চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে স্বামীকে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা ও হয়রানি থেকে রক্ষার আকুতি জানিয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মিলন মাহমুদ বিপিএম (বার)এঁর হস্তক্ষেপ কামনা করে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন মিথিলা ফারজানা (২৩) নামের এক গৃহবধু।
৮ অক্টোবর শুক্রবার ১১ টার দিকে ঠাকুর বাজারস্ত শাহরাস্তি প্রেসক্লাব কার্যালয়ে এ সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ওই গৃহবধু জানান, ‘তিনি গত ২৫ মে মাজহারুল ইসলাম, পিতাঃ মৃতঃ সিরাজুল ইসলাম, গ্রামঃ কাজির নগর, পোঃ শাহরাস্তি, উপজেলাঃ শাহরাস্তি, জেলাঃ চাঁদপুরকে ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক ৭ লাখ টাকা মোহরানা ধার্য করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ওই দিন বিকেলে বিয়ের বিষয়টি মুঠোফোনে বাড়িতে জানান এবং স্বামীর সাথে ঢাকার বাড্ডা থানাধীন বেরাইদ গ্রামের ভাড়া বাসায় উঠেন। বিয়ের সংবাদে ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁর মেজো বোন মারজানা আক্তার মিলা (২৬) তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে এবং স্বামীকে তালাক দিয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য হুমকি ধমকি প্রদান করে। তিনি স্বামীকে ছেড়ে যাওয়া সম্ভব নয় জানালে ওইদিন রাতেই তাঁর মা নূরজাহান বেগমকে দিয়ে শাহরাস্তি থানায় একটি হয়রানীমূলক নিখোঁজ ডায়েরী করেন, যার নং-১০০৭, তারিখঃ ২৫.০৫.২১। পরদিন তিনি নিখোঁজ নন স্বামীর সাথে রয়েছেন মর্মে একটি ভিডিও ক্লিপ তাঁর পরিবার ও জিডির তদন্তে নিয়োজিত কর্মকর্তাকে পাঠান এবং হোয়াটস এপে তদন্ত কর্মকর্তার সাথে কথা বলেন।’
‘তাঁর মেজো বোন মারজানা আক্তার মিলা এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গত ২৮ মে তারিখে শাহরাস্তি থানায় তাঁর স্বামী, দেবর, ৩ ননদ, ননদের স্বামী ও একজন নিকটাত্মীয়সহ ৭ জনকে অভিযুক্ত করে একটি অপহরণের হয়রানিমূলক অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি হোয়াটস এপে এই অভিযোগের বিষয়ে তাঁর বোনের কাছে জানতে চাইলে বোন পুনরায় তাঁর স্বামীকে তালাক দিয়ে বাড়ি ফিরে আসার কথা বলে না হয় শাহরাস্তিসহ দেশের বিভিন্ন থানায় মামলা দিয়ে ওই গৃহবধুর স্বামী ও স্বামীর পরিবারের লোকজনকে সর্বহারা করবে মর্মে হুমকি দেয়।’
গৃহবধূ আরও জানান, ‘শাহরাস্তি থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ ও জিডির প্রেক্ষিতে থানা পুলিশ তাঁর শ্বশুরবাড়িতে সন্ধান করতে গেলে তাঁর বয়োবৃদ্ধ শাশুড়ি অসুস্থ হয়ে পড়ে। নিরুপায় হয়ে গত ৪ জুন তারিখে তিনি নিখোঁজ নন, স্বামীর সাথে ঢাকার বাড্ডা থানাধীন বেরাইদ গ্রামে অবস্থান করছেন এবং তাঁর মেজো বোন তাঁকে কল দিয়ে স্বামীকে তালাক দিয়ে চলে আসতে বলছে মর্মে ডিএমপি’র বাড্ডা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন, যার নং ২২৮।
পরদিন বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী শরিফুল ইসলাম রাজিবের মাধ্যমে তিনি নিখোঁজ নন, তাঁর বৈবাহিক অবস্থা সম্পর্কে অবগত থেকেও তা না মেনে নিয়ে হিংসা ও ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে হররানিমূলক অভিযোগ ও জিডির মাধ্যমে তিনি ও তাঁর স্বামীর পরিবারের লোকজনকে ক্ষতিগ্রস্থ না করার অনুরোধ এবং হয়রানি করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে মর্মে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। যার অনুলিপি চাঁদপুরের মাননীয় পুলিশ সুপার, শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শাহরাস্তি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহোদয়কে ডাকযোগে পাঠান বলে উল্লেখ করেন। ওই দিনই তাঁর মা নূরজাহান বেগমকে বাদী করে চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি হয়রানীমূলক মামলা দায়ের করেন। যার নং-১৯৪/২০২১।
যাতে একই ঘটনায় শাহরাস্তি থানায় দায়ের করা অভিযোগ ও কোর্টের মামলায় আলাদা ঘটনাস্থল দেখানো হয়। আদালত জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দিলে তিনি আইনজীবির মাধ্যমে তাঁর বিয়ের প্রয়োজনীয় প্রমানাদি তদন্ত কর্মকর্তাকে দেখান। তদন্ত কর্মকর্তা তাঁকে ডিবি অফিসে উপস্থিত হবার অনুরোধ করলে তিনি ডিবি অফিসের সামনে গিয়ে তাঁর পরিবার আত্মীয় স্বজন ও তাদের ভাড়াটিয়া লোকজন মিলে ২০/৩০ জনের জটলা দেখে সেখান থেকে কোনরকম পালিয়ে আসেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, তাঁকে ডিবি কার্যালয় হতে কোর্টে হাজির করার কথা থাকলেও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোপনে তাঁর পরিবারের হাতে তাঁকে তুলে দেয়ার পরিকল্পনা বানচাল হওয়ায় কোনপ্রকার তদন্ত ছাড়াই তাঁর স্বামী পরিবারের লোকজনকে অভিযুক্ত করে মামলার রিপোর্ট দেয়। বর্তমানে তাঁর স্বামী পরিবারের সবাই জামিনে রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, পরিবারের পক্ষ হতে তাঁকে অপহরণের মিথ্যা মামলা সাজালেও তিনি বিভিন্ন সময়ে পরিবারের সাথে অডিও ও ভিডিও কলে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করেছেন। যার স্ক্রীন সর্ট তাঁর কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। প্রতিবারই ভিডিও কল ও লোক মারফত পরিবারের লোকজন তাঁর স্বামীকে মামলা দিয়ে হয়রানি বা ভাড়াটে লোকজন দিয়ে তুলে নিয়ে হত্যার হুমকি দিচ্ছে।
এসব হয়রানি হতে তাঁর স্বামী ও স্বামীর পরিবারের লোকজনকে রক্ষায় চাঁদপুরের মাননীয় পুলিশ সুপার জনাব মোঃ মিলন মাহমুদ বিপিএম (বার) এঁর হস্তক্ষেপ কামনা করে ওই গৃহবধু জানান, বর্তমানে তিনি ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তাঁর অনাগত সন্তানের পিতার প্রাণ রক্ষা ও হয়রানী বন্ধে তিনি পুলিশ সুপারের সহায়তা কামনা করেন।
শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সহ-সভাপতি মোঃ হাবীবুর রহমান ভূঁইয়া, মোঃ জাকির হোসাইন খাঁন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাসুদ রানা, যুগ্ম সম্পাদক স্বপন কর্মকার মিঠুন, সৈয়দ আমরুজ্জামান সবুজ, সহ-সম্পাদক ও অর্থ সম্পাদক ফয়েজ আহমেদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ নোমান হোসেন আখন্দ, প্রচার ও সহ অর্থ সম্পাদক মোঃ জামাল হোসেন, কার্য নির্বাহী সদস্য মোঃ ফারুক চৌধুরী, মোঃ কামরুজ্জামান সেন্টু ও শাহরাস্তিতে কর্মরত সাংবাদিক মোঃ রফিকুল ইসলাম পাটোয়ারি প্রমুখ।
প্রতিবেদক: মো.জামাল হোসেন