সব জল্পনা-কল্পনা ও জনমত জরিপকে পেছনে ফেলে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা নিয়েছেন রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প। অথচ শুরু থেকে বিতর্কিত মন্তব্য করে দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ ভোটারদের রোষাণলে পড়েন নিউইয়র্কের এই ব্যবসায়ী।
আর শেষ দিকে নারী কেলেঙ্কারির ঘটনার ফাঁস হওয়ার পর অনেকটা কোনঠাষা হয়ে পড়েন তিনি। অথচ সেই ট্রাম্পই এখন হোয়াইট হাউজের উত্তরাধিকারী।
বারাক ওবামা বিদায় নিলেই সস্ত্রীক মার্কিন প্রেসিডেন্টের সরকারি এই বাসভবনে উঠবেন তিনিই।
পুরো নাম ডোনাল্ড জন ট্রাম্প। তার জন্ম নিউইয়র্ক সিটির কুইন্স এলাকায় ১৪ জুন ১৯৪৬ সালে। বাবা ছিলেন রিয়াল এস্টেট ব্যবসায়ী।
তিনি নিজেও এই খাতে সফল। পেনসিলভেনিয়া ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনার সময় থেকে তিনি তার পিতার ব্যবসায়ে জড়িয়ে পড়েন। রিয়াল এস্টেট বিজনেসে পড়াশোনা শেষে ট্রাম্প ইকোনমিক্সে গ্রাজুয়েট হন।
কিন্তু তার রয়েছে হরেক রকম পরিচয়। ব্যবসায়ী ছাড়াও তিনি মিস ইউনিভার্সের স্পন্সর ছিলেন দীর্ঘদিন। তাতে তার নাম যশ অর্থ বিত্ত হয়েছে অনেক। এপ্রেনটিস্ট নামের একটি রিয়ালিটি টিভি অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ছিলেন। রেসলিং ম্যাচ উপস্থাপনা করেছেন।
বেশ কয়েকবার নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করেছেন। তার বেশ সমর্থকও জুটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। কিন্তু আবার উঠে দাঁড়িয়েছেন। মামলা ঠুকেছেন এবং মামলা খেয়েছেন।
এখন তার রয়েছে ৫৮ তলা একটি বহুতল ভবন (ট্রাম্প টাওয়ার), স্পোর্টস ক্লাব, শেয়ার বাজারে পুঁজি। সবমিলিয়ে ৯০০ কোটি ডলার সমপরিমাণ সম্পদের মালিক তিনি।
তার বার্ষিক বেতন প্রায় ২৭ কোটি ডলার। অর্থাৎ দুই কোটি ডলারেরও বেশি তার মাসিক বেতন।
রাজনীতিতে তার কোনো অভিজ্ঞতাই নেই। বৈদেশিক নীতিতেও তিনি অদক্ষ। তারপরও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দলের অন্য সব বড় বড় নেতাদের পেছনে ফেলে রিপাবলিকান পার্টিল মনোনয়ন কেড়ে নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এরপর দাপিয়ে বেড়িয়েছেন পুরো নির্বাচনী মাঠ। কখনো ঝাঁঝালো বক্তব্য দিয়ে জনগণের রোষাণলে পড়েছেন আবার কখনও বাহাবা পেয়েছেন।
ইমিগ্র্যান্ট ও মুসলিমবিরোধী বক্তব্যের কারণে বেশি আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন।
আবার শেষ দিকে নারী কেলেঙ্কারির ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর অনেকে দলীয় নেতা ট্রাম্পের ওপর সমর্থন তুলে নিয়ে কড়া সমালোচনা করেন। এর প্রভাবও পড়ে নির্বাচনে।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পকে ভোট দেননি রিপাবলিকান দলের নির্বাচনী কৌশল নির্ধারক এনা নাভারো। ট্রাম্প থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ। তারপর জনগণের ভোটে নির্বাচিত ট্রাম্প।
তার সবচেয়ে প্রিয় বইগুলোর মধ্যে দ্বিতীয়টি তারই লেখা দি আর্ট অফ দি ডিল, অর্থাৎ কীভাবে ব্যবসা করতে হয়। তার সবচেয়ে প্রিয় বইটি হচ্ছে বাইবেল। তবে বাইবেলের কোন লাইনটি তার সবচেয়ে প্রিয় সেটা তিনি বলতে রাজি হননি।
নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৮:৪০ পিএম, ৯ নভেম্বর ২০১৬, বুধবার
ডিএইচ