মা ইলিশ রক্ষায় সরকার চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার ১শ’ কিলোমিটার এলাকায় ১লা অক্টোবর থেকে ২১দিনে অভয়াশ্রম ঘোষণা করেছে। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে অভয়াশ্রম ঘোষিত নদী এলাকাকে সুরক্ষিত রাখতে চাঁদপুরে একটি শক্তিশালী টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে।
অথচ সরকারের নির্দেশনা ও স্থানীয় প্রশাসনের কঠোর নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙুলী দেখিয়ে কৌশল পরিবর্তন করে পদ্মা- মেঘনায় নিধন হচ্ছে নিষিদ্ধ মা ইলিশ। নদী এলাকার চরাঞ্চলের একশ্রেণীর অসাধু জেলেরা শিশুদের দিয়ে এবার দিনের আলোতেই যেনো মা ইলিশ নিধনের এ মহা-উৎসবে মেতে উঠেছে। তারা ইঞ্জিন বিহীন ও ইঞ্জিন চালিত ছোট-বড় নৌকা নিয়ে দিনভর এই অবৈধ কাজ করে যাচ্ছে।
তবে এক্ষেত্রে মেঘনার চেয়ে পদ্মা নদীর অংশেই ইলিশ নিধনযজ্ঞ বেশি দেখা যায়। আর এসব মা ইলিশ নদী পারেই অস্থায়ী আড়ৎতে ডাক উঠিয়ে প্রকাশ্যে বিক্রি করা হচ্ছে। আর নদীপাড় থেকে পাইকারি ক্রেতারা এসব ইলিশগুলো ক্রয় করে সেগুলো সিলভারের কলশি, পাতিল ও ককসেটের বক্স সহ বিভিন্ন পাত্রে গোপনে বাড়িতে নিয়ে সংরক্ষণ করছে।
৭ অক্টোবর শনিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত সরেজমিনে পদ্মা-মেঘনায় ঘুরে ইলিশ নিধনের এ দৃশ্যের দেখা মিলে। এসময় নদীতে শত শত জেলে নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের সাহায্যে মা ইলিশ ধরতে দেখা গেছে। তাছাড়া কোনো কোনো জেলে ইশিল ধরার কাজে যাত্রী পারাপারের বড় ট্রলারকে ব্যবহার করছে। এবছর অধিকাংশ জেলে মাছ শিকারে এক অভিনব পন্থা অবলম্বন করছে। তারা নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে থেকে ৮ থেকে ১৫ বছরের শিশু-কিশোরদের দিয়ে মা ইলিশ ধরছে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিশ্চুক বেশ কিছু জেলের সাথে কথা হলে তারা জানায়, সরকার এবার আইন কড়াকড়ি করেছে। মা ইলিশ ধরার অপরাথে জেলেদের এক বছর কারাদন্ড দেয়া হয়। এজন্য তারা শিশু-কিশোরদের দিয়েই মাছ নিধন করছে। কারণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা শিশুদের আটক করলেও তাদের অভিভাবকরা মুচলেকা দিয়ে শিশুদের ছাড়িয়ে আনতে পারে।
এদিকে সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড ও ২নং ওয়াার্ডে পদ্মা-পাড়ের অংশে গিয়ে বেশ কয়েকটি আড়তের দেখা পাওয়া যায়। সেখানে প্রকাশ্যে শতশত মানুষের উপস্থিতিতে হাঁক-ডাক দিয়ে পাইকারদে কাছে মা ইলিশ বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়াও ইউনিয়নের দেওয়ার বাজার আড়তে স্থানীয় রুহুল আমিনের ছেলে ইব্রাহিমসহ বেশ কয়েকজন ডাক উঠিয়ে মা ইলিশ বিক্রি করছে।
অপর দিকে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্দ দীর্ঘ এ সময়টাতে ওই এলাকায় অবস্থান করলেও নদীতে টহলরত কোনো নৌ-পুলিশ, কোস্ট গার্ড অথবা জেলা টাস্কফোর্সের কাউকে দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে তাৎক্ষণাৎ বিষয়টি জেলা প্রাশাসক ও জেলা টাক্সফোর্সের সভাপতি মো. আব্দুস সবুর মন্ডলকে জানালে তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান। একই কথা জানান নৌ-পুলিশের এসপি সুব্রত কুমার হালদার।
প্রতিবেদক- আশিক বিন রহিম
: আপডেট, বাংলাদেশ ০৫:০৩ পিএম, ০৭ অক্টোবর, ২০১৭ শনিবার
ডিএইচ