প্রতি বছর সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে পাকা সড়ক তৈরি করছেন, দু’ এক মাসের মধ্যে সেই সড়কের আর আসল রূপ নেই।
চিত্র পাল্টে যাচ্ছে, চলাচলের অযোগ্য সড়কগুলো মানুষের জন্য মরণ ফাঁদ হয়ে হাজির হচ্ছে। ব্যয় বহুল পাকা সড়ক মেরামত করার সুযোগ সাধারণ মানুষের নেই।
সরকারি নিয়মনীতির মধ্যে যতদিন মেরামত না হয়, সেই ভাঙা সড়ক দিয়েই চলাচল করতে হয় সাধারণ মানুষের। ট্রাক্টরের নীচে চাপা পড়ে জীবন গেছে বহু মানুষের।
ভারত থেকে জমিতে হাল চাষের জন্য আমদানি করা এ দানব ট্রাক্টর সড়েক চলা বন্ধ হবে কবে? এমন প্রশ্ন ভুক্তভোগী জনগণের।
দানব ট্রাক্টরের দৌরাত্ম নিয়ে কথা হয় শহর ও গ্রামাঞ্চলের ভুক্তভোগী ক’জনের সাথে। চাঁদপুর শহরের মালামাল বহনের জন্য একমাত্র সড়ক নিউ ট্রাক রোড। এ সড়কটি এখন চলাচলের অনুপযোগী।
কোন সুস্থ মানুষ এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করলে আর সুস্থ থাকবে না। বাসস্থান কিংবা জরুরি কাজ ছাড়া এই সড়ক দিয়ে এখন আর কেউ আসে না।
রিক্সা চালকরা এই সড়কের নাম শুনলে মুখ ফিরিয়ে আরেক দিকে চলে যায়। এই সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে ট্রাক্টর।
বেপরোয়া গতিতে দিন ও রাতে ট্রাক্টর চলাচলেরকারণে সড়কটি বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। ট্রাক্টর চলাচল কমলেও বর্তমানে ভারী যানবাহন হিসেবে মালবাহী ট্রাক বেশী চলাচল করে।
নিউ ট্রাকরোড এলাকার বাসিন্দা আলম বেপারী, রাকিব উদ্দিন, মানিক মিয়া জানান, বটতলা থেকে শুরু করে বিআইউডাব্লিউটি-এর মোড় পর্যন্ত নিউ ট্রাকরোডে বড় বড় গর্ত। অনেক স্থানে পায়ে হেঁটে যাওয়াই দুস্কর। বৃষ্টি হলে একেবারে বেহাল অবস্থা।
পৌরসভা থেকে মাঝে মাঝে ইট ও বালি দিয়ে গর্তগুলো ঠিক করা হলেও ক’দিন পর আবার পুরনো চিত্র। স্থায়ীভাবে সড়কটি মেরামত করা না হলে এ এলাকার মানুষের দুর্ভোগ দিন দিনই বৃদ্ধি পাবে।
তারা চাঁদপুর পৌর মেয়রের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এদিকে ট্রাক্টরের কারণে খুব অল্প সময়ের মধ্যে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, নানুপুর থেকে হরিণা ফেরিঘাট সড়ক, বাগাদী চৌরাস্তা থেকে চান্দ্রা-মুন্সিরহাট সড়ক।
এ সড়কটি দু’বার মেরামত হয়েছে মাত্র এক বছর পূর্বে। কিন্তু এসব এলাকায় ইটভাটা ও বালুর ব্যবসা বেশী থাকার কারণে ট্রাক্টর চলাচল বন্ধ হচ্ছে না।
এছাড়া ফরিদগঞ্জ উপজেলার চান্দ্রা বাজারেরসড়ক, বালিথুবা বাজারের সড়ক, বাগাদী ইউনিয়নের ঢালীর ঘাট থেকে ফরক্কাবাদ বাজার সড়ক, বালিয়া বাজার থেকে চান্দ্রা সড়ক, শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন সড়ক, আশিকাটি ইউনিয়নের শাহতলী থেকে কুমিল্লা সড়ক, তরপুরচন্ডী ইউনিয়নের আভ্যন্তরিন সড়কগুলোতে ট্রাক্টর চলাচলের কারণে সড়কগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এসব এলাকায় প্রবেশ করলেই দানব ট্রাক্টরের দেখা মিলে। এছাড়াও জেলার প্রত্যেক উপজেলায় ট্রাক্টর দিয়ে দিন ও রাতেমালামাল পরিবহন হচ্ছে। ট্রাক্টর সড়কে চলাচল বন্ধের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন থেকে ঘোষণা করা হলে, শহরে অনেকটা কমে যায়। কিš ‘গ্রামের ট্রাক্টরগুলো প্রশাসনসহ কাউকে পাত্তা দিচ্ছে না।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সবুর মন্ডল চাঁদপুরের ইলিশ রক্ষায় এ বছর যেভাবে জনপ্রতিনিধিসহ সকলকে সম্পৃক্ত করে অভিযান সফল করেছেন। তেমনি সকলের সহযোগিতায় এইসব দানব ট্রাক্টরের অত্যাচর থেকে মানুষকে মুক্তি এবং সড়কগুলোর স্থায়ীত্ব রক্ষায় এগিয়ে আসবেন এমনটি প্রত্যাশা সাধারণ মানুষের।
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৯:০০ পিএম, ২২ নভেম্বর ২০১৬, মঙ্গলবার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur