জীবিত ভেবে কঙ্কাল বোনকে দিনরাত খাওয়া দিতেন ভাই

‎পুরো ঘটনাটি এখনও পরিষ্কার নয়। তবে যতটুকু বোঝা গেছে তাতে মনে হচ্ছে এ যেন হলিউডি কোনো সাইকোপ্যাথ সিনেমার দৃশ্য। এক নারী ও দুটি পোষা কুকুরের সঙ্গে ছয় মাস বসবাস! শুধু তাই নয়, এই দীর্ঘ সময় নাকি ওই নারীর মৃতদেহকে খাওয়ানোও হতো। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার শেক্সপিয়র সরণি থানার রবিনসন স্ট্রিটে।

পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার রাতে রবিনসন স্ট্রিটের একটি ফ্ল্যাটের জানলা থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। দমকলকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে পুলিশ ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে শৌচাগারের বাথটব থেকে অরবিন্দ দে (৭৭) নামে এক বৃদ্ধের মৃতদেহ উদ্ধার করে। অরবিন্দ পেশায় প্রকৌশলী ছিলেন। সন্দেহ হওয়ায় অরবিন্দর ছেলেকে পার্থকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী ওই ফ্ল্যাট থেকেই কাপড় জড়ানো অবস্থায় তিনটি কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ। পার্থ জানায়, কঙ্কাল তিনটি তার বড় বোন দেবযানী দে (৪৭) এবং বাড়ির দুই পোষ্য কুকুরের। কুকুরগুলো গত বছরের অগাস্টে মারা যায়। তারপর থেকেই খাওয়াদাওয়া ছেড়ে দিয়েছিলেন পেশায় গানের শিক্ষিকা দেবযানী। ৬ মাস আগে অপুষ্টিজনিত কারণে মারা যান দেবযানী। তবে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া না করে মেয়ের মৃতদেহের সঙ্গে ওই ফ্ল্যাটেই বসবাস করছিলেন অরবিন্দ ও পার্থ। রোজ রাতে বোনের মৃতদেহকে ‘খাওয়াতেন’ পার্থ। এমনকি বোনের আত্মা তাদের সঙ্গেই রয়েছে এমন আবহ সৃষ্টি করার জন্য বাড়িজুড়ে লাগানো হয়েছে সাউন্ড সিস্টেম। সেখান থেকেই নানা ধরনের ‘ভৌতিক’ আওয়াজ শোনা যেতো।

পুলিশ আরো জানায়, দেবযানীর কঙ্কালটি শোয়ানো ছিল খাটের উপরে। সেখানে শুয়ে থাকতেন পার্থও। তিনি কাজ করতেন একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায়। বেশ কিছু দিন ধরে তিনি আর অফিসে যেতেন না। বাড়িতেই থাকতেন।

জিজ্ঞাসাবাদে পার্থ জানিয়েছেন, বোন যে মারা গেছে সে বিষয়টি তিনি মানেন না। সেই কারণেই বোনের মৃত্যুর পর দেহটি কাপড় দিয়ে জড়িয়ে খাটে শুইয়ে রেখেছিলেন। তাকে রোজ খাবারও দিতেন। এমনকি, বাড়ির পোষ্য দু’টি কুকুরের কঙ্কালও বাড়িতে রেখে দিয়েছিলেন।

Share