশেষ করে সাংবাদিকদের যে সহযোগিতা পেয়েছি, সে টানেই আবার চাঁদপুর আসা। এসেছি সপরিবারে বেড়াতে। চাঁদপুরকে ভুলতে পারবো না। চাঁদপুরের মানুষগুলো খুবই ভালো। চাঁদপুরের মানুষগুলো যে শিল্পে সাহিত্যে অগ্রসরমান তার প্রমাণ আপনারাই (সাংবাদিকরা)।

তিনি তাঁর কর্মজীবনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, হয়ত জেলা প্রশাসক হতে পারি নি, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সাথে কাজ করছি, বঙ্গবন্ধুর কন্যার সাথে কাজ করছি এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কিছু না। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এমন এক প্রধানমন্ত্রী, যার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বহির্বিশ্বে আমরা প্রশংসিত হচ্ছি। তিনি তিন বারের প্রধানমন্ত্রী। দেশের এই অগ্রসরমান গতি একমাত্র তাঁর কারণেই।

তিনি চাঁদপুরের সাংবাদিক ও জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে উত্থাপিত দাবি প্রসঙ্গে বলেন, চাঁদপুর প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ, প্রেসক্লাবের অসমাপ্ত কাজ (ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ) সম্পন্ন করা এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সফর সঙ্গী হিসেবে চাঁদপুর থেকে সাংবাদিক থাকার বিষয়টি আমি গুরুত্বের সাথে দেখবো। একইভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত চাঁদপুরে একটি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় করা এবং ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে সিসিইউ ও আইসিইউ স্থাপনে ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ভূমিকা রাখবো।

সভায় আমন্ত্রিত অতিথি জেলা প্রশাসক মোঃ আবদুস সবুর মন্ডল তাঁর বক্তব্যে বলেন, আগামী নভেম্বর ডিসেম্বরের দিকে প্রধানমন্ত্রীকে চাঁদপুরে আনবো। আমার ইচ্ছা চাঁদপুরকে দেশের প্রথম ডিজিটাল জেলা করা। সে দিন বেশি দূরে নয়, জনগণের সাথে সরকারের সবধরনের যোগাযোগ অনলাইনে হবে। গত ক’দিন আগে বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম শাহরাস্তিতে ই-স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম চালু করেছি। আমার টার্গেট আগামী জুনের মধ্যে এ জেলার ৮৮ ইউনিয়নে ই-স্বাস্থ্য সেবা চালু করা। ইতোমধ্যে সরকারি প্রায় সব দপ্তরের কাজ অনলাইন ভিত্তিক হচ্ছে। বিদ্যালয়গুলোতেও ওয়াইফাই চালু হচ্ছে। এমনিভাবে পুরো জেলাকে ডিজিটালাইজ্ড করে নভেম্বর-ডিসেম্বরের দিকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে চাঁদপুর এনে এ জেলাকে দেশের প্রথম ডিজিটাল জেলা হিসেবে স্বীকৃতি নেয়া। জেলা প্রশাসক চাঁদপুর প্রেসক্লাব এবং চাঁদপুরের সাংসাদিকদের প্রসঙ্গে বলেন, চাঁদপুরের প্রত্যেকটি সাংবাদিক যেনো চাঁদ বদনী। বাংলাদেশের মধ্যে একটি আদর্শ প্রেসক্লাব হচ্ছে চাঁদপুর প্রেসক্লাব। সেদেশর অনেক জায়গায় প্রশাসনের সাথে প্রেসের তেমন সম্পর্ক থাকে না। কিন্তু চাঁদপুর এর ব্যতিক্রম।

তিনি বলেন, চাঁদপুরের তিনটি সংস্থা আমার প্রতিবেশি। সেগুলো হলো হাসপাতাল, চাঁদপুর ক্লাব ও চাঁদপুর প্রেসক্লাব। এ তিনটি আমার আপনজন।

তিনি প্রধানমন্ত্রীর এপিএস জাহাঙ্গীর আলমের উদ্দেশ্যে বলেন, চাঁদপুরে প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় করা প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি। ২০১০ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর চাঁদপুর এসে এ প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেছেন। এ পাঁচটি বছর নানা কারণে এটি আলোর মুখ দেখেনি। তাই এ বিষয়ে ভূমিকা রাখতে আমি এপিএস স্যারকে অনুরোধ করবো। এছাড়া চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে আইসিইউ স্থাপনে ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন এবং জলাশয় ভরাটে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে তাঁর ভূমিকা কামনা করেন।

চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি বিএম হান্নানের সভাপ্রধানে এবং সাধারণ সম্পাদক সোহেল রুশদীর উপস্থাপনায় আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরে জেলা আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত সভাপতি পৌর মেয়র নাছির উদ্দিন আহামেদ, পুনঃ নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ লুৎফর রহমান।

সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কাজী শাহাদাত, উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়ক আলহাজ্ব ওচমান গণি পাটওয়ারী, সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ জালাল চৌধুরী, শাহ মোহাম্মদ মাকসুদুল আলম, শহীদ পাটোয়ারী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, শরীফ চৌধুরী, রহিম বাদশা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মির্জা জাকির ও জিএম শাহীন।

সভার শুরুতে অতিথিদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট : আপডেট ১১:০৭ পিএম, ২৯ জানুয়ারি ২০১৬, শুক্রবার
ডিএইচ

Share